×

জাতীয়

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাই রুবেলের মূল টার্গেট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৫:২৭ পিএম

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাই রুবেলের মূল টার্গেট

রবিবার মিন্টো রোডে রুবেলসহ তার চারজন সহযোগী গ্রেপ্তার হন। ছবি: ভোরের কাগজ

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাই রুবেলের মূল টার্গেট

জব্দ করা হয়েছে চক্রটির ছিনতাই করা সামগ্রী। ছবি: ভোরের কাগজ

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েরাই রুবেলের মূল টার্গেট

জব্দ করা হয় ছিনতাইকৃত দুটি মোটরসাইকেলও

# দেড় হাজার ছিনতাইয়ের ঘটনা স্বীকার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল অভিযুক্তসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো.শাকিল আহম্মেদ রুবেল, মো.আকাশ শেখ, দেলোয়ার হোসেন ও মো.হাবিবুর রহমান। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগাজিন, একটি ওয়্যারলেস সেট, দুটি পুলিশ স্টিকারযুক্ত মোটরসাইকেল ও ছয়টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর কল্যাণপুরে গতকাল অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে ডিএমপি গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উত্তরা বিভাগ।

ডিবি জানায়, আটক রুবেল একজন পেশাদার ছিনতাইকারী। তার মূল টার্গেট কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়ে শিক্ষার্থীরা। সে এখন পর্যন্ত দেড় হাজারের মতো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে।

[caption id="attachment_365856" align="aligncenter" width="700"] জব্দ করা হয়েছে চক্রটির ছিনতাই করা সামগ্রী। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাবি শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে রাজধানীর দিয়াবাড়ীতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি ঘটনার মূল অভিযুক্ত রুবেলের বাড়ি গাজীপুর। তবে আরও দুটি ঠিকানা পাওয়া গেছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করছি। রুবেল ঢাকায় কোনো বাসা ভাড়া নেয়নি। সে রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া নিয়ে অবস্থান করতো। তার পর মোটরসাইকেল ছিনতাই কিংবা ভাড়া নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কলেজের শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে এসব ঘটনা ঘটাতো। ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকেও তুলে নিয়ে ছিনতাইয়ের আগে সে গত ১২ আগস্ট উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে একটি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে। সেই মোটরসাইকেল পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে ঢাবির ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে দিয়াবাড়ীতে নিয়ে ছিনতাই করে।

রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, সে এখন পর্যন্ত ঢাকাসহ সারা দেশে দেড় হাজারের বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে। এর মধ্যে ছিনতাইয়ের পর ৫০ জন মেয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছেন। ছিনতাইয়ের পর মেয়েদের সঙ্গে সে অশালীন আচরণ করতো এই জন্য যে তারা যেন পরে লোকলজ্জার ভয়ে কোনো কথা না বলে বা অভিযোগ না করে।

ছিনতাইয়ের জন্য নির্জনস্থান বেছে নিতো রুবেল বলে জানিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, মেয়েদের মোটরসাইকেল উঠিয়ে রাজধানীর ৩০০ ফিট, দিয়াবাড়ী ও পূর্বাচল এলাকায় নিয়ে যেতো। তার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের ছয়টি মামলা বিভিন্ন থানায় রয়েছে। তাকে ও তার সহযোগীদের রিমান্ডে এনে এ বিষয়ে আমরা বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করব।

তিনি আরো বলেন, আমরা অনুরোধ করবে কেউ পুলিশ পরিচয় দিলে যেন তার মোটরসাইকেল কেউ উঠে না যায়। তাকে যেন চ্যালেঞ্জ করে ও তার পরিচয় জানার চেষ্টা করে। কোনো পুলিশ মোটরসাইকেল করে কখনো আসামি নিয়ে যায় না।

ঢাবির একজন শিক্ষার্থী কিভাবে এতো সহজে রুবেলের খপ্পরে পরে যায় জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, আসলে তার হাতে ওয়াকিটকি, পিস্তল ও গাড়িতে পুলিশের স্টিকার দেখে হয়তো ওই শিক্ষার্থী তাকে পুলিশ ভেবে নেয়। তবে সে যদি আশপাশের লোকজনকে ডেকে তাকে চ্যালেঞ্জ করতো তাহলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটতো না।

[caption id="attachment_365857" align="aligncenter" width="700"] জব্দ করা হয় ছিনতাইকৃত দুটি মোটরসাইকেলও। ছবি: ভোরের কাগজ[/caption]

ছিনতাই কি রুবেলের পেশা নাকি নেশা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এইটা রুবেলের পেশা ও নেশা দুটাই। সে পুলিশের ছদ্মবেশ এই কাজগুলো করে আসছিল। এইটা বুঝতে বুঝতে সে সারা দেশে ওদড় হাজারের মতো ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সে একাধিকবার জেলে গিয়েছে। তার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলাও রয়েছে। তার চারজন সহযোগীদের কি কাজ ছিল জানতে চাইলে হারুন বলেন, তারা রুবেলকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে সহযোগিতা করতো। কেউ মোটরসাইকেল ভাড়া করে এনে দিতে আবার কেউ অন্যভাবে সহযোগীতা করতো।

রুবেল ওয়াকিটকি, পিস্তল ও ডিএমপির লোগো কীভাবে পেল জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা রিমান্ডে এনে তার কাছ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব।

ভুয়া পুলিশের ঘটনা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে আটকানো যাচ্ছে কেন প্রশ্ন করা হলে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, এসব ঘটনায় অনেকে মামলা করতে থানায় যায় না। মামলা করলে এসব বিষয়ের শক্ত পদক্ষেপ নেয়া হয়। মামলা না হলে তো আমরা এসব বিষয় জানতে পারি না।

তার পিছনে সত্যিকারের কোনো পুলিশ সদস্য আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,তার সঙ্গে আর কে বা কারা জড়িত রয়েছে তা বিস্তারিত জানতে আমরা রিমান্ডে এনে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App