×

জাতীয়

অবৈধ সম্পর্ক থেকে মুক্তি পেতে হত্যা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২২, ০২:০৩ পিএম

অবৈধ সম্পর্ক থেকে মুক্তি পেতে হত্যা

শোয়েব আক্তার লাদেন ও মাকসুদুর রহমান ডায়না। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ থেকে মাকসুদুর রহমান ডায়নার গলিত মরদেহ তার কক্ষেই এগারো দিন পড়েছিল বলে পুলিশ জানায়। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শোয়েব আক্তার লাদেন নামে একজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক থেকে মুক্তি পেতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

আজ বুধবার (৩১ আগস্ট) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার।

এসময় ওয়ারী বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এস এম জাহাঙ্গীর হাসান, এডিসি মিডিয়া হাফিজ আল আসাদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ডিসি জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, ২৭ আগস্ট বিকালে গোলাপবাগের একতলা বাড়ির ভিতরে কক্ষ থেকে ডায়নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ি থেকে শোয়েব আক্তার লাদেন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন লাদেন।

১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়ার পর এই হত্যাকাণ্ডের কারণ সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান।

তিনি বলেন, লাদেন জানিয়ে ১৬ আগস্ট এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বাড়ির ফটক টপকে পালিয়ে যায়। ডায়নার ছয় ভাই বোন, সবাই আমেরিকার সিটিজেন এবং ডায়না নিজেও একজন আমেরিকান সিটিজেন। দুই বছর আগে ডায়না দেশে এসে ওই বাসায় বসবাস করছেন। তাই বাংলাদেশে তার কাছের কোন স্বজন নেই।

জিয়াউল আহসান বলেন, ডায়নার এক ফুফাতো ভাইয়ের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে। তার ওই ফুফাতো ভাই ডায়নার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিল না। তাই পুলিশকে খবর দেয়।

তিনি বলেন, লাদেন ডায়নার বাসায় কাজ করতো। যখনই প্রয়োজন হতো, তখনই ডায়না লাদেনকে ডাকতো। এভাবেই তাদের মধ্যে একটি দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। ডায়না বাসায় একাই বসবাস করতেন জানিয়ে তিনি বলেন, সে সমাজের কারো সাথে মিশতেন না। তবে কিছু তরুণ বয়সী ছেলেরা তার বাসায় মাঝে মধ্যে আসা যাওয়া করতেন।

ডায়নাকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং সে সমকামি ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ডের কিছু দিন আগে লাদেন বিয়ে করে। বিয়ের পরও লাদেন এবং ডায়নার মধ্যে শারীরিক সমকামিতা চলতে থাকে। কিন্তু লাদেনের এই বিয়ে ও নতুন জীবনকে ডায়না কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না।

তিনি বলেন, লাদেনও চাইতো ডায়নার সাথে সম্পর্ক শেষ করে মুক্ত জীবনে ফিরতে। কিন্তু আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ডায়না লাদেনকে ছাড়তো না। সে লাদেনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যেতে আর বিনিময়ে অর্থ দিত।১৬ অগাস্ট শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আঘাত করে বলে পুলিশকে জানায়।

মাথায় ও হাঁটুতে উপর্যুপরি আঘাত করে রক্তাক্ত অবস্থায় অচেতন হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে।এসময় লাদেন দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে বন্ধ মূল ফটক টপকে পালিয়ে যায়।

জিয়াউল আহসান বলেন, ডায়না আশপাশের কারো সঙ্গে মিশতো না আর একতলা ওই বাড়ির দেয়াল অনেক উঁচু ছিল। তাই এতদিন মরদেহ পড়ে থাকার পরেও আশপাশের কেউ টের পায়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App