অনন্ত-রাধিকার বিয়েতে কেমন সাজলেন গোটা আম্বানী পরিবার?
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১০:২৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের ধনকুবের মুকেশ আম্বানীর কনিষ্ঠ ছেলে অনন্তের বিবাহ উৎসব চলছে প্রায় বছর জুড়ে। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সাতপাকে বাঁধা পড়েছেন দুজনে। গত শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে জীবনের নতুন অধ্যায়ের যাত্রা শুরু করেন অনন্ত-রাধিকা। আম্বানীদের বাসভবন অ্যান্টিলিয়া থেকে ঢাক-ঢোল, বাদ্যি বাজিয়ে বিয়ে করতে বের হয়ে জিয়ো ওয়ার্ল্ড কনভেনশন সেন্টারে যান অনন্ত। সেখানেই বধূবেশে অপেক্ষায় ছিলেন রাধিকা।
আম্বানী বাড়ির বিয়ে বলে কথা! সেই উপলক্ষে জিয়ো ওয়ার্ল্ড কনভেনশন সেন্টারে যে চাঁদের হাট বসবে, সে কথা অজানা নয়। তবে, উৎসবের মূল আকর্ষণ তো বিয়ে। তাই সে দিন কে কেমন সেজেছেন, তা নিয়ে কম-বেশি সবারই কৌতূহল রয়েছে।
বিয়ে উপলক্ষে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্র থেকে অতিথিদের সমাগম হয়েছিল। হলিউড থেকে বলিউড, ক্রীড়াজগৎ থেকে ব্যবসা, রাজনীতি থেকে শিল্প— নিমন্ত্রিতদের তালিকায় ছিলেন সব ক্ষেত্রেরই খ্যাতনামীরা।
অতিথিদের সাজ কেমন হবে তা নিয়ে যেমন সবার কৌতূহল রয়েছে, তেমনই আম্বানী পরিবারের সদস্যেরা কেমন সেজেছেন, তা নিয়েও কৌতূহলের শেষ নেই। আম্বানী পরিবারের যে অনুষ্ঠানই হোক না কেন, নীতা আম্বানী সবার মধ্যে থেকে আলাদা করে নজর ছিনিয়ে নেন।
তবে আম্বানী পরিবারে আরো অনেক সদস্যই তো রয়েছেন। জ্যেষ্ঠপুত্র আকাশ, তার স্ত্রী শ্লোকা, কন্যা ঈশা, জামাই আনন্দ এবং স্বামী মুকেশ রয়েছেন সেই তালিকায়। রয়েছে নাতি-নাতনিরাও। বাকীরা কে কেমন সেজেছেন, তা নিয়েও কৌতূহলের শেষ নেই।
মুকেশ এবং অনিল আম্বানীর মা কোকিলাবেন। সম্পর্কে অনন্তের ঠাকুমা। নাতির বিয়ে বলে কথা! সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন নবতিপর কোকিলাবেন। বিয়ের দু’দিন আগে আম্বানী-আবাস 'অ্যান্টিলিয়া'য় বিশেষ একটি পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল।
তখনই পাপারাৎজির ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল তার ছবি। লাল-সাদা জর্জেট শাড়ির সঙ্গে মানানসই ব্লাউজ ছিল তার পরনে। শাড়ির পাড় জুড়ে মণিমুক্তো। গলায় হিরের হার, কানে হিরের দুল। সঙ্গে দু’হাতে মানানসই হিরে বসানো চুড়ি।
আরো পড়ুন: অনন্ত-রাধিকার বিয়েতে বচ্চন পরিবারের সঙ্গে নেই ঐশ্বরিয়া-আরাধ্যা
কনিষ্ঠ পুত্র অনন্তের বিয়েতে রিলায়্যান্স-কর্তা মুকেশ ধরা দিলেন বরকর্তার সাজে। প্যাস্টেল গোলাপি রঙের গলাবন্ধ সিল্কের শেরওয়ানির সঙ্গে সাদা পাজামা ছিল তার পরনে। পায়ে কালো রঙের বুট জুতো।
শেরওয়ানির বাঁ দিকে ছিল লাল রঙের সিল্কের ‘পকেট স্কোয়্যার’। ডান দিকে একটি হাতির প্রতিরূপ আঁকা ব্রোচ। ব্রোচটি অনন্তের হাতে তৈরি হাতিদের পুনর্বাসন কেন্দ্র ‘ভানতারা’র প্রচারের একটি অঙ্গ বলে ধরে নেয়া যেতেই পারে।
কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত আম্বানীর বিয়ে। ছেলের বিয়েতে নীতা কেমন সাজবেন, তা নিয়ে ফ্যাশন জগৎ থেকে সাধারণ মানুষ, সবারই জল্পনা ছিল তুঙ্গে। পোশাকশিল্পী আবু জানি এবং সন্দীপ খোসলার নকশা করা ‘রঙ্কত’ লেহেঙ্গা পরেছিলেন নীতা। লেহেঙ্গা জুড়ে ছিল সবুজ, গোলাপি এবং সোনালি আভা।
