চীনের হুমকি মোকাবিলা
ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্রজোট গড়ে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
চীনের হুমকি মোকাবিলায় ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্রদের নিয়ে একটি জোট গড়ে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র। তাইওয়ানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক। তিনি বলেছেন, তাইওয়ানই চীনের একমাত্র লক্ষ্য নয় বরং পুরো অঞ্চলের স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে বেইজিং। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী হলেও দেশটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্পর্ক নেই যুক্তরাষ্ট্রের। এদিকে সা¤প্রতিক বছরগুলোয় চীন তাইওয়ানের ওপর সামরিক এবং রাজনৈতিক চাপ বাড়িয়েছে- যা তাইপের গণতান্ত্রিক সরকারকে বেইজিংয়ের সার্বভৌমত্বের দাবির অধীনে আনার লক্ষ্যে করা হচ্ছে। গত মে মাসে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তের অভিষেকের পর চীন সেখানে সামরিক মহড়া চালায়। বেইজিং লাই চিং-তেকে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী হিসেবে দেখে।
গত বুধবার তাইপেতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাইওয়ানে যুক্তরাষ্ট্রের ডি ফ্যাক্টো রাষ্ট্রদূত এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট ইন তাইওয়ানের (এআইটি) নতুন পরিচালক রেমন্ড গ্রিন বলেন, চীনের এই প্রচেষ্টা শুধু তাইওয়ানকে নয়, বরং অন্যান্য দেশকেও ভয়ভীতি ও জোর-জবরদস্তি করে স্থিতাবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্য করা হচ্ছে। ফলে, আরো বেশি দেশ নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করার জন্য একত্রিত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মিত্রদের নিয়ে একটি কাজ করছে- যা আমাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
চীন কখনো তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণে আনতে বলপ্রয়োগের বিষয়টি বাতিল করেনি। এদিকে তাইওয়ান সরকার চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে নিজেদের রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছে।
রেমন্ড গ্রিন জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সঙ্গে যৌথভাবে অস্ত্র উৎপাদনের সম্ভাবনাকে বাতিল করছে না। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা চাহিদাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন বেশ কিছু অংশীদারের সঙ্গে যৌথভাবে সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে এবং আমি তাইওয়ানকে ভবিষ্যতে সেই অংশীদারদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার সম্ভাবনাকে বাতিল করছি না। তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
গ্রিন বলেন, এই প্রচেষ্টা তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগ এবং তাদের প্রশংসনীয় সামরিক সংস্কারগুলো যুদ্ধ প্রতিরোধের জন্য করা হয়েছে, যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য নয়। তাইওয়ান প্রণালি ও বৃহত্তর ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রাখা উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সহায়তা করবে।
গ্রিন জুলাই মাসে তার দায়িত্ব নিয়েছেন। এর আগে তিনি টোকিওতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে ডেপুটি চিফ অব মিশন হিসেবে কাজ করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের সঙ্গে জরুরি পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছে- যা প্রেসিডেন্ট লাই-এর সরকারের আরেকটি শীর্ষ অগ্রাধিকার। এর মধ্যে যোগাযোগ, সাইবার নিরাপত্তা এবং জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে দ্বীপটির স্থিতিস্থাপকতা শক্তিশালী করা অন্তর্ভুক্ত। গ্রিন বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে সম্ভাব্য মানবসৃষ্ট হুমকি মোকাবিলায় তাইওয়ান নিজের দক্ষতা প্রয়োগে সহায়তা করার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি।