×

সাহিত্য

মহাকালের পালকে যুক্ত হলো ‘সুরেন্দ্র কুমারী’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৯:২৪ পিএম

মহাকালের পালকে যুক্ত হলো ‘সুরেন্দ্র কুমারী’
মহাকালের পালকে যুক্ত হলো ‘সুরেন্দ্র কুমারী’

নাটক ‘সুরেন্দ্র কুমারী’। ছবি: ভোরের কাগজ

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় গর্বিত ৪০ বছরের স্বপ্নযাত্রা অতিক্রম করছে। ১৯৮৩ সালের ১৪ জুলাই প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির প্রতি অবিচল আনুগত্যে স্থির থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চারত সংগঠন হিসাবে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ় করেছে। অবিরাম নাট্যচর্চায় দলটি ৪৩টি নাট্য প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে।

ইতোমধ্যে প্রযোজনাগুলোর ১১১৫টি প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে এবং ২টি নাট্য প্রযোজনার শতাধিক মঞ্চায়ন এবং ১টি প্রযোজনার ১৯৯তম মঞ্চায়ন সম্পন্ন করেছে। মঞ্চে ৪টি প্রযোজনা নিয়মিতভাবে মঞ্চায়ন অব্যাহত রেখেছে। এবার মহাকালের পালকে ‘সুরেন্দ্র কুমারী’ নামে আরো একটি নতুন নাট্য প্রযোজনা যুক্ত হলো। এটি দলের ৪৪ প্রযোজনা। নাটকটি রচনা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান, নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ নির্দেশক শামীম সাগর।

শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়।

নাটকের গল্পে দেখা যায়, অতীত মন্থনকারী এক কবির আহ্বানে মঞ্চের ধুমেল আলোর অন্তর খুড়ে উদ্ভাসিত হয় সুরেন্দ্রকুমারী। নীল নক্ষত্রের কুয়াশাকনা কলমে মেখে সুরেন্দ্রর প্রতি অশ্রুসিক্ত কবি প্রচলিত গাঁথা নবতর শিল্পরীতিতে বয়ান করতে চায়। যেখানে আখ্যানের অন্তে সুরেন্দ্রর আত্মহত্যা রুখে দেয়া হবে।

এক ঝড়জলের রাত ফুরানো ভোরে জমিদার যতীন্দ্রনাথের ঘোড়ার পীঠে বিষক্রিয়ায় মৃত যতীন্দ্রকে নিয়ে ফিরে আসে। সন্তানসম্ভবা রাজমাতার হুংকারে পরগনা কম্পমান। সন্দেহভাজন হীরাচূড় মতিবাঈয়ের প্রাসাদ পুড়িয়ে দেয় সৈন্যরা। সুরেন্দ্রকুমারীর জন্মের পর থেকেই রাজমাতা তাকে সকল প্রকার সমর শাস্ত্রে প্রশিক্ষণ দেয়। নারীর সহজাত প্রবৃত্তি সুরেন্দ্রর জন্য ছিল নিষিদ্ধ। শিবলিঙ্গে পূজা দিতে গিয়ে মন্দিরের ঈষৎ অন্ধকারে দেখা পুরোহিতের শিষ্য আনন্দনাথের খোলা পীঠ তাকে নিরন্তর হাতছানি দেয়। নিজেই নিজের প্রবৃত্তির বিপরীতে দাঁড়ায় সুরেন্দ্র। সে মনযোগী হয় পরগনার পর পরগনা দখলে। আকস্মিক সে এক বীভৎস সত্য আবিষ্কারের মাধ্যমে আশ্রয় প্রার্থনা করে আনন্দনাথে। সুরেন্দ্র সকল বিপত্তি অতিক্রম করে আনন্দকে নিয়ে পালিয়ে যায় গোপন সুরঙ্গ দিয়ে। মতিচূর বাঈয়ের পোড়া প্রাসাদে। ধৃত হয় পুরোহিত জ্ঞানেশ্চার্য। সুরেন্দ্রর মুখোমুখি হয় হীরাচূড় মতিবাঈয়ের ছায়াশরীর এক ভয়ংকর গোপন উন্মোচিত হয় সুরেন্দ্রর সম্মুখে। ক্ষমতার হাতছানি মানুষকে কেমন বদলে দেয়। মানুষের ভেতর থেকে মানুষটাই কেমন কেঁচে নিংড়ে বাইরে ফেলে দেয়। এ উপলব্ধি নাট্যান্তে সুরেন্দ্রকে এক দৃঢ় সিদ্ধান্তে উপনীত করে।

রচনা প্রসঙ্গে আনন জামান বলেন, সুরেন্দ্রকুমারী কোনভাবেই ইতিহাস ভিত্তিক বা আশ্রিত নাটক নয়। উপাত্ত ও প্রচলিত আখ্যানসূত্র নিয়ে সুরেন্দ্রকুমারীর নিশ্চিত নিয়তির মতো আত্মহত্যা রুখে দেবার জন্য এ নাটকে শিল্পের যাদুবিভায় চরিত্র আহ্বান করেছিল আখ্যানকার। নিয়তি বদলে দেবার জন্য পুনঃরচনা করেছিল দৃশ্যের বিপরীতে নবতর দৃশ্য। এ উত্তর নাট্য দর্শনেই লাভ করুক দর্শক শ্রোতামণ্ডলী। উপরন্তু আখ্যান দর্শনে যুদ্ধ ও বীভৎস রাজনীতির বিপরীতে প্রেমের অঙ্কুরোদগম হোক সর্বজনের মনোলোকে এই অভিপ্রায়ে ‘সুরেন্দ্রকুমারী’ রচনা।

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন আবু আজাদ, শুভ্র মানিক, ইকবাল চৌধুরী, পলি বিশ্বাস, শিবলী সরকার, কানিজ ফাতেমা লিসা, চৈতী সাথী, রাজীব দেবনাথ, কাজী তারিফ, স্বপ্নিল, রাকিব হাসান, উইলিয়াম নিক্সন ভিকী, আব্দুল কাইয়ুম, নীলমনি বাবু, কামরুজ্জামান সবুজ, শঙ্কর কুমার ধর ও মীর জাহিদ হাসান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App