×

জাতীয়

সমাধানের সহজ উপায় দেখছি না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২২, ০৮:২৯ এএম

সমাধানের সহজ উপায় দেখছি না

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, অনেকগুলো ফ্যাক্টর এখন একত্রিত হয়ে বর্তমান বিদ্যুৎ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। লোড সমস্যা, ডলারের দাম বৃদ্ধি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, ঘোড়াশাল গ্রিড ট্রিপ করাসহ বিভিন্ন সমস্যা এক হয়ে গেছে।

এ কারণেই আজকের লোডশেডিং পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সমস্যা সমাধানের সহজ কোনো উপায় আমি দেখছি না। মূলত জ্বালানির অভাবেই বাংলাদেশকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে। বর্তমান বিদ্যুৎ সংকট ও লোডশেডিং পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, এলএনজি আমদানির ফলে গ্যাসের সমস্যা অনেকটাই সমাধান হত, যদি দামের ঊর্ধ্বগতি না হত।

দেশীয় গ্যাসের পর্যাপ্ত উৎপাদন না থাকায় সরকার এলএনজিতে গেল। কিন্তু এর অল্প সময়ের মধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির দাম বাড়তে শুরু করল। ৬ ডলার থেকে বেড়ে ৬০ ডলারে পৌঁছাল। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। ফলে ইউরোপীয় দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যসহ এই অঞ্চলের এলএনজির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। চড়া দামে তারা এলএনজি কিনছে।

অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের মতো দেশের পেরে ওঠা অসম্ভব। তা ছাড়া যাদের সঙ্গে এলএনজি সরবরাহের চুক্তি রয়েছে তারাও বেশি দাম পেয়ে সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। আবার চড়া দামের কারণে স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি কেনা বন্ধ। ফলে গ্যাস সংকট আরো তীব্র হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন কমে গেলে লোডশেডিং দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। এই সংকট কবে মিটবে তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না, এজন্য আরো অপেক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, এলএনজি সরবরাহের জন্য যাদের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হয়েছে তাদের সঙ্গে সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কথা বলতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি থাকায় দামের ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা পাওয়ার জন্য আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে যদি এলএনজির দাম আরো কমে তাহলে বাংলাদেশ সুবিধা নিতে পারবে- কিন্তু সেই সম্ভাবনা এখনো তৈরি হয়নি। আরো অনেক সময় লাগবে।

সমস্যা সমাধানে কী করা যেতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেশীয় উৎপাদন আরো বাড়াতে পারলে সেই গ্যাস ব্যবহার করেও বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে। ভোলাসহ কয়েকটি স্থানে বাপেক্স কূপ খনন শুরু করেছে। এসব কূপ থেকে গ্যাস পাওয়ার আশা করা হচ্ছে। এগুলো পেলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের কাজে আসবে। তাছাড়া কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো শিগগিরই উৎপাদনে এলে সমস্যার উন্নতি হবে। নভেম্বর মাস থেকে শীত শুরু হলে বিদ্যুতের ব্যবহার কিছুটা কমবে, তবে রাতারাতি বর্তমান সংকটের সমাধান হবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App