বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বহুমাত্রিক অবদানে নানাভাবে ঋদ্ধ। তিনি তার সারাজীবনের সাধনায় আমাদের মাঝে সঞ্চার করেছেন মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অপরিসীম মমতা। ভাষাতাত্ত্বিক কারণে যেমন আমাদের কাছে স্মরণীয় তিনি তেমনি বাংলা ভাষার পক্ষে লড়াইয়ের জন্যও বিশ^ব্যাপী আদৃত।

মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকালে একাডেমির সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ সভাগৃহে বহুভাষাবিদ, জ্ঞানতাপস, শিক্ষাবিদ, গবেষক ও বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ স্মরণে আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে একক বক্তৃতা উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক গোলাম মুস্তাফা। ধন্যবাদ জানান একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোঃ হাসান কবীর।

সেলিনা হোসেন বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তার সারাজীবনের সাধনায় আমাদের মাঝে সঞ্চার করেছেন মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অপরিসীম মমতা। তিনি যেমন ভাষাতাত্ত্বিক কারণে আমাদের কাছে স্মরণীয় তেমনি বাংলা ভাষার পক্ষে লড়াইয়ের জন্যও স্মরণযোগ্য। বৈরী বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে তিনি অসমসাহসে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়েছেন এবং আরবি ও রোমান হরফে বাংলা প্রচলনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন।

গোলাম মুস্তাফা বলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র অবদানে নানাভাবে ঋদ্ধ। বিশেষত বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদ ছিল তাঁর গবেষকজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ চর্যাপদ-এর ভাষা বিশ্লেষণ করে এর উদ্ভবকাল সম্পর্কে প্রচলিত বহু ভ্রান্ত ধারণা খণ্ডন করে এর বৈজ্ঞানিক-বাস্তবভিত্তিক সময়কাল নির্ধারণ করেন যা এখন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত।

তিনি বলেন, বাংলা অঞ্চলে প্রচলিত বহু প্রবাদের উৎসস্থল যে চর্যাপদ, তাও ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র অনুসন্ধানলব্ধ আবিষ্কার। মোঃ হাসান কবীর বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্র মতো মনীষীদের মহৎ স্বপ্ন কাজ করেছে। তার মতো মনীষীদের বহুমাত্রিক অবদানের কারণেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্য আজ বিশ্বব্যাপী আদৃত।