×

জাতীয়

দেশের ১৪ শতাংশ বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান কখনো নিবন্ধন করেনি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ আগস্ট ২০২২, ০২:৫৭ পিএম

দেশের ১৪ শতাংশ বেসরকারি সেবা প্রতিষ্ঠান কখনো নিবন্ধন করেনি

মঙ্গলবার দুপুরে আইসিডিডিআর,বি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গবেষণার উপাত্ত উপস্থাপন করেন ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) জ্যেষ্ঠ পরিচালক ডা. শামস এল আরেফিন। ছবি: সংগৃহীত

দেশে অবৈধ সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই অস্থিরতা বিরাজ করছে। সেখানে শৃঙ্খলা ফিরাতে অবৈধ ও অনিবন্ধিত ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে দেশজুড়ে চলছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের শুদ্ধি অভিযান। এর মধ্যেই দেশে অনিবন্ধিত হাসপাতালের সংখ্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, দেশে এমন কিছু বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে যারা নিবন্ধনের জন্য কখনো আবেদনই করেনি, শতকরা হিসাবে তা প্রায় ১৪ শতাংশ। এমনকি যারা কোনো এক সময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিল, তাদের মধ্যেও বড় একটি সংখ্যার লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে আইসিডিডিআরবি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ গবেষণা উপাত্ত তুলে ধরা হয়। প্রতিষ্ঠানটির ম্যাটার্নাল অ্যান্ড চাইল্ড হেলথ ডিভিশনের (এমসিএইচডি) জ্যেষ্ঠ পরিচালক ডা. শামস এল আরেফিন এ তথ্য উপস্থাপন করেন। তবে তিনি এও জানিয়ে দিয়েছেন, এই গবেষণাটি করোনা মহামারির আগে করা হয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে ২০২০ সালে করা এ গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য এখন অনেকটাই পরিবর্তিত হয়েছে। কারণ করোনা কালে স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এই বিভাগ বেশ কিছু ইতিবাচক উদ্যোগ নিয়েছে। এতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।

গবেষণার তথ্য উপস্থাপন করে তিনি জানান, দেশে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিযান পরিচালনা করেছে। এবিষয়টি দেখতে ইউএস-এইডের সহায়তায় আমরা ১২ সিটি কর্পোরেশনের ১০ টি জেলার ২৯টি উপজেলায় একটি গবেষণা জরিপ পরিচালনা করি। এতে স্থানীয় সিভিল সার্জনসহ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল সহায়তা করে।

তিনি বলেন, গবেষণাটি করতে গিয়ে এক হাজার ১৮৯টি বেসরকারি হাসপাতালকে মূল্যায়নের জন্য সহযোগিতা চাওয়া হয়, কিন্তু তাদের মধ্যে ৪০টি হাসপাতালই সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়। সবশেষে ১১১৭টিতে মূল্যায়ন করা হয়।

শামস এল. আরেফিন বলেন, জরিপকৃত এক হাজার ১১৭টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৯৫৬টি হাসপাতাল কোন এক সময় নিবন্ধনের আওতায় এসেছিলো, শতকরা হিসেবে যা প্রায় ৮৬ শতাংশ। আর বাকি ১৬১টি বেসরকারি হাসপাতাল কখনই নিবন্ধন করেনি, যা শতাংশ হিসেবে ১৪ শতাংশ।

তিনি আরও বলেন, কোনো একসময় নিবন্ধনের আওতায় আসা ৯৫৬টি বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে ৮৮৬টির (৭৯ শতাংশ) লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিলো, ৬৬টি হাসপাতালের (ছয় শতাংশ) বৈধ লাইসেন্স ছিলো এবং বাকি চারটি হাসপাতাল (দশমিক পাঁচ শতাংশ) এবিষয়ে কোনোকিছু বলেনি।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ১৯৮০ সাল থেকে দেশে বেসরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমের অগ্রগতি শুরু হয়। অগ্রগতিটা সবচেয়ে বেশি হয় ২০০৭ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। বর্তমানে দেশের ৮০ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্য সেবার জন্য নির্ভর করে বেসরকারি হাসপাতালের ওপর। বেসরকারি হাসপাতালের ওপর মানুষের এই নির্ভরশীলতার কারণ হলো সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা, পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ নানা সংকট।

আরও বলা উল্লেখ করা হয়, ১৯৮২ সালের আইন অনুযায়ী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে স্বাস্থ্য সেবার সাতটি শর্ত কিংবা নিয়ম মানতে হয়। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব শর্ত পূরণ করে স্বাস্থ্য সেবা দিতে গেলে নানা প্রতিকূলতার মুখে পড়তে হয়, যে কারণে মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা দিতে সমস্যা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App