×

জাতীয়

অর্ধেক আসনেই ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০১৮, ১০:৫৯ এএম

অর্ধেক আসনেই ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য নেই
একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার সংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখতে নির্বাচন কমিশন যে সীমানা পুনর্বিন্যাসের খসড়া প্রকাশ করেছে, সেখানে অর্ধেক আসনেই জনসংখ্যা বা ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য নেই বলে মনে করছেন অনেকেই। এ পুনর্বিন্যাসে দেখা গেছে, নতুন আসন বিন্যাসে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোটার রয়েছে ঝালকাঠি-১ আসনে। সেখানে এক লাখ ৭৬ হাজার ৯৫৮ জন ভোটার রয়েছেন। আর সবচেয়ে বেশি ভোটার গাজীপুর-৫ আসনে। সেখানে এখন ভোটার ছয় লাখ ৬৯ হাজার ৬৬১ জন, যদিও পাঁচ বছর আগে সেখানে ভোটার ছিল দুই লাখ ৮৯ হাজার ৬৮ জন। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, জেলাভিত্তিক আসন সংখ্যা ঠিক রাখতে নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে তারা জেলার আসনওয়ারি গড় জনসংখ্যা আমলে নিয়েছেন। ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশে ৩০০ আসনে ভোটার প্রায় ১০ কোটি ৪২ লাখ। সে ক্ষেত্রে প্রতি আসনে গড় জনসংখ্যা হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজারের মতো। আর আসনপ্রতি গড় ভোটার হয় ৩ লাখ ৪৭ হাজার। কিন্তু নতুন যে বিন্যাস এসেছে, সেখানে গড়ে তিন থেকে চার লাখ ভোটার আছেন ১৫৩টি আসনে। ৮২টি আসনে ভোটার সংখ্যা এক থেকে তিন লাখের মধ্যে। আর চার থেকে সাত লাখ ভোটার আছে ৬৫টি আসনে। ইসির দেয়া তথ্যমতে, এক থেকে দুই লাখ ভোটার রয়েছে- ঝালকাঠি-১ (১ লাখ ৭৬ হাজার ৯৮৫ জন), যশোর-৬ (১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৬২ জন) এবং পিরোজপুর-৩ (১ লাখ ৮৮ হাজার ৯৬২ জন)। দুই থেকে তিন লাখ ভোটার রয়েছে- ঠাকুরগাঁও-২, নীলফামারী-৩, লালমনিরহাট-৩, রংপুর-১ ও ৬, কুড়িগ্রাম-৪, বগুড়া-২ ও ৩, নওগাঁ-৪ ও ৬, রাজশাহী-৪ ও ৬, নাটোর-৩, পাবনা-১, মেহেরপুর-১ ও ২, ঝিনাইদহ-১ ও ৪, মাগুরা-২, নড়াইল-১, বাগেরহাট-২, ৩ ও ৪, খুলনা-১, ২ ও ৩, বরগুনা-২, পটুয়াখালী-২, ৩ ও ৪, ভোলা-২ ও ৩, বরিশাল-১, ৩ ও ৬, ঝালকাঠি-২, পিরোজপুর-২, জামালপুর-২ ও ৪, ময়মনসিংহ-৩, ৮, ৯ ও ১১, নেত্রকোনা-৪ ও ৫, কিশোরগঞ্জ-৫, মুন্সীগঞ্জ-২, ঢাকা-৪, ৬ ও ৮, গাজীপুর-৪, নরসিংদী-২ ও ৩, নারায়ণগঞ্জ-২, গোপালগঞ্জ-৩, মাদারীপুর-১ ও ৩, শরীয়তপুর-১ ও ৩, সুনামগঞ্জ-২, ৩ ও ৪, সিলেট-২, মৌলভীবাজার-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ ও ৬, কুমিল্লা-২, ৭ ও ৮, চাঁদপুর-১, নোয়াখালী-২ ও ৬, লক্ষীপুর-১, চট্টগ্রাম-৩ ৬, ৭ ও ১২ এবং বান্দরবান ও কক্সবাজার-৪। তিন থেকে চার লাখ ভোটার রয়েছে- পঞ্চগড়-১ ও ২, ঠাকুরগাঁও-৩, দিনাজপুর-১, ২, ৩, ৪ ও ৫, নীলফামারী-১, ২ ও ৪, লালমনিরহাট-১ ও ২, রংপুর-২ ও ৫, কুড়িগ্রাম-৩, গাইবান্ধা-১, ২, ৪ ও ৫, জয়পুরহাট-১ ও ২, বগুড়া-১, ৪ ও ৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ ও ৩, নওগাঁ-২, ৩ ও ৫, রাজশাহী-১, ২, ৩ ও ৫, নাটোর-১, ২ ও ৪, সিরাজগঞ্জ-১, ২, ৩, ৪ ও ৫, পাবনা-৪, কুষ্টিয়া-১, ২,৩ ও ৪, ঝিনাইদহ ২ ও ৩, যশোর-১, ২, ৪ ও ৫, নড়াইল-২, বাগেরহাট-১, খুলনা-৪, ৫ ও ৬, সাতক্ষীরা-২ ও ৩, পটুয়াখালী-১, ভোলা-১ ও ৪, বরিশাল-২, ৪ ও ৫, টাঙ্গাইল-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮, জামালপুর-১, শেরপুর-১, ২ ও ৩, ময়মনসিংহ-১, ৫, ৬, ৭ ও ১০, নেত্রকোনা-১, ২ ও ৩, কিশোরগঞ্জ-৩, ৪ ও ৬, মানিকগঞ্জ-১ ও ৩, ঢাকা-৩, ১০, ১২, ১৩, ১৪, ১৫ ও ২০, গাজীপুর-২, নরসিংদী-১, ৪ ও ৫, নারায়ণগঞ্জ-১ ও ৩, রাজবাড়ী-১, ফরিদপুর-২, ফরিদপুর-৩, ফরিদপুর-৪, গোপালগঞ্জ-১ ও ২, মাদারীপুর-২, শরীয়তপুর-২, সুনামগঞ্জ-১, সিলেট-৩, ৪, ৫ ও ৬, মৌলভীবাজার-১, ৩ ও ৪, হবিগঞ্জ-১, ২ ও ৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ৪ ও ৫, কুমিল্লা-১, ৩, ৪, ৫, ৯ ও ১১, চাঁদপুর-২ ও ৪, ফেনী-১, ২ ও ৩, নোয়াখালী-১, ৩ ও ৫, লক্ষীপুর-২, ৩ ও ৪; চট্টগ্রাম-১, ২, ৪, ৯ ও ১৩, চট্টগ্রাম-১৪, চট্টগ্রাম-১৫, চট্টগ্রাম-১৬, কক্সবাজার-১, কক্সবাজার-২ এবং কক্সবাজার-৩। চার থেকে পাঁচ লাখ ভোটার রয়েছে- ঠাকুরগাঁও-১, দিনাজপুর-৬, রংপুর-৩ ও ৪, কুড়িগ্রাম-১ ও ২, গাইবান্ধা-৩, বগুড়া-৫ ও ৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১, নওগাঁ-১, সিরাজগঞ্জ-৬, পাবনা-২ ও ৩, পাবনা-৫, চুয়াডাঙ্গা-১ ও ২, ঝিনাইদহ-২, মাগুরা-১, সাতক্ষীরা-১ ও ৪, বরগুনা-১, পিরোজপুর-১, জামালপুর-৩ ও ৫, ময়মনসিংহ-২, কিশোরগঞ্জ-১ ও ২, মানিকগঞ্জ-২, মুন্সীগঞ্জ-১ ও ৩, ঢাকা-১, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৬, ১৭ ও ১৯, গাজীপুর-৩, নারায়ণগঞ্জ-৫, রাজবাড়ী-২, ফরিদপুর-১, সুনামগঞ্জ-৫, হবিগঞ্জ-৪, কুমিল্লা-৬, চাঁদপুর-৩ ও ৫, চট্টগ্রাম-৫, ৮ ও ১০, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়ি। পাঁচ লাখ থেকে ছয় লাখ ভোটার- যশোর-৩ (৫ লাখ ২৪ হাজার ৭৫), ময়মনসিংহ-৪ (৫ লাখ ৫৭ হাজার ৮৪১), ঢাকা-২ (৫ লাখ ৩৮ হাজার ২৭০), ঢাকা-১৮ (৫ লাখ ৬০ হাজার ৮৩২), সিলেট-১ (৫ লাখ ৪৩ হাজার ৮৫৯), ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (৫ লাখ ১৪ হাজার ৪৩), কুমিল্লা-১০ (৫ লাখ ৭৪ হাজার ৩০৯), নোয়াখালী-৪ (৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৮৩) এবং চট্টগ্রাম-১১ (৫ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৩)। আবার ছয় থেকে সাত লাখ ভোটার রয়েছে- নারায়ণগঞ্জ-৪ (৬ লাখ ৫৬ হাজার ৭৭১), গাজীপুর-১ (৬ হাজার ৬৯ হাজার ৩৩০) এবং গাজীপুর-৫ (৬ হাজার ৬৯ হাজার ৬৬১)। ২০১১ সালে সর্বশেষ পঞ্চম আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী জনসংখ্যার যথাসম্ভব সমতা রেখে দশম সংসদ নির্বাচনে আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আসন বিন্যাস করা হয়। পরবর্তী আদমশুমারির প্রতিবেদন হবে ২০২১ সালে। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় ১৯৯৫ সালের সীমানার গেজেট বহাল রাখা হয়েছিল। তবে ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে ১৩৩ সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। দশম সংসদে ছয়টি নীতিমালা অনুসরণ করে ৫০টি আসনে ছোটখাট পরিবর্তন করে আসন পুনর্বিন্যাস করা হয়। ১৫ মার্চ ৩০০ আসনের খসড়া প্রকাশ করে ইসির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিদ্যমান অধ্যাদেশের আলোকে সীমানা পুনর্নির্ধারণে ছয় নীতি অবলম্বন করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App