×

জাতীয়

ইসির সঙ্গে ৩০ শিক্ষাবিদের মতবিনিময় রবিবার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২২, ০৫:০৯ পিএম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে চলেছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পরামর্শ নেওয়া এবং কমিশনের কর্মপরিকল্পণা তৈরির অংশ হিসাবে এ সংলাপের আয়োজন করা হচ্ছে।

শনিবার (১২ মার্চ) ভোরের কাগজকে মুঠোফোনে নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, প্রথম পর্যায়ে আগামীকাল (১৩ মার্চ) শিক্ষাবিদদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হবে। পরে ধারাবাহিকভাবে নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক, ইলেকশন বিশেষজ্ঞ ও দলগুলির সঙ্গেও আলোচনা করা হবে। আমরা কর্মকৌশল প্রনয়ন করার জন্য কাজ করছি। এরই অংশ হিসেবে ১৩ মার্চ থেকে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছি। পরে অংশীজনদের সঙ্গে বসা হবে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর ভোরের কাগজকে জানান, আগামীকাল ১৩ মার্চ রবিবার অনুষ্ঠেয় এ সংলাপে শুধু আলোচনা নয়, নির্বাচনের বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কেও কমিশন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত নেবে। তিনি জানান, তাঁরা নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন। একটি সুন্দর, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কীভাবে করা যায়, এ বিষয়ে অংশীজনদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁরা সংলাপে বসছেন। এছাড়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেও নির্বাচন কমিশন কর্মকৌশল ঠিক করবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে স্বচ্ছতা নিয়েই নির্বাচন কমিশন কাজ করতে চায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। পর্যায়ক্রমে নাগরিক সমাজ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, নির্বাচন বিষয়ে গবেষকসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে তারা আলোচনা করবেন।

ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, আগামিকাল রবিবার বিকাল তিনটায় যেসব শিক্ষাবিদদের সঙ্গে আলোচনা হবে তারা হলেন, প্রফেসর ইমেরিটাস ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. আখতারুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী ভিসি ড. ফারজানা ইসলাম, অধ্যাপক এম জাফর ইকবাল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন বেপারি, অধ্যাপক ড. এম আনোয়ার হোসাইন, অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ, প্রফেসর এম আবুল কাসেম মজুমদার, অধ্যাপক ফেরদৌস হাসান, অধ্যাপক ড. বোরহানউদ্দিন খান, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ, অধ্যাপক আকতার হোসেন, অধ্যাপক লায়লুফার ইয়াসমিন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আতিকুল ইসলাম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. তানভীর হাসান, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. এ এফ এম মফিজুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস (ইউ ল্যাব) এর শিক্ষক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের হোসেন, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক ড. তাসলিম আরিফ সিদ্দিকী, অধ্যাপক আল মাসুদ হাসানুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শামছুল আলম ও অধ্যাপক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আক্তার এবং অধ্যাপক ড. মোহাব্বত খান। কিন্তু তালিকায় ড. মোহাব্বত খানের নাম থাকলেও এখনো তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।

এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, এর পরে আগামী ২২ মার্চ সকালে নাগরিক সমাজের সঙ্গে, মার্চের শেষ সপ্তাহে সম্পাদকদের সঙ্গে, এপ্রিলে দু’দফায় সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ এবং পরবর্তিতে নিবন্ধিত দলগুলোর সঙ্গে সকাল বিকেল দুটি করে সংলাপ করা হবে। সে হিসেবে আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে ইসি সংলাপ শেষ করে তাদের মতামত, পরামর্শ ও দাবি অনুযায়ী আগামী নির্বাচনের কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে ইসি।

এবিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল জানান, আমরা এবারে সব নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে চাই। সব দল যেন অংশ নেয় এবং সবার জন্য আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে চাই। সে জন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের কথা, দাবি আমরা জানতে চাই এবং যথাসম্ভব সে অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করতে চাই। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার বিষয়ে দলগুলোরও ভ’মিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগেও বিগত তিনটি নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করেছিল। তবে সর্বশেষ দুটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ছিল নানা বিতর্ক। কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময় সংলাপে যেসব সুপারিশ এসেছিল, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বেশির ভাগ সুপারিশই আমলে নেওয়া হয়নি।

নূরুল হুদা কমিশনের বিদায়ের পর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন কমিশন শপথ নেয়। কমিশন এখনো সে অর্থে কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করেনি। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলে আসছেন, গত দুটি কমিশন দেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভোট এবং ইসির প্রতি মানুষের আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট দূর করে আস্থা অর্জন করাটা নতুন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ সংলাপ আস্থা অর্জনে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

এর আগে এ টি এম শামসুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন ও নূরুল হুদা কমিশনও জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ করেছিল। নূরুল হুদা কমিশনের সংলাপে ৩৯টি রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নারীনেত্রী ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা অংশ নিয়েছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App