বদলে গেছে দুবাই, রমজানে জনসম্মুখে অশ্লীলতাসহ আরো যা যা চলছে!
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
প্রতি বছর রমজান আসলে অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোর চেয়ে আরব দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যতার মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করে থাকে এ মাসটি। কারণ মুসলিমদের জন্য এই মাস বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। মুসলিমদের নির্ধারিত পাঁচ ফরজের একটি হচ্ছে রোজা, যেটি এ মাসেই পালন করা হয়। তেমনি ভাবে ধর্মীয় রীতি নিতি মেনে উৎসবমুখর পরিবেশে সিয়াম সাধনার এ মাসটি পালন হতো আরব বিশ্বের দেশগুলোর একটি সংযুক্ত আরব আমিরাতেও।
তবে দুবাইয়ে রমজানের সেই আগের পরিবেশ-পরিস্থিতি শুধুই অতীত। সেখানে এখন আর আর ধর্মীয় নিয়মনীতির তোয়াক্কা তো দূরের কথা পবিত্র এ রমজানে প্রকাশ্যে ধূমপানসহ খাওয়া-দাওয়া চলছে দেদারছে। এছাড়া জনসম্মুখে তরুণ-তরুণীদের অশ্লীলতা ও অপ্রীতিকর অবস্থায়ও দেখা যাচ্ছে হরহামেশা। আরব বেল্টের দেশ হওয়া সত্ত্বেও পবিত্র মাস রমজানে সেখানকার এমন পরিস্থিতির কারণে মর্মাহত স্থানীয়রা। এছাড়া এ বিষয়ে দেশটির নিতি নির্ধারকদের উদাসীনতাও চোখে পড়ার মতো।
বুধবার (৩ এপ্রিল) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে আমিরাতে খাওয়া-দাওয়া ও প্রকাশ্যে ধূমপান চলছে। এমনকি এ মাসেও একসঙ্গে তরুণ-তরুণীদের অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
আমিরাতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করা ব্রিটিস প্রবাসী ইম্মা ব্রেইনস রমজান নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। তার এ ভিডিও প্রকাশের পর রমজানে আমিরাতের বাসিন্দাদের মধ্যে আচার-আচরণে যে পরিবর্তন এসেছে তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, আমিরাতে রমজানেও প্রকাশ্যে খাওয়া দাওয়া বন্ধ হচ্ছে না। সেখানে অশোভন কাপড় পরে বের হচ্ছেন অনেকে। এছাড়া বিনা বাধা ও নির্দ্বিধায় চলছে অশ্লীলতা।
খালিজ টাইমসকে ইম্মা ব্রেইনস জানান, আমি মানুষকে প্রকাশ্যে খেতে ও ধূমপান করতে দেখে আশ্চর্য হয়েছি। কিছু জায়গা অবশ্য উন্মুক্ত। কিন্তু রমজানের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের একটি ধাপ তো অন্তত থাকবে। মানুষ ও স্থানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ব্যবধান তৈরি করে।
আরব আমিরাতে রমজানে বিভিন্ন রেস্তোরাঁ খোলা থাকে। অন্য জাতি ও বর্ণের মানুষদের জন্য এগুলো খোলা রাখা হয়।
দেশটিতে এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হামদা নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এটি সম্মান প্রদর্শনের ঘাটতি। আমি এবারের রমজানে আশ্চর্য হয়েছি। মানুষ প্রকাশ্যে ধূমপান ও খাওয়া-দাওয়া করছে। যারা রোজা থাকে না তাদের কোনো গোপন স্থান বা বিশেষ জায়গায় খাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আয়েশা নামের এক নারী বলেন, আমি বোনদের নিয়ে একটি থিম পার্কে গিয়েছিলাম। সেখানে একটি যুগলকে আমি কাছাকাছি আসতে দেখি। বিষয়টি আমার জন্য বিব্রতকর ছিলো। কারণ আমরা পারিবারিক সৌহাদ্যপূর্ণ সমাজে বসবাস করি।
সবশেষে ইম্মা জানান, আমিরাতে এখন কিছু মানুষের দেহে এমন পোশাকও দেখা যায় যা তারা নিজেদের দেশেও পরেন না। তিনি দেশটির সংস্কৃতি ও রমজানকে সম্মান দেখিয়ে পোশাক পরার আহ্বান জানান।