×

আন্তর্জাতিক

ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধ বাঁধলে জড়াতে পারে যারা, পরিনতি কী হবে?

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৫ এএম

ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধ বাঁধলে জড়াতে পারে যারা, পরিনতি কী হবে?

ছবি: সংগৃহীত

এমনিতেই ইসরায়েলের গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে গোটা মধ্যপ্রাচ্য উত্তাল। একটা শান্তি প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে এর একটা রফা হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিলো। কিন্তু ইসরায়েলের নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর গোঁয়ার্তুমি এবং অতি অবশ্যই নাগরিকদের কাছ থেকে নিজের পিঠ বাঁচাতে তিনি থেকে থেকে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছেন। যুদ্ধ যত দিন চলবে, নেতানিয়াহুর দুর্নীতি ও সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা তত দিন চাপা থাকবে। যে কারণে গাজা যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েল ইরানকে কোনো না কোনোভাবে টেনে আনতে চেয়েছে। ইরানও ছায়াযুদ্ধ বন্ধ করেনি। একদিকে হুতি, অন্যদিকে হিজবুল্লাহ মিলিয়ে ইসরায়েলও এর পশ্চিমা মিত্রদের নানাভাবে যন্ত্রণা দেয়া হয়েছে, যার অভিযোগ বরাবরই ইরানের দিকে লক্ষ্য করে ছুটে গেছে। যদিও ইরান শুরু থেকেই এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু এখন ইসরায়েল সত্যের মুখোমুখি দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে।

১৩ এপ্রিল ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ইরান যে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে, তা ছিলো গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলের করা হামলায় ইরানের শীর্ষ এক জেনারেলসহ সাতজন নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়া। সে সময়ই ইরানের শীর্ষ নেতা আলী খামেনি বলেছিলেন, ‘জায়নবাদী ইসরায়েলকে শাস্তি দেয়া হবে।’

হামলার আগে একই দিন ইরান হরমুজ প্রণালি থেকে একটি জাহাজকে আটক করে, যাকে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত বলে দাবি করে। যদিও সে সময় অনুমানও করা যায়নি যে, ইরান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মধ্য দিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া এভাবে জানান দিতে পারে। এই প্রতিক্রিয়া নিঃসন্দেহে অনেক বড়। এরই মধ্যে এ নিয়ে গোটা বিশ্বের নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

উদ্বিগ্ন বিশ্বনেতাদের মধ্যে অবশ্য পশ্চিমা নেতাদেরই বিবৃতি বেশি সামনে এসেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, কানাডা, ফ্রান্স—পশ্চিমা সব নেতাই ইসরায়েলের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন। যদিও সবাই এক বাক্যে একটি কথা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে, এর মধ্য দিয়ে গোটা অঞ্চল এক ভীষণ অস্থিতিশীলতা-উত্তেজনার মধ্যে ঢুকে পড়ল। একটি বড় যুদ্ধের শঙ্কা সবার বক্তব্যেই প্রকট। শুধু চীন, সৌদি আরব ও কাতারের মতো কয়েকটি দেশ ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছে। তারা উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।

ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র বা ড্রোন হামলা ইসরায়েলে আঘাত করার আগে আকাশেই নিষ্ক্রিয় করে দেয়া হয়েছে বলে দাবি আছে। ইসরায়েলের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট জানাচ্ছে, ইরান ১৩ এপ্রিল অন্তত ১০টি ড্রোন পাঠিয়েছিলো ইসরায়েলের উদ্দেশে। সম্ভবত ড্রোনগুলো ছিলো ‘শাহেদ’, যা প্রায় ৫০ কেজি বিস্ফোরক বহনে সক্ষম। এগুলো সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে পারে। ফলে ইসরায়েলে পৌঁছাতে এসব ড্রোনের কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে, যা এ ধরনের হামলার ক্ষেত্রে একটি লম্বা সময়। এই সময় এবং ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা—দুই মিলে এ হামলা সফল হওয়া কঠিন।

