×

জাতীয়

ব্রুনাইয়ের সুলতান ঢাকায় আসছেন শনিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২২, ০৮:৪৭ এএম

ব্রুনাইয়ের সুলতান ঢাকায় আসছেন শনিবার

ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ মুইজ্জাদ্দিন ওয়াদদৌল্লাহ

ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়াহ মুইজ্জাদ্দিন ওয়াদদৌল্লাহ তিন দিনের সফরে আগামী শনিবার ঢাকা আসছেন। এটি হবে তার প্রথম বাংলাদেশ সফর। এই সফরে সরাসরি উড়োজাহাজ চলাচল, ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশের কর্মী নিয়োগ, সমুদ্রগামী জাহাজে কর্মরত নাবিকদের সনদ দেয়াসহ পাঁচটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে। গতকাল মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন তার দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালে ব্রুনাই সফরে গিয়েছিলেন। সেই সময় দুই দেশের মধ্যে ছয়টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছিল। ব্রুনাইয়ের সুলতানের বাংলাদেশ সফরে এসব সমঝোতা স্মারক কার্যকরের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

ব্রুনাইয়ের সুলতানের ঢাকা সফর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সফরে জ্বালানি আমদানির বিষয়ে ব্রুনাইয়ের সঙ্গে আলোচনা হবে। প্রায় ২০-২৫ হাজার বাংলাদেশি কর্মী বর্তমানে ব্রুনাইয়ে কাজ করছেন বলে জানান তিনি। ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের বিষয়টি দেশটির সুলতানের আসন্ন সফরে প্রাধান্য পাবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ব্রুনাইয়ের সুলতান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। তার সম্মানে রাষ্ট্রপতির দেয়া এক নৈশভোজেও যোগ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন ব্রুনাইয়ের সুলতান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে হালাল পণ্যের বিষয়ে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ব্রুনাইয়ের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশে প্রচুর গরু, মহিষ ও খাসি রয়েছে। ব্রুনাইয়ের সুলতান বিশেষ করে বাংলাদেশের ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ ছাগল খুব পছন্দ করেন। এ জন্য ব্রুনাই বলেছে, তারা বাংলাদেশে হালাল পণ্যের কোনো একটা ব্যবস্থা করতে পারে কিনা। এ বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি। এ নিয়ে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সঙ্গে ব্রুনাইয়ের আলোচনা চলছে। সব মিলিয়ে এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিয়ে ব্রুনাইয়ের আগ্রহ রয়েছে। আব্দুল মোমেন বলেন, ব্রুনাই সবকিছু বিদেশ থেকে আমদানি করে। তারা খাদ্য নিরাপত্তার ওপর জোর দিচ্ছে। এক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি ভালো অবস্থানে আছি। চাল, মাছের উৎপাদনে আমরা এগিয়ে আছি। কৃষি ও মৎস্য চাষে ব্রুনাই আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে আগ্রহী। চিংড়ি ও মাছ চাষে আমাদের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা সেটা চায়। দুই দেশের মধ্যে সরাসরি আকাশপথে উড়োজাহাজ চালু হলে ব্যবসা বাড়বে।

বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়ার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: বিভিন্ন কারণে এখনো আমরা বিদেশি কিছু হলে পছন্দ করি। সেই কারণে তাদের কাছে ধরনা দেই। এ অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না- ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। গণমাধ্যমকে উদ্দেশ্য করে ড. মোমেন বলেন, আপনারাও তাকে (রাষ্ট্রদূত) জোর করে বলান। সে বেচারা (রাষ্ট্রদূত) বাধ্য হয় উত্তর দিতে। আপনারা বিদেশের কাছে ধরনা না দিলেই ভালো। আপনারা আমাদের কাছে আসেন। তাদের (বিদেশিদের) কাছে যান বলেই তারা বক্তব্য দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা তাদের (যুক্তরাষ্ট্রকে) জিজ্ঞেস করেন তাদের দেশে এত অল্প লোক কেন ভোট দেয়। তারা (যুক্তরাষ্ট্রবাসী) আপনাদের গণতন্ত্র পছন্দ করেন না। ২৩ থেকে ২৭ শতাংশ ভোট দেয়। আমার এখানে তো ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ লোক ভোট দেয়। তিনি বলেন, সব দেশের গণতন্ত্রে ভালো-মন্দ আছে। এটা সবসময় পারফেক্ট নয়। এটা একটা প্রসেস। প্রচেষ্টার মাধ্যমে গণতন্ত্র পরিপক্ব হয়। আমাদেরও দুর্বলতা আছে। কীভাবে দুর্বলতা সমাধানে কাজ করা যায়, আমরা চেষ্টা করছি। এটার মানে এ নয় যে তাদেরটা সবচেয়ে ভালো। তাদেরও দুর্বলতা আছে। সব কিছুর কিছু সমস্যা আছে।

বিদেশি কূটনীতিকদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করা নিয়ে সরকার বিবৃতিতে দিতে পারে বা প্রতিবাদ করতে পারে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোমেন বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আমাদের দেশে যারা ডিপ্লোমেট আছেন তারা পরিপক্ব। তারা সম্মানিত লোক। তারা কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।

ভেবেচিন্তে অবস্থান নেবে বাংলাদেশ: ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘে আলোচনা হচ্ছে। রাশিয়ার নিন্দা জানিয়ে একটি রেজ্যুলেশন মঙ্গলবার রাতে নিউইয়র্কে ভোটে দেয়ার সম্ভাবনা আছে। এই ভোটে বাংলাদেশের অবস্থান কী হবে সেটি নিয়ে মুখ খুলছে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা পক্ষে, বিপক্ষে বা ভোটে বিরত থাকবো কিনা সেটি আমি বলব না। নিজেদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন পর্যন্ত আমরা ভোটগুলো অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে দিয়েছি। যদি ভোট হয় তাহলে আমরা বিচক্ষণতার সঙ্গে দেব। মন্ত্রী বলেন, আমাদের নিজস্ব নীতি আছে এবং আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। আমরা জাতিসংঘ সনদে বিশ্বাস করি এবং জাতিসংঘের সমর্থক। আমাদের দেশের স্বার্থের জন্য মঙ্গলকর, আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, সেই অনুযায়ী আমরা সিদ্ধান্ত নেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App