×

সাহিত্য

কলাকেন্দ্রে নাহিদের ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯:৩৯ পিএম

কলাকেন্দ্রে নাহিদের ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’

রাজধানীর লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্রে এই শিল্পীর ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’ শীর্ষক প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী লালা রুখ সেলিম, চলচ্চিত্র নির্মাতা সামির আহমেদ। ছবি: ভোরের কাগজ

কলাকেন্দ্রে নাহিদের ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’
কলাকেন্দ্রে নাহিদের ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’

অনুর ভেতর স্বপ্ন শান্ত আমি/ জন্মে প্রথম পৃথিবীতে অপরাধী/জীবনগুলো ফুটে উঠার আগেই/ মাটির গভীরে জীবন্ত সমাধি। ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’ শিরোনামের প্রদর্শনীতে কবি ও শিল্পী নাহিদ উল ইসলামের যাপিত জীবনকে একজন পথিকের ভ্রমণ অভিজ্ঞতাকে দৃশ্য ও কাব্যের দৃষ্টিতে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে যেন। নাহিদের সেই অনুভূতিগুলোর কিছু অংশ কবিতা আকারে প্রকাশ পায়, তারই একটি কবিতার অংশ ‘কারিকা’ গুচ্ছমালা।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর লালমাটিয়ার কলাকেন্দ্রে এই শিল্পীর ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’ শীর্ষক প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক শিল্পী লালা রুখ সেলিম, চলচ্চিত্র নির্মাতা সামির আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কিউরেটর ইমরান সোহেল। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শিল্পী নাহিদ উল ইসলাম। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলাকেন্দ্রের পরিচালক চিত্রশিল্পী ওয়াকিলুর রহমান।

চিত্রশিল্পী ওয়াকিলুর রহমান জানান, শিল্পী নাহিদ উল ইসলামের শিল্প শিক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও, কলেজ জীবনে তরুণ বয়স থেকেই শিল্পসাহিত্যের এবং বাম রাজনীতির প্রতি ব্রতচারী বাবা’র কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হন। নব্বইয়ের দশকে বাম রাজনীতিতে সম্পৃক্ততার কিছুদিন পর সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন তার মানস বোধে মারাত্মক পীড়িত করে এবং সমাজ-সংসার বিমুখ করে তোলে। যা কিনা তার শিল্প-সাহিত্যের প্রতি মনোনিবেশ ও জীবন সম্পর্কে উদাসীন করে তোলে। তার পরপরই কলকাতা এবং পরবর্তীতে লন্ডনের অভিজ্ঞতা নাহিদকে শিল্প-সাহিত্যের প্রতি বোঝাপড়া আরো গভীরে নিয়ে যায়। এই প্রদর্শনীতে তার পরিভ্রমণের গল্পগুলো চিত্রায়িত হয়েছে রঙ তুলির মধ্য দিয়ে।

কলাকেন্দ্রে নাহিদের ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’

প্রদর্শনীর কিউরেটর ইমরান সোহেল জানান, ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’ একটি মিশ্র মাধ্যমের দ্বীমাত্রীক শিল্পকর্মের প্রদর্শনী। যেখানে একজন ব্যক্তি নিজে পরিব্রাজক রূপে শিল্পী সত্তার উপর ভর করে নির্দিষ্ট কোন সময়ে ভ্রমণ করে, এবং ব্যক্তির যাপিত জীবনের সাথে সৃষ্ট চিত্রকর্মের প্রগাঢ় সম্পর্ক স্থাপনে উদ্যত হয়। যা একজন প্রাতিষ্ঠানিক বলয়ের চক্রাকারে বেড়ে উঠা শিল্পচর্চাকারীর ক্ষেত্রে ভিন্নরূপ হওয়া অস্বাভাবিক নয়।

শিল্পী ও কবি নাহিদ উল ইসলামের ক্ষেত্রে শিল্প সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় ভ্রমণ করা সুবোধ্য, কারণ করণকৌশলে শিল্পী নাহিদুল তার চিত্র নির্মাণে ব্যাপক উন্মুক্ত, যদিও এই উন্মুক্ততার ব্যাপকতা এবং ব্যক্তি নাহিদ উল- এর লম্বা এবং বৈচিত্র্যময় যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও অপ্রাতিষ্ঠানিকতার বদলে শিল্পী সাহিত্যিকদের সঙ্গে মেলামেশার দরূন কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব ফুটে উঠেছে পরিপক্কতার সঙ্গে। যেখানে শিল্পীর মানসপটের পরিকল্পিত এবং অপরিকল্পিত রং রেখা ও পরিচিত অপরিচিত আকার আকৃতির সাবলীল উপস্থাপন ফুটে উঠে তার চিত্র কর্মে। কখনো সৃষ্ট চিত্রকর্মগুলি মানসিক নিরাময়িক ফলাফল হিসেবে উস্থাপিত হয়, কখনো আবার সচেতনভাবে পরিচিত-অপরিচিত আকার-আকৃতি ও বস্তুর বারংবার ব্যাপক উপস্থাপন লক্ষ্য করা যায় নেহাত কালাতিপাতের উপস্থাপন হিসেবে। পাশাপাশি নাহিদ উল-এর চিত্রপটে ব্যবহৃত দুটি রং-এর মধ্যবর্তী অংশগুলো সস্নেহের রহস্যময়তার স্বতন্ত্রতা লক্ষ্য করা যায়। তার চিত্রপট এবং রং নির্বাচন তাকে অন্যসকল শিল্পী থেকে আলাদা করে তোলে এবং এ-ই সকল চিত্রকর্মের চাইতে চিত্রকর্মে ব্যাবহার করা বিষয়বস্তু, বিচিত্র মাধ্যম, পট এবং যাপিত জীবনের অভিজ্ঞতা মূখ্য হয়ে তার বিশেষ দক্ষতা উপস্থাপিত হয়। প্রদর্শনী চলবে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। প্রদর্শনীর দ্বার সবার জন্য খোলা।

কলাকেন্দ্রে নাহিদের ‘কাল, সংস্রব এবং পরিভ্রমণ’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App