×

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক নিয়ে মোদিকে কড়া ভাষায় চিঠি মমতার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৮:৫৮ পিএম

বাংলাদেশ-ভারত বৈঠক নিয়ে মোদিকে কড়া ভাষায় চিঠি মমতার

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যকার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং কিছু ঘোষণাও এসেছে। সেখানে তিস্তা-গঙ্গার পানি বণ্টনসহ পশ্চিমবঙ্গ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হলেও ডাক পাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে কড়া ভাষায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি।

চিঠিতে মমতা লেখেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরের পরিপ্রেক্ষিতে আমি এই চিঠি লিখছি। মনে হচ্ছে, এই গুরুত্বপূর্ণ সফরে তিস্তা ও গঙ্গা পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পরামর্শ ও মতামত ছাড়া এ ধরনের একতরফা আলোচনা গ্রহণযোগ্য বা কাম্য নয়। 

তিনি আরও লিখেছেন, রাজ্যের ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। আমি বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসি ও শ্রদ্ধা করি এবং সর্বদা তাদের মঙ্গল কামনা করি। পশ্চিমবঙ্গ অতীতে বিভিন্ন বিষয়ে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করেছে। বাংলাদেশ-ভারত ছিট মহল বিনিময়ের চুক্তি, ইন্দ্রো-বাংলাদেশ রেলওয়ে লাইন ছাড়াও বাস পরিষেবাগুলো এই অঞ্চলে অর্থনীতির উন্নতির মাইলফলক। 

পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, পানি খুবই মূল্যবান এবং মানুষের জীবন রেখা। আমরা এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে আপস করতে পারি না, যা জনগণের ওপর মারাত্মক এবং বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ ধরনের চুক্তির প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমি বুঝতে পেরেছি ভারত সরকার, ভারত-বাংলাদেশ ফারাক্কা চুক্তি নবীকরণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। যার মেয়াদ ২০২৬ সালে শেষ হবে। এটি একটি চুক্তি যা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে জল বণ্টনের নীতিগুলি বর্ণনা করে। 

এরপর সেই চিঠিতে মোদির উদ্দেশে মমতা লেখেন, আপনি জানেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের জীবন-জীবিকা বজায় রাখার জন্য নদীর পানি একটি বিশাল প্রভাব রয়েছে। ফারাক্কা ব্যারেজে পানি সরানো হয় তা কলকাতার বন্দরের নাব্যতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। আমি আপনার নজরে আনতে চাই, ভারত ও বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের নদীর রূপতত্ত্ব পরিবর্তিত হয়েছে, যা পশ্চিমবঙ্গকে বঞ্চিত করেছে এবং রাজ্যের পানির প্রাপ্যতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে। গত ২০০ বছরে গঙ্গার (বাংলাদেশের পদ্মা) পূর্বমুখী স্থানান্তর ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি নদীর সঙ্গে তাঁদের সংযোগ বিঘ্নিত করেছে। 

উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, জলঙ্গি ও মাথাভাঙ্গা নদী পদ্মা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ফারাক্কা ব্যারেজের নির্মাণের পরে নদীর রূপচর্চার সম্ভাব্য পরিবর্তন ঘটে। ফলে নদী ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে এবং ব্যারেজের এলাকাগুলো স্কুল, হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিদ্যুৎ লাইনের মতো সরকারি পরিকাঠামোসহ জীবন ও সম্পদের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে এবং তাদের জীবিকা হারাচ্ছে। সিকিমে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ, উচ্চ জলাভূমিতে বনাঞ্চল উজাড় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে তিস্তা নদীর স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

মমতা লেখেন, এই বিষয়গুলো নিয়ে আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কয়েকবার লিখেছি। পরিশেষে আমি আপনাকে আমার দৃঢ় সংকল্প জানাচ্ছি, তিস্তার পানি বণ্টন এবং ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা করা উচিত নয়। আমি আশা করি আপনি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের প্রয়োজনীয়তা এবং প্রত্যাশাকে উপলব্ধি করবেন। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। 

তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসা মোদি সরকারের প্রথম লোকসভা অধিবেশন সোমবার (২৪ জুন) শুরু হয়। অধিবেশন শুরুর আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা তিস্তা ও ফারাক্কা চুক্তি নিয়ে সংসদের বাইরে সরব হয়েছিলেন। গত শুক্রবার ভারত সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে নতুন ৭টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এছাড়া তিনটি নবায়নকৃত সমঝোতা স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়। সফরে ১০টি ঘোষণাও এসেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩৫ ফিলিস্তিনি নিহত

শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার

শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার

১৬ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

১৬ সেপ্টেম্বর: সারাদিন যা যা ঘটলো

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন গ্রেপ্তার

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App