×

আন্তর্জাতিক

গাজা যুদ্ধের ৬ মাসে কতটা ক্ষতি হলো হামাসের

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:১৭ এএম

গাজা যুদ্ধের ৬ মাসে কতটা ক্ষতি হলো হামাসের

ছবি: সংগৃহীত

গতবছর ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার শিকার হওয়ার পর ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র এই সংগঠনটিকে ‘গুঁড়িয়ে দেয়ার এবং নিশ্চিহ্ন করে ফেলার’ প্রতিজ্ঞা নিয়ে গাজার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ইসরায়েল। যাতে হামাস আর কোনো দিন দেশটির জন্য হুমকি হয়ে উঠতে না পারে। 

গাজায় ইসরায়েলের সেই অভিযানের ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। এ ছয় মাসে ৩৩ হাজারের বেশি বেসামরিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের একটি বড় অংশ নারী ও শিশু। গাজার বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।  গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষের সবাই বাস্তুচ্যুত, অনাহারে দিন কাটাচ্ছে এবং ছোট্ট এই ভূখণ্ডটিতে দুর্ভিক্ষ আসন্ন। খবর বিবিসির।

ইসরায়েলের দাবি, তাদের অভিযানে হাজার হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছে। সেইসঙ্গে তারা গাজায় হামাসের ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কের বেশিরভাগটাই ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়েছে। এই সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করেই সবার চোখের আড়ালে হামলা চালাতো হামাস।

আইডিএফ কামান্ডারদের বরাত দিয়ে প্রকাশ করা বিভিন্ন সংবাদ অনুযায়ী ৭ অক্টোবরের আগে গাজায় হামাসের ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে বলে ধারণা করা হত।

তবে ইসমাইল হানিয়েহ-র মত হামাসের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের অনেকেই বিদেশে অবস্থান করেন। হামাসের সশস্ত্র বাহিনীর নেতারা অবশ্য গাজার ভেতরেই থাকেন বলে ধারণা করা হয়।

সম্প্রতি এক বিবৃতিতে আইডিএফ দাবি করেছে, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তারা হামাসের প্রায় ১৩ হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। যদিও কিভাবে তারা এই হিসাব করেছে সে বিষয়ে কিছু জানায়নি।

ইসরায়েল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়া তথ্যানুযায়ী গত ৭ অক্টোবর হামাস দেশটি থেকে ২৫৩ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়।

তাদের মধ্যে:

      # গত নভেম্বরে ছয় দিনের যুদ্ধবিরতির সময় বন্দি বিনিময় চুক্তিতে ১০৯ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস।

     # তিন জিম্মিকে সরাসরি সামরিক অভিযানের মাধ্যমে মুক্ত করে এনেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

    # ১২ জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জন ইসরায়েলের অভিযানে সময় তাদের গুলিতে নিহত হয়েছে।

   # শনিবার ইলাদ কাৎজির নামে আরেক জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। যিনি গাজার আরেক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক জিহাদের হাতে বন্দি ছিলেন।

বাকি ১২৯ জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৪ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল।

অন্যদিকে হামাস বলেছে, নিহত জিম্মির সংখ্যা আরও বেশি। এজন্য তারা আইডিএফ-র আকাশ হামলাকে দায়ী করেছে।

এদিকে হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার প্রতিজ্ঞার অংশ হিসেবে ইসরায়েল গাজায় হামাসের ভূগর্ভস্থ বিস্তৃত সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ধ্বংস করার প্রতিজ্ঞাও করেছে। ওই সব সুড়ঙ্গ দিয়ে পণ্য এবং মানুষ যাতায়াত করতো।

আইডিএফ মুখপাত্র জনাথন কনরিকাস গত অক্টোবরে বলেছিলেন, “যদি গাজা স্ট্রিপের কথা ভাবেন তবে সেটির এক স্তর বেসামরিকদের জন্য এবং অন্য আরেকটি স্তর হামাসের জন্য। আমরা হামাসের তৈরি ওই দ্বিতীয় স্তরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।” 

আর যুদ্ধ শুরুর আগে হামাস বলেছিল, তাদের সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কের দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচশ কিলোমিটার। 

বিবিসি থেকে আইডিএফ কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তারা কতগুলো সুড়ঙ্গ এবং মোট সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কের কত শতাংশ ধ্বংস করতে পেরেছে। জবাবে তারা বলেন, তাদের সেনাবাহিনী গাজায় সন্ত্রাসীদের অবকাঠামোর একটি বড় অংশ ধ্বংস করেছে।

আইডিএফ মাঝেমধ্যেই হামাসের বিভিন্ন সুড়ঙ্গের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে। সেগুলোতে তারা প্রবেশ করেছে। যেমন: গত বছর নভেম্বরে তারা একটি সুড়ঙ্গের ভিডিও প্রকাশ করে বলে সেটি গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল-শিফার নিচে অবস্থিত। যেটি হামাসের কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

আইডিএফ এখন পর্যন্ত বিভিন্ন মাধ্যমে সুড়ঙ্গ নিয়ে যেসব তথ্য প্রকাশ করেছে তা এক জায়গায় করে হিসাব নিকাশ করেও এর পরিষ্কার কোনো চিত্র পায়নি বিবিসি। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App