এদিকে স্বাভাবিকভাবেই ইরানের অন্যতম শক্তি হিসেবে হাজির ইয়েমেনের হুতি ও লেবাননের হিজবুল্লাহরা। ইরান চাইবে, তেমন পরিস্থিতি তৈরি হলে এই দুই গোষ্ঠীও তাদের হাতে থাকা ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলকে উদ্দেশ্য করে ছুড়ুক। এতে ইসরায়েলের ক্ষয়ক্ষতি যা–ই হোক না কেন, পুরো অঞ্চলে একটা ভীতি ছড়াবে নিশ্চয়। পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। বিশেষত ইরাক, জর্ডানের কথা বলা যায়, যারা এরই মধ্যে তাদের আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে। কুয়েত বিকল্প রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে।

এদিকে ইসরায়েলের লক্ষ্য এখন একটিই—ইরানের ছোড়া ড্রোনগুলোর মধ্যে যত বেশিসংখ্যককে তারা ভূপাতিত করতে পারে, করবে। তাদের হাতে সময় আছে। জর্ডান তার আকাশপথে ড্রোন দেখামাত্রই ভূপাতিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছে। এরই মধ্যে তারা সেই প্রতিশ্রুতি রেখেছে বলেই মনে হচ্ছে। ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে আমেরিকা এরই মধ্যে হুঙ্কার দিয়ে রেখেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের জন্য ‘লৌহবর্ম’ হিসেবে কাজ করবেন বলে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে রেখেছেন। জি–সেভেন বৈঠকে এ অবস্থান থেকেই তিনি লড়বেন। বলা যায়, এতে তিনি অন্য সদস্যদের সম্মতিও হয়তো পেয়ে যাবেন। কারণ ব্রিটেনও প্রস্তুত ইসরায়েলের হয়ে লড়তে।

আরবরা কে কোন পক্ষে

এ অবস্থায় ইরানের সাথে তার সহায়তাপুষ্ট হুতি, হিজবুল্লাহ এবং যুদ্ধে ক্লান্ত হামাস ছাড়া তেমন কেউ নেই। প্রশ্ন আসতে পারে সৌদি আরব নিয়ে। দেশটি এখন পর্যন্ত কোনো নৌকায় পা দেয়নি। সৌদির অবস্থান বুঝতে হলে দেশটির সাথে ইরানের ঐতিহাসিক দ্বৈরথের কথা মাথায় রাখতে হবে। সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে ইসরায়েলের সাথে দেশটির সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়ার কথাও স্মরণে রাখতে হবে। পশ্চিমা ব্যবস্থাপত্র মোতাবেক এই চেষ্টা এতদিনে হয়তো সফল হয়ে যেতো, যদি না গাজা যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতো। সৌদির অবস্থানের অনুরূপ অবস্থান হবে নিশ্চিতভাবেই রিয়াদের বাকি তিন ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশরের। এই তিন দেশের সাথেই আবার আমেরিকা এবং সেই সূত্রে ইসরায়েলের সম্পর্ক ভালো। যদিও তা সব ক্ষেত্রে প্রকাশ্য নয়।

ইরান–ইসরায়েল সম্ভাব্য মুখোমুখি সমরে আরব দেশগুলোর কে কোন দিকে থাকবে, তা বুঝতে হলে ২০১৭ সালে আরব অঞ্চলে শুরু হওয়া স্নায়ুযুদ্ধকে বুঝতে হবে। সে সময় সৌদি আরবের নেতৃত্বে বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিশর কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে। এর মূলে ছিল ২০১১ সালে আরব অঞ্চলে শুরু হওয়া নয়া ঢেউ—আরব বসন্ত। সৌদি আরবের অভিযোগ ছিল—কাতার ও কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা এই আরব বসন্তকে শুধু সমর্থনই নয়, আগুনে ঘি ঢালার কাজটিও করেছে। এর সাথে যুক্ত ছিল অতি অবশ্যই আমেরিকা। কারণ, কাতার নিয়ে ওয়াশিংটনের অনুযোগ ছিল—দেশটি একই সঙ্গে এফ–১৫ এবং এস–৪ ব্যবহার করছে, যেখানে এফ–১৫ আমেরিকার অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান আর, এস–৪ রাশিয়ার অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ফলে অস্ত্র ও প্রতিরক্ষার হিসাবটি চলে আসে সামনে। মার্কিন আপত্তি সত্ত্বেও কাতার এ দুটি একসঙ্গে ব্যবহারের পথ থেকে ফিরে আসেনি। যদিও মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় বিমানঘাঁটিটি ছিল কাতারেই।

