×

আন্তর্জাতিক

আল-শিফা হাসপাতালে রাতভর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৪, ০৩:০১ পিএম

আল-শিফা হাসপাতালে রাতভর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলি বাহিনী গাজার আল-শিফা হাসপাতালে অভিযান শুরু করেছে। হাসপাতালের আশেপাশে ট্যাঙ্ক ও ভারী গুলির খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, আইডিএফ হাসপাতাল এলাকায় একটি উচ্চ পর্যায়ের নির্ভুল অপারেশন চালাচ্ছে।’ খবর বিবিসির।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, আইডিএফ আরো জানায়, ‘হাসপাতালের ভেতরে হামাসের জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা অবস্থান করছে। হামাস হাসপাতালটিকে তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করছে। তারা এখানে পুনঃসংগঠিত হচ্ছে এবং হামলা পরিচালানার জন্য স্থাপনাটিকে ব্যবহার করছে।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গাজায় হাসপাতাল কমপ্লেক্সের ভিতরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলের ট্যাঙ্কগুলো হাসপাতালটিকে চারদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটঅ্যাপে একজন জানিয়েছে, ‘সেনারা বাইলে ট্যাংক নিয়ে আমাদেরকে ঘিরে রেখেছে। আমরা ভেতরে লুকিয়ে আছি, ভয়ে পাচ্ছি। যে কোন সময় পুরাদস্তুর হামলা শুরু হতে পারে।’ 

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ফুটেজে হাসপাতালের চারপাশে ভারী গুলির শব্দ শোনা গেছে। 

হাসপাতালের ভেতর থেকে সাংবাদিকদের পাঠানো অন্য একটি বার্তায় মুহাম্মদ আল-সায়িদ নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘এখানে সেনারা কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করছে। সেখানে মৃত ও আহত রয়েছে অনেকে। সেনারা ইতিমধ্যে কয়েকজন যুবককে আটক করে নিয়ে গেছে। এখানকার পরিস্থিতি বিপর্যয়কর।’

এর আগে আইডিএফ আল-শিফা হাসপাতালে হামলার বিষয়ে কোন আগাম সংকেত দেয়নি।

আইডিএফ প্রধান মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডএম ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ‘ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সুস্পষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করছে। হাসপাতালটিতে হামাসের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার লুকিয়ে আছেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে হাসপাতালটির রোগী ও স্টাফদের জানিয়ে দিয়েছি তাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণে নেই এবং তাদেরকে আপাতত হাসপাতাল থেকে সরতেও হবে না। আমরা কেবল হামাসকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছি।’

এদিকে গাজার ক্ষমতাসীন হামাস সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইসরায়েলের এই অভিযান আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন। শতাধিক বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি হাসপাতালটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সংঘাতের ফলে তারা আবারো বাস্তুচ্যুত হবেন।

চলমান যুদ্ধের আগে গাজায় আল-শিফা হাসপাতাল ছিলো উপত্যকার প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র। কিন্তু কয়েক মাস যুদ্ধের পর হাসপাতালটির কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। 

আন্তর্জাতিক মানবিক আইনে যে কোন যুদ্ধের সময় হাসপাতালগুলোর মর্যাদা সুরক্ষিত থাকার নিয়ম থাকলেও গাজায় সেটি স্পষ্টতই মানা হচ্ছে না।

ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে হামাসের বিরুদ্ধে হাসপাতালের মত স্থান থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ আনছে। যা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠীটি। 

এদিকে আইডিএফ বলছে, ‘এর আগে ২০২৩ সালে পরিচালিত এক অভিযানে তার আল-শিফা হাসপাতালটির নীচে একটি সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক এবং একইসঙ্গে অস্ত্র খুঁজে পেয়েছিলো। ফেব্রুয়ারিতে আইডিএফ আন-নাসের হাসপাতালেও একটি অভিযান পরিচালনা করেছিলো।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামলা চালায় হামাস। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। এসময় জিম্মি করে গাজার অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয় ২৫৩ জনকে। এ ঘটনার পরপরই গাজায় অভিযান পরিচালনা শুরু করে ইসরায়েল।  

গাজার ক্ষমতাসীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৩১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App