বৃষ্টির দেখা নেই। তবু বর্ষার গানে শুক্রবার সন্ধ্যায় ছায়ানট মিলনায়তনে শিল্পী সুস্মিতা দেবনাথ শুচির ‘খেয়ালে রাগ দেশ’ এর রাগালাপের মধ্য দিয়ে শুরু হলো কবি বেগম সুফিয়া কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত বর্ষার এই অনুষ্ঠান। যে আয়োজনে শিল্পীরা নৃত্য গীত আর আলাপনে মন ভেজাল দর্শক শ্রোতার।

বর্ষাকথন পর্ব নয়, তবে ছায়ানটের বর্ষাবরণের নানা ইতিহাস ও ছায়ানট প্রতিষ্ঠালগ্নে কবি সুফিয়া কামালের নানা উদ্যোগের কথা জানায় ছায়ানট। স্বাধীনতালগ্নে ও স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে কবি সুফিয়া কামালের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের কথা। শত প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়েও দৃঢ়চেতা এই নারী কিভাবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনকে বেগবান করেছিলেন সে কথাও।

এরপর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে সম্মেলক নৃত্যগীত ‘গহন ঘন ছাইল গগন ঘনাইয়া’ ও ‘রিম্ ঝিম্ রিম ঝিম্ ঝিম্ ঘন দেয়া বরষে’ পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা। এরপর ‘কখন বাদল-ছোঁওয়া লেগে’ একক গান পরিবেশন করেন দীপ্র নিশান্ত,‘আমার নিশীথ রাতের বাদলধারা’ গানটি গেয়ে শোনান ফারজানা আক্তার পপি, ‘আমার যাবার বেলায়’ গেয়ে শোনান আব্দুল ওয়াদুদ, ‘বঁধুয়া, নিদ নাহি আঁখি পাতে’ গেয়ে শোনান জান্নাত-এ-ফেরদৌসী লাকী। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুমনা বিশ্বাস। এরপর সম্মেলক গান ও ‘হৃদয়ে মন্দ্রিল ডমরু গুরুগুরু’ গানে একক নৃত্য পরিবেশন সুদেষ্ণা স্বয়ম্প্রভা।

‘অনেক কথা বলেছিলেম’ গানটি গেয়ে শোনান ইফ্ফাত আরা দেওয়ান, ‘সোনার হিন্দোলে কিশোর কিশোরী দোলে’ গেয়ে খায়রুল আনাম শাকিল, মাকসুদুর রহমান মোহিত খান গেয়ে শোনান ‘আজ বাদল ঝরে’, শামিমা পারভীন শিমু গেয়ে শোনান ‘রিম্ ঝিম্ রিম ঝিম্ বরষা এলো’, কানিজ হুসনা আহম্মদী গেয়ে শোনান ‘মেঘের ডমরু ঘন বাজে’, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস গাইলেন ‘আষাঢ় মাইসা ভাসা পানিরে’। এরপর ‘গুরু গুরু গুরু গুরু ঘন মেঘ গরজে’ ও ‘আজি ঝরঝর মুখর বাদর-দিনে’ সম্মেলক নৃত্যগীত পরিবেশন করে ছায়ানটের শিল্পীরা। ‘আষাঢ় মাসের বৃষ্টিরে ঝমঝমাইয়া পড়েরে ওরে ভরা গাঙে নদীর স্রোতে’ সম্মেলক গান পরিবেশন করে ছায়ানট শিল্পীরা। সব শেষে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। চোখ বন্ধ করলে অনুভব হচ্ছিল যেন বৃষ্টি পড়ছে।