×

জাতীয়

সাত রাজার ধনের প্রলোভনে প্রতারণা, ‘জ্বীনের বাদশা’সহ গ্রেপ্তার ৩

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০১:২৫ পিএম

সাত রাজার ধনের প্রলোভনে প্রতারণা, ‘জ্বীনের বাদশা’সহ গ্রেপ্তার ৩

গ্রেপ্তারকৃত ‘জ্বীনের বাদশা’ চক্রের তিন সদস্য। ছবি: ভোরের কাগজ

গভীর রাতে যখন সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন, ঠিক সেই সময়কেই বেছে নেয় জ্বীনের বাদশারা। আচমকা অজানা নম্বর থেকে ফোন করে নানা রকম উদ্ভট আওয়াজ শোনায় তারা। এরপরই কথা শুরু করে জ্বীনের বাদশা। সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য অর্জন, অঢেল সম্পদ মালিক বানিয়ে দেয়া, পরকালে সাত রাজার ধন পাইয়ে দেয়াসহ অপূর্ণ চাহিদা পূরণের আশ্বাস দেয়াসহ আরও প্রলোভনের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করে তারা। এ প্রলোভনে বিশ্বাস করলেই নানা অজুহাতে তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।

এমনই এক চক্রের মূলহোতাসহ তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা হলেন, মূলহোতা মো. লুৎফর রহমান, তার সগযোগী আ. গফফার ও মো. শামীম। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ও বিভিন্ন অপারেটরের সিম উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের একটি সিমেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্ধকোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

আজ মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে বরিশাল, ভোলা, চট্টগ্রাম, বগুড়া ও গাইবান্ধা এলাকার সহজ সরল মানুষদের ধোঁকা দিয়ে আসছিলো। চক্রটি নিজেদের জ্বীনের বাদশা পরিচয় দেয়। পরে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত সোমবার গাইবান্ধা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তারা বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্মসহ কেবল নেটওয়ার্কের লোকাল চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জটিল ও কঠিন রোগে আক্রান্ত অসুস্থ মানুষকে সুস্থ করা, বিদেশে যাওয়ার সুব্যবস্থা, দাম্পত্য কলহ দূর করা, বিবাহের বাঁধা দূর করা, চাকরিতে প্রমোশন, কম দামে স্বর্ণ ক্রয়, বদ জ্বীনকে বিতাড়িত করা, খান্নাস জ্বীনকে পাতিল বন্দী করা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞাপন দিতো। সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন মানুষ যোগাযোগ করলে ভিন্ন কন্ঠে কথা বলে নিরীহ সরলমনা মানুষকে ফাঁদে ফেলে এবং পরবর্তীতে তাদের কথা অনুযায়ী কাজ না করলে প্রিয়জনের ক্ষতির ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আত্মসাৎ করতো। জ্বীনের বাদশা সেজে এই প্রতারক চক্রটি দেশের বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন যাবৎ সক্রিয় ছিল।

মুক্তা ধর আরও বলেন, আসামিদের মধ্যে মো. লুৎফর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণা করে বিভিন্ন লোকজনের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদেরকে সর্বশান্ত করার বিষয়টি স্বীকার করে। তারা গভীর রাতে জ্বীনের বাদশা ও পীর দরবেশ সেজে বিভিন্ন মানুষের সাথে প্রতারণা করে বিকাশ, নগদ বা রকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে শতাধিক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে গত ছয় মাসে আনুমানিক অর্ধ কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এ চক্রের অন্য সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান এই সিআইডি কর্মকর্তা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App