অন্যদিকে রয়েছে সিরিয়া। সিরিয়ায় আরব বসন্তের সময় বাশার আল আসাদ সরকারকে উৎখাতে সর্বস্ব নিয়োগ করেছিল পশ্চিমারা। সে সময় আসাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল বলে ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমেরিকার। সেই দৃশ্যে রাশিয়া হাজির হয়ে সমীকরণ ওলট–পালট করে দিয়েছিল।

আজকের মিশর, বাহরাইন বা ইউএই কিংবা সৌদি আরব অনুমিতভাবেই ইরানের পক্ষে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে না। গোত্র প্রশ্নে ইরাকের পাশে থাকার সম্ভাবনা থাকলেও তার সে সামর্থ্য অনেক আগেই সে হারিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের কথা উঠতে পারে। হ্যাঁ, সেখানে হয়তো চীন বা রাশিয়াকে পাশে পাবে ইরান। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধে শক্তিক্ষয় করা রাশিয়া এবং করোনা ও বাণিজ্য যুদ্ধে অর্থনৈতিক সংকটে পড়া চীন নতুন কোনো যুদ্ধে দূর থেকেও জড়াতে না চাওয়াটাই স্বাভাবিক।

দুই দেশের সরকার ও মানুষ কী চায়

১৩ এপ্রিল করা ইরানের হামলা অনেকগুলো জটিল সমীকরণকে সামনে এনে হাজির করেছে। যে সমীকরণকে আরও জটিল করে তুলতে পারে ইসরায়েলের যেকোনো ধরনের সামরিক প্রত্যুত্তর। কারণ, ইরান বলেছে, তারা নিয়ম মেনেই আক্রান্ত হওয়ার পর এই হামলার মধ্য দিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ফলে বিষয়টি উত্তেজনার পারদ ওপরে তুললেও ইসরায়েল বা আমেরিকা কোনো ভুল পদক্ষেপ না নিলে বিষয়টি এখানেই থেমে যেতে পারে। ইরানের তরফ থেকে হয়তো এর পর আর কোনো পদক্ষেপ নাও আসতে পারে। তারা পুরোনো ছায়াযুদ্ধের কৌশলেই ফিরে যেতে পারে। এ হামলাকে তারা নিজেদের আত্মসম্মান রক্ষার শেষ উপায় হিসেবেই দেখেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ইসরায়েলের পাল্টা হামলা একে যুদ্ধে রূপ দিতে পারে।

এ তো গেল আশার দিক। কিন্তু তেমনটি যদি না ঘটে? আর না ঘটার যথেষ্ট আশঙ্কা কিন্তু আছে। কারণ, ইসরায়েলে হামলার পর ইরানের সাধারণ মানুষ যেমন আনন্দ করেছে, মিছিল করেছে, তেমনি ইসরায়েলেও কিন্তু প্রতিক্রিয়া হয়েছে। ফলে দুই দেশেরই লোকরঞ্জনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি হলো—যুদ্ধ। নেতানিয়াহু এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়ে দিয়েছেন—‘আমার পরিষ্কার মূলনীতি: যারা আমাদের ক্ষতি করবে, আমরা তাদের ক্ষতি করব।’ অর্থাৎ, চোখের বদলে চোখ তোলা নীতিই তারা গ্রহণ করেছে। তারা এরই মধ্যে আমেরিকা ও পশ্চিমা অন্যান্য মিত্রকে জানিয়ে দিয়েছে যে, এ ঘটনার পর তাদের প্রতিক্রিয়া রোধের কোনো পথ নেই।

ইকোনমিস্ট জানাচ্ছে, ইসরায়েলের সামরিক বোদ্ধারা রায় দিয়েছে—ইরানে ড্রোন ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা করা যেতে পারে। তবে তারা হয়তো এখনই সাবমেরিন বহরকে কাজে লাগিয়ে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করবে না। প্রথাগত অন্য পথে হামলার মধ্য দিয়ে তারা একইসঙ্গে ইরানকে চাপে রাখতে চাইবে এবং পশ্চিমা দেশগুলোতে গাজা যুদ্ধের জেরে নিজেদের সমর্থনে ভাটার টানকে জোয়ারে পরিণত করার চেষ্টা করবে। সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আসবে আমেরিকায়। গাজা ইস্যুতে বাইডেন–নেতানিয়াহু সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়েছিলো। ইরানের এই হামলার মধ্য দিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে তা আবার ঘুরে গেলো। এটাকেই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে ইসরায়েল এবং অতি অবশ্যই ওয়াশিংটন।

