রাশিয়া
ইউক্রেনের সব পশ্চিমা অস্ত্র ধ্বংস করবো
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান নিয়ে ইসরায়েলকে হুমকি দিয়েছে রাশিয়া। পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য যেসব অস্ত্র দেবে- সব ধ্বংস করে দেবে বলেও রাশিয়া হুশিয়ারি দিয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেনজিয়া এই হুশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল যদি সতিই ইউক্রেনকে এই সমরাস্ত্র প্রদান করে, তাহলে গুরুতর পরিণতি ভোগ করতে হবে বিশ্বের একমাত্র এই ইহুদি রাষ্ট্রকে।
ইসরায়েল থেকে ইউক্রেনে প্রেট্রিয়ট পাঠানোর খবরে সাংবাদিকরা রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওই রুশ কূটনীতিক বলেন, আমরা সবাইকে ইউক্রেনে অস্ত্র না পাঠাতে অনুরোধ করবো।
৩০ বছরেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আটটি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সিস্টেম কিনেছিলো ইসরায়েল। এই সিস্টেমগুলোর সবই এম ৯০১ পিএসি-২ ব্যাটারি মডেলের। গত এপ্রিল মাসে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয় যে পুরোনো হয়ে যাওয়ায় এই সমরাস্ত্রগুলো আর ব্যবহার করবে না দেশটির সেনাবাহিনী। এগুলোর স্থানে আনা হবে নতুন আধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পর এই প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা সিস্টেমগুলো ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাবাহিনীকে প্রদানের জন্য অনুরোধ জানায় কিয়েভ। এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউক্রেনের মধ্যে সম্প্রতি কয়েক দফা আলোচনাও হয়েছে।
জুন মাসে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সভাপতিত্ব করে রাশিয়া। সভাপতির দায়িত্ব পালন শেষে জাতিসংঘে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভেসিলি নেবেনজিয়া।
আরো পড়ুন: ট্রাম্পকে দায়মুক্তির রায় আইনের ‘ভয়াবহ নজির’
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, আমি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে একদিনে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে দেবো, এ বিষয়টি নিয়েও সাংবাদিকরা রুশ কূটনীতিকের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এ সময় ভেসিলি নেবেনজিয়া বলেন, এসব তার ফালতু কথা, ইউক্রেন সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা করো পক্ষে সম্ভব না।
তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ১৪ জুন ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন- সেটাই একমাত্র সমাধানের পথ।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ সেনাবাহিনী, যা এখনো চলছে। এই অভিযানের শুরু থেকে ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্ররা। পাশাপাশি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারিসহ রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ঘনিষ্ট মিত্র ইসরায়েল এই ইস্যুতে এ পর্যন্ত প্রকাশ্যে কোনো পক্ষ অবলম্বনের ঘোষণা দেয়নি, রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি।
এ পর্যন্ত ইউক্রেনে কয়েক দফা সহায়তা পাঠিয়েছে ইসরায়েল, তবে সেসব সহায়তার সবই ছিলো খাদ্য, চিকিৎসা ও অন্যান্য মানবিক ত্রাণ। গত বছর ইসরায়েলের কাছে আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চেয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি, তবে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
উল্লেখ্য, পুতিন গত ১৪ জুন ঘোষণা দেন যে ইউক্রেন যদি রাশিয়ার অধিকৃত দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করা বিশেষ সামরিক অভিযান বন্ধ করবে রাশিয়া।