এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নেমেছেন মার্কিনীরা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
চলমান ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিনদিন বাড়ছে। আজ ( ২৪ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছে সহস্রাধিক বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভে অনেক সাধারণ ইহুদিও অংশগ্রহণ করেছে, কারণ তারা চান গাজায় সহিংসতা বন্ধ হোক।
ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে গণ গ্রেফতার চালানো হয়েছে। ফলে অসন্তোস আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়- প্যালেস্টাইন পন্থী বিক্ষোভকারীরা গত কয়েকমাস ধরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। আন্দোলনকারীরা বাইডেনকে স্বঘোষিত জায়নবাদী বলে অভিহিত করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একেকটি বিক্ষোভ শিবিরে পরিণত হয়েছে। বিক্ষোভে মুসলিম, ইহুদি, খৃষ্টান ধর্মসহ অন্যান্য ধর্মের ছাত্র-ছাত্রীরা আকর্ষিত হচ্ছে এবং অংশগ্রহণ করছে। একই সঙ্গে সেখানে আন্তঃধর্মীয় প্রার্থনা ও সঙ্গীত পরিবেশন করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার ব্রুকলিনের রাস্তার সহস্রাধিক লোক বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশ তাদেরকে বাধা প্রদান করে। এক পর্যায়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের গতিরোধ করে এবং তাদেরকে বিক্ষোভে বাধা দেয়।
কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের পক্ষ থেকে পুলিশের এমন ব্যবহারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। তাদের মতে এর মাধ্যমে পুলিশ একাডেমিক স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে।
কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক আফাফ নাশের এক বিবৃতিতে বলেন- ‘ইসরায়েল অব্যাহতভাবে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীরা এ তাণ্ডবের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে আন্দোলন করছে। কিন্তু শান্তিপূর্ণ এ আন্দোলন দমন করতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করছে ইহুদিরা।
মার্কিন কংগ্রেসের রিপাবলিকান সদস্যসহ আরো অনেকে ইতোমধ্যে বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ইহুদি বিরোধীতা ও হয়রানির অভিযোগ। আমেরিকান সিভিল লেবার ইউনিয়নসহ নাগরিক অধিকারের আইনজীবীরা বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বাক স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ফিলিস্তিনিপন্থী এবং ইসরায়েলপন্থী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছে। বিশেষত কলম্বিয়ার আশেপাশের পাবলিক রাস্তায়। মঙ্গলবার কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের নেতৃত্ব বাইডেনকে ইহুদি শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য আরো কিছু করার আহ্বান জানানো হয়।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন প্রতিবাদকারী রয়টার্সকে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ে বাইরে থেকে দুর্বৃত্তরা আমাদের আন্দোলনকে দমানোর চেষ্টা করছে। গাজায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ই এখন আর অবশিষ্ট নেই। তাই আমরা ফিলিস্তিনিদের জন্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় উন্মুক্তের দাবি জানাচ্ছি। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনের সময় সোফ আসকারসে নামের এক ইহুদি ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। একই সঙ্গে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বরখাস্তও করা হয়। সেমিটিজম, ইসলামোফোবিয়া, এবং বর্ণবাদ এখানে প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে ফিলিস্তিনি ও আরবদের বিরুদ্ধে এটি সবচাইতে বেশি।
রয়টার্সের সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থী তাদের আন্দোলন ও মানবাধিকারের পক্ষে দাঁড়ানোর অধিকার রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দোষারোপ করেছে।
মাহমুদ খলিল নামের একজন ফিলিস্তিনি ছাত্র বলেন- ‘একজন ফিলিস্তিনি ছাত্র হিসেবে আমি গত কয়েক মাস ধরে নিরাপদ বোধ করছি না। বিশ্ববিদ্যালয় একতরফাভাবে বিবৃতি দিচ্ছে এবং মানবাধিকারের ব্যপারে বারবার নিষ্ক্রিয়তা দেখাচ্ছে।
নিউইয়র্ক পুলিশ সোমবার নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে এবং গত সপ্তাহে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। কলম্বিয়া উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য সোমবার ম্যানহাটন ক্যাম্পাসের সকল ক্লাস বাতিল করা হয়েছে।