কোথায় পালালেন হারুন-বিপ্লব?
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০৬:২৭ পিএম
সরকার পতনের পর নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব থেকে দূরে থাকা অধিকাংশ পুলিশ সদস্য কাজে যোগ দিলেও নানাভাবে আলোচিত ডিবি হারুন, বিপ্লব কুমার সরকারের কোনো খোঁজ মিলছে না। দুজনেই নানা কারণে বিতর্কিত। বিশেষ করে ডিবি হারুন ভাতের হোটেল আর বিপ্লব কুমার বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদিনকে রাস্তায় মারধরের পরেই আলোচনায় আসেন।
সরকার পতনের ঠিক দুই দিন আগে হারুনকে গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস এবং বিপ্লব কুমার সরকারকে প্রশাসন ও গোয়েন্দা দক্ষিণের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর থেকে হারুন কিংবা বিল্পব কারোরেই সঠিক খোজ পাওয়া যায়নি।
ঢাকার পুলিশ কমিশনার মো. মাইনুল হাসানকে হারুন অর রশীদ ও বিপ্লব কুমার সরকারের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “তারা এখনো কাজে যোগ দেননি। আর তাদের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা।” ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
ইতোমধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে কয়েকটি মামলা হয়েছে ঢাকায়। তার মধ্যে কয়েকটি মামলায় হারুন ও বিপ্লবের নামও এসেছে আসামির তালিকায়। তারা কোথায় আছেন তাও জানাতে পারেননি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্য।
এরই মধ্যে হারুনের গাড়ির খোঁজে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার খিলক্ষেতে 'লেকসিটি কনকর্ড' আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। সেখান থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাস নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি একজনকে আটকও করা হয়েছে।
২০১১ সালের ৬ জুলাই বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে বিরোধী দলের চীফ হুইপ জয়নাল আবেদীন ফারুক সংসদ ভবনের সামনে পুলিশের পিটুনির শিকার হন।
সেসময় তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার হারুন অর রশীদ এবং অতিরিক্ত উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ওই ঘটনার নেতৃত্ব দেন।
জয়নাল আবেদন ফারুককে ধাওয়া করে জামা খুলে নেওয়ার একটি ভিডিও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হলে তা ভাইরাল হয়। এরপর থেকেই এ দুই পুলিশ
কর্মকর্তার প্রভাব পুলিশ বিভাগে ছড়িয়ে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জে ১১ মাসের দায়িত্বে সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ‘জিহাদ’ ঘোষণা করেন হারুন। তেমনি নারায়ণগঞ্জের অনেক প্রভাবশালীর সঙ্গে ‘টক্করে’ গিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দেন সাবেক এই ডিবি কমিশনার।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্ব পাওয়ার পর ডিবি অফিস পরিচিতি পায় ‘হারুনের ভাতের হোটেল’ হিসেবে।সবশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়কারীকে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলে ডিবি কার্যালয়ে কয়েকদিন আটকে রাখেন হারুন। তাদের অ্যাপায়ন করার একটি ছবি আবার আলোচনা তৈরি করে।
অন্যদিকে ২১তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে চাকরি নেওয়া বিপ্লব সরকার ছিলেন ছাত্রলীগ জগন্নাথ হল শাখার সেক্রেটারি। পুলিশের চাকরিতে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় পুরোটা সময় তিনি দাপুটে কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।