ব্রেকিং |
এতিম জিমরানের দৃষ্টি ফেরাতে সাহায্য চান খালা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৭ পিএম
শিশু জিমরান
বাবা হানিফ মিয়া মারা গেছেন ছোট বেলাতেই। মা সাজুনি বেগমও দ্বায়িত্ব নেয়নি ছেলে জিমরানের। সংসার পেতেছেন অন্যত্র। এমন অবস্থায় খালা জহুরা বেগমের কাছে ঠাঁই হয় মা থেকেও না থাকা এতিম ছেলেটির। তবে এ সুখও স্থায়ী হয়নি জিমরানের।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে চলা সহিংসতার সময় বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে এখন অন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে ১১ বছর বয়সী এই শিশুর। জিমরান এখন জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে বাসায় রয়েছে। চা দোকানী খালা জেসমিন ও আরেক খালা জহুরা বেগমের এখন আপ্রাণ চেষ্টা ছেলেটির চোখ বাঁচিয়ে রাখার। কিন্তু অভাবের সংসার তাদের। জেসমিনের স্বামী অসুস্থ। তার ছেলে বুদ্ধি প্রতিবন্দ্বী। আবার জহুরার অভাবের সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। বোনের ছেলে হলেও জিমরানকে তারা দুজন নিজের সন্তানের মতোই ভালবাসেন, লালন পালন করেন। কিন্তু অর্থাভাবে জিমরানের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। এজন্য তারা সরকারের সংশ্লিষ্টদের সদয় দৃষ্টি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ২৯ জুলাই রাত ৮টার দিকে পুলিশের ছোড়া গুলি জিমরানের বাম চোখে বিদ্ধ হয়। এর পর থেকে সে ওই চোখে দেখতে পারছে না।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুরে জিমরানের খালা জহুরা বেগম ভোরের কাগজকে জানান, সূত্রাপুর থানাধীন রায়সাহেব বাজার এলাকার ধোলাইখাল ২৬, নাসিরুদ্দিন সর্দার লেনের বাসিন্দা তারা। জিমরানের ছোট বেলায় বাবা মারা গেলে তার ছোটবোন অন্যত্র বিয়ে করেন। ভ্যানচালক ওই স্বামীর সংসারে আরেক সন্তান রয়েছে তার। জিমরানের মা সাজুনি সন্তানের খোঁজ-খবর রাখেন না জানিয়ে খালা জহুরা বেগম বলেন, ছোট ছেলেটার কি অপরাধ ছিল। পুলিশ কেন তাকে গুলি করলো। তিনি ওই পুলিশ সদস্যদেরও বিচার দাবি করেন।
জানা গেছে, ৪ বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর মা অন্যত্র বিয়ে করলে জিমরান তার খালা জহুরার সঙ্গেই থাকছে। তার আরেক খালা জেসমিনও একই এলাকায় থাকেন। চা-পানের দোকান করে জেসমিনের সংসার চলে।
গত ২০ জুলাই রাত ৮টার দিকে জিমরান তার খালা জেসমিনের দোকানের সামনে খেলছিলো। এ সময় একটি এ্যাম্বুলেন্সে করে থানা পুলিশ আসে ফুটপাটের ওই দোকানের সামনে। তারা ওই চা-পানের দোকান ভেঙ্গে ফেলে ও এলোপাথাড়ি গুলি চালায়। এ সময় বাম চোখে গুলিবিদ্ধ হয় জিমরান। এ ঘটনার পর তাৎক্ষণিক শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নেয়া হয় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে। কিন্তু অর্থ সংকটের কারণে তার চিকিৎসা শেষ হয়নি সেখানে। তাকে বাসায় নিয়ে আসেন জহুরা। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জহুরা বলেন, বাম চোখে কিছুই দেখছে না জিমরান। এটির ভালোমতো চিকিৎসা না হলে ডান চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জিমরানের চোখটি যেনো বাঁচে- সে যেনো দৃষ্টি হারিয়ে অন্য কারো বোঝা না হয় তা ঠেকাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা দুবোন।