সঙ্গে ছিল মানানসই হিরের গয়না। কানে হীরের ঝুমকো। গলায় হীরের লহরি হার। মধ্যে রয়েছে হলুদ পোখরাজ। সিঁথির মধ্যে মাঙ্গটিকা। বাহুতে হীরে বসানো চুড়ি এবং আঙুলে তেমনই আংটি।
পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে যত বিরোধ থাকুক না কেন, পারিবারিক অনুষ্ঠানে সেই ছাপ পড়তে দিলেন না আম্বানীরা। ভাইপো অনন্তের বিয়েতে গোটা পরিবারের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন মুকেশের ভাই অনিল আম্বানীও।
বড় ভাইয়ের মতো গলাবন্ধ ঘিয়ে রঙের সিল্কের শেরওয়ানি পরে ভাইপো অনন্তের বিয়েতে হাজির হয়েছিলেন অনিল। এক পাশে বাবা মুকেশ এবং অন্য পাশে কাকা অনিলকে নিয়ে বিয়ের মণ্ডপে হেঁটে আসতে দেখা গিয়েছিল অনন্তকে। গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে অনিল পরেছিলেন হলুদ রঙের সিল্কের পাঞ্জাবি-পাজামা।
অনন্তের বিয়েতে অতিথিদের আপ্যায়ন করতে দেখা গিয়েছিল অনিলের স্ত্রী টিনাকেও। তার পরনে ছিল জমকালো সিল্কের শাড়ি।
দু’দিন আগে অ্যান্টিলিয়ায় যে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে উপস্থিত ছিলেন অনিলের স্ত্রী টিনা। একেবারে সাধারণ উজ্জ্বল নীল রঙের সালোয়ার স্যুট ছিল টিনার পরনে। সঙ্গে মানানসই রুপোলি ব্রোকেডের ওড়না। হাতে পুঁটলি ব্যাগ।
ভাইয়ের বিয়েতে আকাশ সেজেছিলেন প্যাস্টেল কমলা এবং রুপোলির মিশেলে বানানো শেরওয়ানিতে। পাজামা ছিল ধবধবে সাদা রঙের। পায়ে ছিল সাদা রঙের স্নিকার্স।
আরো পড়ুন: কোটি টাকা খরচ করে বিয়ে করেছেন যারা
দেবরের বিয়েতে শ্লোকা পরেছিলেন লাল-গোলাপির মিশেলে তৈরি, জারদৌসি কাজ করা লেহেঙ্গা। যে লেহেঙ্গা পরে তার বিয়ে হয়েছিল আকাশ আম্বানীর সঙ্গে, সেটির রং ছিল লাল। সেই পোশাকটিকেই আবার নতুন করে সাজিয়ে তুলেছেন পোশাকশিল্পী আবু জানি এবং সন্দীপ খোসলা।
জমকালো লেহেঙ্গার সঙ্গে খুব ভারী গয়না দেখতে ভাল লাগে না। তাই শ্লোকাও সেই সূত্র মেনে গলায় হালকা হিরে এবং পান্নাখচিত হার, কানে ঝোলা দুল, মাঙ্গটিকা পরেছিলেন। কোমরে ছিল হীরের কোমরবিছে।
ননদিনী ঈশা আম্বানী পিরামল ভাইয়ের বিয়েতে পরেছিলেন প্যাস্টেল শেডের গোলাপি, হলুদ এবং কমলা রঙের মিশেলে তৈরি লেহেঙ্গা। সেই পোশাকের উপরে ছিল সোনালি জরি দিয়ে ঠাসা জারদৌসি কাজ।
পোশাকশিল্পী আবু জানি এবং সন্দীপ খোসলার নকশা করা লেহেঙ্গার সঙ্গে ছিল গলা ভরাট হীরের নেকলেস, কানে মানানসই দুল, চুড়ি, আংটি এবং মাঙ্গটিকা। হালকা মেকআপ, চোখে ঘন কাজল, ঠোঁটে ন্যুড লিপস্টিক এবং ভুরুর মধ্যে ছোট্ট টিপ। ব্যস, এই সাজেই হাজার হাজার লোকের মধ্যে সবার নজর কেড়েছিলেন তিনি।
ঈশার স্বামী, আম্বানী বাড়ির জামাই আনন্দ পিরামলের পরনে ছিল হালকা গোলাপি রঙের সিল্কের কুর্তা-পাজামা। তার উপর রুপোলি জরির কাজ করা গলাবন্ধ জ্যাকেটও পরেছিলেন তিনি।
অনন্তের নানী অর্থাৎ নীতা আম্বানীর মা পূর্ণিমা দালালকেও দেখা গিয়েছিল ছোট নাতির বিয়েতে। প্যাস্টেল গোলাপি এবং কমলা রঙের মিশেলে তৈরি সিল্কের শাড়ি পরে নাতির বিয়েতে এসেছিলেন তিনি। শাড়ির পাড় জুড়ে ছিল ঠাসবুনোট সোনালি রঙের জরির কাজ। তার সাজেও ছিল হীরের দ্যুতি।
অনন্তের খালা মমতা দালাল। মিষ্টি গোলাপি রঙের শাড়িতে তাকেও মানিয়েছিল বেশ। জর্জেট বা ক্রেপ জাতীয় শাড়িটির পাড় জুড়ে ছিল রুপোলি জারদৌসি কাজ। হিরে এবং পান্নাখচিত গয়নায় মমতার সাজেও ধরা পড়ছিল পরিবারের বৈভব।