×

সাহিত্য

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আফরোজা পারভীন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:৩০ পিএম

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার পেলেন আফরোজা পারভীন

অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার গ্রহন করছেন আফরোজা পারভীন। ছবি: ভোরের কাগজ

গল্প, উপন্যাস, কবিতা, গবেষণাসহ সাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য ত্রিশতম ‘অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার-১৪৩০’ পেলেন কবি, কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক আফরোজা পারভীন। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে পুরস্কারের অর্থমূল্য ১ লক্ষ টাকার চেক, শুভেচ্ছাপত্র, উত্তরীয় এবং ক্রেস্ট তুলে দেয়া হয়। অনন্যা ও ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হেসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এ সময় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক আন্দালিব রাশদি, কথাসাহিত্যিক হামীম কামরুল হক ও কথাসাহিত্যিক নাসরীন মুস্তাফা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কথাসাহিত্যিক ঝরনা রহমান। তাসমিমা হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অনেক মানুষের অবদান আছে, যা আফরোজা পারভীন-এর লেখায় কথায় আবারও প্রকাশ পায়। অনন্যা যোগ্য নারীকে সম্মাননা দিতে পেরে সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, আমরা এমন এক সময় অনন্যা শীর্ষ দশ ও অনন্যা সাহিত্য পুরস্কার প্রদান শুরু করি যখন সমাজে নারীকে মূল্যায়ন করা হতো না। আমরা এখন ডিজিটাল সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। জীবন যাপনের ব্যয় দিন দিন বাড়ছে, নানা কারণে অস্থিরতা বিরাজ করছে সমাজে। সময়ের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে অনন্যা। অনেক যোগ্য নারীদের সমাজে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না এমন মন্তব্য করে তাসমিমা হোসেন আরো বলেন, আমাদের সমাজে এখন আদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিরাট একটা পরিবর্তন এসেছে। তবে এ বিবর্তন তো হবেই। এই পরিবর্তন আসছে মূলত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে। তারপরও আমরা নতুন প্রজন্মের সঙ্গে আছি। আন্দালিব রাশদি বলেন, আফরোজা পারভীন তার লেখার মধ্য দিয়ে দৃশপট আকঁতে পারেন। এটা তার লেখার বড় দিক। যখন তার লেখা পড়ি তখন মনে হয় দৃশ্য আর চরিত্রগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে। তিনি বলেন, সব ক্ষেত্রের মতো নারীর সাহিত্যে দাপটের সাথে বিচরন করছে। তিনি বলেন, সাহিত্য জগতে প্রস্তুতির প্রথম পাঠ হচ্ছে পড়াশোনা। আফরোজা পারভীন পুরো সাঁতারটাই পরীক্ষা দেয়ার আগেই শিখে নিয়েছিলেন। তার কলমে মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে গবেষণা, শিশু সাহিত্য সবই উঠে এসেছে। এসব লেখায় রয়েছে বহুমাত্রিকতা রয়েছে। হামীম কামরুল হক বলেন, আমাদের মধ্যে একটা বড় ধারণা যে লেখকের বেশি বই থাকে, তারা মানসম্পন্ন লেখক নয়। কিন্তু আফরোজা পারভীনের প্রকাশিত ১২৫টি গ্রন্থ প্রমাণ করেন তিনি ভালো লেখক। তিনি বলেন , আমরা লেখকরা মৌলিক লেখার পেছনে ঘুরতে ঘুরতে পিছিয়ে যাই। কিন্তু পুরোনো বিষয়ও প্রত্যেক লেখক নিজের মতো নতুন করে লিখতে পারে। তিনি বলেন, আফরোজা পরভীন একজন গোছানো ধ্রুপদি লেখক। তার লেখা পড়লেই বোঝা যাবে মুক্তিযুদ্ধ তাকে বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে। নাসরীন মুস্তফা বলেন, তার লেখার মধ্য দিয়ে তাকে আলাদা করা যায়। অনন্যা আফরোজা পারভীনকে অনেক দেরীতে খুজেঁ পেয়েছে। এখন বাংলা একাডেমীর পালা। অনুষ্ঠানে শুরুতে শিশু ইচ্ছে নারী কবিতা আবৃত্তি করে। অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্মননা প্রাপ্ত লেখকের উপর তাপস কুমার দত্ত পরিচালিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। পুরস্কার পেয়ে আফরোজা পারভীন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ আমার জীবনের বড় অধ্যায়। মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি দাবদাহ, প্রতিটি আচড় আমার গায়ে এসে লেগেছে। আমি সবকিছু পারিনা, লেখাই আমার আরাধ্য, লেখাই আমার খাবার, লিখতে লিখতেই যেন মরে যেতে পারি। তিনি বলেন, কাজটি অনেক চ্যালেঞ্জিং হলেও আমি আজীবন সাহিত্যচর্চায় যুক্ত থাকব। আফরোজা পারভীন বলেন, আমি ভাগ্যবান যে আমার পরিবার রাজনৈতিক পরিবার। বাবা-মা আমাকে কখনোই মেয়ে হিসেবে আলাদা করেন নি। আমার স্বামী আমাকে লেখার শুধু উৎসাহই দেন নি, নিজের সাধ্য মতো লেখার উপকরণ কিনে দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, আমার সন্তানরা সব সময় উৎসাহ দিয়েছে। কিন্তু অনেক নারী আছেন তাদের প্রতীভা থাকলেও আমার মতো পরিবেশ ও পরিবার পায় না। লেখার খাতা পায় না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App