×

জাতীয়

সফল অস্ত্রোপচারে পৃথক জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০২২, ১০:২১ পিএম

সফল অস্ত্রোপচারে পৃথক জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসা

সোমবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে এই অস্ত্রোপচার। ছবি: ভোরের কাগজ

সফল অস্ত্রোপচারে পৃথক জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসা

সফল ভাবে পৃথক করা হয়েছে জোড়া শিশু লাবিবা-লামিসাকে। দীর্ঘ প্রায় ১২ ঘণ্টার চেষ্টার পর তাদেরকে আলাদা করা হয়। পরবর্তিতে তাদেরকে নেওয়া হয় নিবির পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ)।

সোমবার (২১ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে এই অস্ত্রোপচার। এরপর রাতে এবিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন চিকিৎসকরা।

মেডিকেল বোর্ড ও শিশু সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আশরাফ উল হক কাজল বলেন, ৩৮ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে এই অস্ত্রোপচার করা হয়। সকাল ৮টায় তাদেরকে ওটিতে নেওয়া হয়। এরপর সকাল পৌনে ৯টায় তাদেরকে এনেস্থেসিয়া দিয়ে বেহুশ করা হয়।

তিনি বলেন, এই অপারেশনে আমাদের ২টি দুই চ্যালেঞ্জ ছিলো। প্রথমটি হলো, তাদের যোনীদ্বার, পায়ুপথ ও মুত্রনালী খুবই কাছাকাছি ছিলো। সেগুলো আলাদা করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিলো। আরেকটি বড় চ্যালেঞ্জ, তাদের দুজনেরই মেরুদন্ডের নিচের অংশ জোড়া লাগানো। সেখানে কোনো আঘাত লাগলে প্যারালাইড হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে তাদেরকে আলাদা করা হয়। আলাদা করার পরই তারা পা নাড়িয়েছে। এরপর তাদেরকে আলাদা দুটি অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাকি কাজ করে ৮টা ২০ মিনিটে এটি শেষ হয়। জ্ঞান ফিরেই লাবিবা "ও কই ও কই" বলে তার বোন লামিসাকে খোজতে থাকে।

তিনি বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার তাদেরকে মুখে খেতে দেওয়া হবে। তাদের জন্য প্রথম ৪৮ ঘণ্টা খুবই ক্রিটিক্যাল। অপারেশনের এই ধকল সামলাতে তাদের কিছুটা সময় লাগবে। লামিসার মাসিকের রাস্তায় পরবর্তিতে ৩ থেকে ৬ মাস পর আরো কাজ করতে হবে।

এর আগে গত ১৩ ডিসেম্বর তাদেরকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। জটিলতা এড়াতে সেদিন করা হয়নি পৃথকীকরণ। এনেস্থেসিওলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোছলেমা বেগম নার্গিস বলেন, অপারেশনের পর প্রথমে লাবিবার জ্ঞান ফিরে। এর কিছুক্ষণ পর লামিসার জ্ঞান ফিরেছে। তারা দুজনই ভালো আছে।

ঢামেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আশরাফুল আলম বলেন, আমরা ঢাকা মেডিকেলকে মানুষের আস্থার জায়গায় ফিরিয়ে নিতে কাজ করছি। এই রকম সফল অস্ত্রোপচার আমাদেরকে আরো এগিয়ে নিবে।

মেডিকেল বোর্ডে শিশু সার্জারী বিভাগ ছাড়াও আরো ছিলেন, নিউরোসার্জারী, প্লাস্টিক সার্জারী, রেডিওলোজি, ইউরোলোজি, অর্থোপেডিকস, সার্জারী ও এনেস্থেসিওলোজি বিভাগের চিকিৎসকরা। ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল নীলফামারী জলঢাকা উপজেলার যদুনাথ পাড়া গ্রামের লাল মিয়া ও মনুফা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় শিশু দুটি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App