গাজায় যুদ্ধবিরতি
হামাসের সঙ্গে আলোচনায় রাজি নেতানিয়াহু
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৩ এএম
ছবি: সংগৃহীত
হামাসের সঙ্গে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি বিষয়ক আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে এবারের আলোচনায় তিনি মন্ত্রিসভার কোনো সদস্যকে চান না। আলোচনায় ইসরায়েলের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে নেতানিয়াহুর কথা হয়েছে। বাইডেনকে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা করতে চান। এজন্য একটি নতুন প্রতিনিধি দল গঠনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, নেতানিয়াহু চাইছেন—এবারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন মোসাদের কর্মকর্তারা।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া কাতারে একটি ইসরায়েলি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। যারা কয়েক মাস ধরে হামাসকে আলোচনার টেবিলে আনার চেষ্টা করেছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) দোহায় পৌঁছাবেন ও কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল থানির সঙ্গে দেখা করবেন।
আরো পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ আরো ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত
আলোচনার বিষয়টি স্পর্শকাতর হওয়ায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলেছে, গাজায় যুদ্ধ দলগুলোকে একটি চুক্তির কাছাকাছি নিয়ে আসার লক্ষ্যে আলোচনার জন্য তিনি কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, জো বাইডেন নেতানিয়াহুর সঙ্গে টেলিফোন কথোপকথনে একটি প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন।
ইসরায়েল বিশ্বাস করে, গাজায় কয়েক ডজন জিম্মি এখনো জীবিত রয়েছে। যুদ্ধের ফলে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানবিক ক্ষতি ক্রমেই বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষই একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আন্তর্জাতিক চাপের মুখোমুখি হচ্ছে।
এদিকে, বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছিলেন নেতানিয়াহু। সেই বৈঠকে হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পুর্নবিবেচনা করা যায় কি না— সে সংক্রান্ত আলোচনাও হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসর। কাতারের মাধ্যমে গত মার্চে ইসরায়েলের কাছে যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলো হামাস।
আরো পড়ুন: যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় স্থান পেলেন যারা
যুদ্ধবিরতির সেই প্রস্তাবে বলা হয়েছিলো, ইসরায়েল যদি গাজা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে নিজেদের হাতে থাকা অবশিষ্ট ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এই জিম্মিদের ধরে এনেছিলো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী যোদ্ধারা।
শুরুর দিকে হামাসের প্রস্তাবকে পাত্তা না দিয়ে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, গাজায় অভিযানরত ইসরায়েলি বাহিনীর মূল লক্ষ্য হামাসকে পুরোপুরি ভেঙে ফেলা এবং এই প্রস্তাব সেই লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
তবে সম্প্রতি হামাসের সেই প্রস্তাব নিয়ে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠেছেন নেতানিয়াহু। রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মুহূর্তে নেতানিয়াহুর সামনে বড় চ্যালেঞ্জ উপস্থিত হয়েছে। সেই চ্যালেঞ্জের নাম হিজবুল্লা।
লেবাননভিত্তিক এই গোষ্ঠীটির সঙ্গে সম্প্রতি তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে ইসরায়েলি বাহিনীর। কারণ হিজবুল্লাহর সঙ্গে যদি ইসরায়েল যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে তাহলে সেই যুদ্ধ পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আর গাজায় অভিযানরত ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এখন এত বড় একটি যুদ্ধ চালানোর মতো সক্ষমতা নেই।
সূত্র : এএফপি