×

সাহিত্য

উচ্চারিত শব্দমালায় সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেয়ার প্রত্যয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৩, ১০:৩০ পিএম

উচ্চারিত শব্দমালায় সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেয়ার প্রত্যয়

ছবি: ভোরের কাগজ

উচ্চারিত শব্দমালায় সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেয়ার প্রত্যয়

ছবি: ভোরের কাগজ

উচ্চারিত শব্দমালায় সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেয়ার প্রত্যয়

ছবি: ভোরের কাগজ

সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, সংস্কৃতিবিরোধী শক্তি যখন সক্রিয় তার বিপরীতে দাঁড়িয়ে গঙ্গা-যমুনা উৎসব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সৃজনে তৎপর। সংস্কৃতির শক্তি দিয়ে এ অপশক্তিকে প্রতিহত এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এ উৎসব। এরমধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে জাগরণ ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয় ধ্বনিত হচ্ছিল। বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকালে উৎসবের ৬ষ্ঠতম দিনে শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গনে পথ নাটক, নৃত্য পরিবেশনা আর আবৃত্তির শাণিত উচ্চারণে সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত হলো শিল্পীদের উচ্চারিত শব্দ মালায়। শিশু সংগঠন মূল ফৌজ (মিরপুর-৬) পরিবেশনা শুরু হয়। এরপর দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করল সুরবাণী ও দৃষ্টি, দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করল নান্দনিক শিল্পালয় ও পিদিম থিয়েটার, দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যতরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যপালা, পথনাটক পরিবেশন করেছে নাট্যপালা। সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে নাট্য সংগঠন প্রাঙ্গণেমোর প্রযোজনা ‘ঈর্ষা’ মঞ্চায়ণ হয়। নাটকটির রচনা সৈয়দ শামসুল হক, নির্দেশনায় ছিলেন অনন্ত হিরা। [caption id="attachment_469611" align="alignnone" width="1600"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption] কাব্যনাটক ‘ঈর্ষা’র গল্প জীবন থেকে জীবনে বিস্তৃত আর দ্বন্দ্ব সংঘাতে মুখর যা বর্ণনাতীত। সেইসঙ্গে আছে শিল্পের সঙ্গে শিল্পের দ্বন্দ্ব শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর দ্বন্দ্বও। আছে মানুষের সঙ্গে মানুষের এবং শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর প্রেম, ভালোবাসা; আছে মানব জীবনের আরেক অপরিহার্য এবং অত্যন্ত গোপন বিষয় শারীরিক সম্পর্ক বা যৌনতার কথা। আছে রূপসী বাংলার, শ্যামল উজ্জ্বল, রূপশালী গর্ভবতী ধানের বাংলার রূপের বর্ণনা, আছে মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধও। ‘প্রেমিকের হৃদয় যদি পোড়ে তো একমাত্র ঈর্ষার আগুনে পোড়ে, ঈর্ষায় যে পোড়েনি, প্রেম সে হৃদয়ে ধরেনি, ঈর্ষা এক ঠাণ্ডা নীল আগুন’। অথবা ‘রাষ্ট্রের বির্পযয়ে পথে নামা যায়, বক্তৃতা করা যায়, করা যায় মিটিং মিছিল, গেরিলাও হওয়া যায়। কিন্তু বিপর্যয় হয় যদি ব্যক্তিগত, যদি নষ্ট হয়ে যায় নিজেরই ফসলের মাঠ, কি তবে কর্তব্য হয়? মিছিল কি নামানো যায়? স্লোগান কি দেয়া যায়? গড়ে তোলা যায় গোপন বাহিনী শুধু নিজেকে নিয়ে?’ অথবা ’অবরুদ্ধ শৃঙ্খলিত যেখানে স্বদেশ, রং তুলি কাগজ সব অর্থহীন। বাড়িতে ডাকাত যদি পড়ে, বেহালা যে বাজায় তাকেও বল্লম হাতে তুলে নিতে হয় অথবা বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়- নর্দমায় বেহালা গড়ায়’। এরকম অসংখ্য জীবন তত্ত্ব কথা সমৃদ্ধ নাট্য কথনে বিমুগ্ধ হয় দর্শক। ১ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের এই নাটকের তিনটি দৃশ্যে রয়েছে মাত্র ৭টি সংলাপ। নাটকটির সবচেয়ে বড় সংলাপের ব্যাপ্তি ৩৬ মিনিট এবং সবচেয়ে ছোট সংলাপটি ১৬ মিনিট ব্যাপ্তিকালের। নাটক প্রসঙ্গে নির্দেশক অনন্ত হীরা বলেন, নাটকটির বিশেষত্ব হলো এটি কাব্যিক নাটক। নাটকের গল্পটি তিন চিত্রশিল্পীর শিল্পের দ্বন্দ্ব নিয়ে। চারুকলার একজন নারী, একজন পুরুষ শিক্ষক ও একজন ছাত্র এই তিন চরিত্র নিয়েই পুরো নাটকটি। এই কথাটি সন্দেহাতীতভাবেই বলা যায় এরকম কাঠামোতে নাটক লেখার নিরীক্ষা এর আগে বাংলা ভাষায় হয়নি। এ ধরনের নাটক মঞ্চে এনে দর্শক ধরে রাখাটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং। অবশ্যই দীর্ঘ এই গাম্ভির্যপূর্ণ সংলাপগুলোর প্রক্ষপণে অভিনয় শিল্পীদের কৌশল বেশ ভালই উপভোগ করেন দর্শকরা। এতে অভিনয় করেন নূনা আফরোজ, রামিজ রাজু ও অনন্ত হিরা। নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনায় শাহীনুর রহমান, আলো জিল্লুর রহমান, সঙ্গীত রামিজ রাজু ও পোশাক নূনা আফরোজ। [caption id="attachment_469612" align="aligncenter" width="1600"] ছবি: ভোরের কাগজ[/caption] একই সময়ে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ণ হয় ঢাকা থিয়েটারের প্রযোজনা ‘পঞ্চনারী আখ্যান’। নাটকটির রচনা হারুন রশীদ। নির্দেশনায় ছিলেন শহীদুজ্জামান সেলিম। স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ণ হয় থিয়েটারের প্রযোজনা ‘নিখাই’। এর রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন গাজী রাকায়েত। বাংলাদেশ মহিলা সমিতি মঞ্চে চন্দ্রকলার প্রযোজনা ‘তামাশা’ মঞ্চস্থ হয়। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা ছিলেন এইচ আর অনিক। এছাড়া জাতীয় সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তি মিলনায়তনে ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রযোজনা ফকির আলমগীরের কণ্ঠের গান ‘ভয় নেই কোন ভয়-জয় বাংলার জয়’ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের প্রযোজনা গীতিনৃত্যাভিনয় ‘পরশ নদীর বাঁকে’।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App