যুদ্ধ বাধলে কী হবে

যদি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ এড়ানো না যায়, ইরান নিশ্চিতভাবেই নিজের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন শক্তির ওপর নির্ভর করবে। একইভাবে ইসরায়েলও নির্ভর করবে তার আকাশ প্রতিরক্ষা ও বিমান হামলার শক্তিমত্তার ওপর। কারণ, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রের বিপরীতে ইসরায়েলের হাতে রয়েছে এফ–৩৫–এর মতো যুদ্ধবিমান।

তবে এ ক্ষেত্রে ইসরায়েল কিছুটা এগিয়ে তার নিউক্লিয়ার অস্ত্রবাহী সাবমেরিনের কারণে। এর প্রত্যুত্তর দিতে গেলে ইরানকে নিশ্চিতভাবেই নির্ভর করতে হবে স্থলযুদ্ধের ওপর, যেখানে সে তার ট্যাঙ্কের শক্তি কাজে লাগাতে পারবে। পাশাপাশি সিরিয়া ও লেবানন থেকে ছায়াযুদ্ধের সঙ্গী যোদ্ধাদের ইসরায়েল অভিমুখে পাঠাতে পারবে।

কিন্তু এ তো গেল তাদের সামরিক সক্ষমতা। এর সঙ্গে আগেই বলা হয়েছে যুক্ত হয়ে যাবে প্রাচ্য ও প্রতীচ্যের বহু রাষ্ট্র। এ তালিকায় ইরান পাশে পেতে পারে লেবানন, ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেনের মতো দেশকে। দেশ হিসেবে না হলেও এই দেশগুলোতে থাকা ইরানের সমর্থনপুষ্ট সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো নিশ্চিতভাবেই এমন যেকোনো যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়বে। বিপরীতে ইসরায়েলের পক্ষে থাকছে আমেরিকা ও তার মিত্ররা। হ্যাঁ, দূরবর্তী মিত্র হিসেবে ইরান চীন ও রাশিয়াকে পেলেও তারা সরাসরি সমরে না নামার সম্ভাবনাই প্রবল।

শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ বাধলে বোঝাই যাচ্ছে যে, অনেকগুলো পক্ষই নামে–বেনামে জড়িয়ে পড়বে। আর বিশ্বের জ্বালানি শক্তির অন্যতম কেন্দ্র মধ্যপ্রাচ্যে এমন এক যুদ্ধ গোটা বিশ্বে অস্থিতিশীলতা রপ্তানিকে অবশ্যম্ভাবী করে তুলবে। এক রাশিয়ার যুদ্ধে জড়ানোর ধকলই এখনো সয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব। এর সঙ্গে ইরান যুক্ত হলে জ্বালানি তেলের বাজারে মাৎস্যন্যায় ছাড়া আর কী থাকবে—বলা কঠিন। কারণ, এমন যুদ্ধ সৌদি আরবসহ তার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সবকটি দেশকেই কোনো না কোনোভাবে টেনে আনবে, যার মধ্যে রয়েছে জ্বালানি তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারক বেশ কয়েকটি বড় দেশ। ওপেক হোক বা ওপেক প্লাস—অস্থির হলে তা সামাল দেয়ার মতো বাস্তবতা বিশ্বের বাকি রাষ্ট্রগুলোর নেই। বলা হতে পারে টেকসই জ্বালানি বা নবায়নযোগ্য জ্বালানির কথা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, সে পথে মাত্রই হাঁটতে শুরু করেছে বিশ্বের কয়েকটি দেশ। এর গতি ইউক্রেন যুদ্ধের জেরেই বেড়েছে। ফলে সেভাবে ভালো কোনো বিকল্প নেই পৃথিবীর সামনে।

এ অবস্থায় আমেরিকায় নির্বাচনী উত্তাপে দাঁড়িয়ে জো বাইডেন ও তার ডেমোক্রেটিক দল এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার রিপাবলিকান দল, যা–ই বলুক না কেন, সত্য হচ্ছে—মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধের ধকল নেয়ার মতো সক্ষমতা এই পৃথিবীর নেই।

টাইমলাইন: ইরান–ইসরায়েল উত্তেজনা

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App