×

আন্তর্জাতিক

মাঝ আকাশে দুই পাইলটের ২৮ মিনিটের ঘুম! পরিণতি যা হলো

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪, ০৬:২৯ পিএম

মাঝ আকাশে দুই পাইলটের ২৮ মিনিটের ঘুম! পরিণতি যা হলো

ছবি: সংগৃহীত

পর্যাপ্ত বিশ্রামের অভাবে মাঝ আকাশে থাকা অবস্থায় ২৮ মিনিট ধরে ঘুমিয়ে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার একটি অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন বাতিক এয়ারের একটি ফ্লাইটের দুই জন পাইলট।

একসঙ্গে দুই পাইলটই ঘুমিয়ে পড়ায় এয়ারবাস এ৩২০ বিমানটি তার নির্দিষ্ট পথ থেকে সরে গিয়েছিলো। শেষ পর্যন্ত বড় কোনো বিপদ ছাড়াই অক্ষত অবস্থায় ১৫৩ আরোহী নিয়ে নিরাপদে অবতরণ করে বিমানটি।

লোমহর্ষক এ ঘটনার জেরে ওই দুই পুরুষ পাইলটকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি। 

গত ২৫ জানুয়ারি সুলাউইসি থেকে রাজধানী জাকার্তায় যাওয়ার পথে ওই ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ওই দুই পাইলটের একজন সদ্য যমজ সন্তানের বাবা হয়েছেন। তাদের যত্নে সহায়তা করতে গিয়ে তিনি ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে পারেননি, ফলে তিনি খুবই ক্লান্ত ছিলেন।

ফ্লাইটটির ৩২ বছর বয়সী একজন পাইলট জানান, যাত্রা শুরু করার প্রায় আধাঘণ্টা পর তিনি কো-পাইলটকে উড়োজাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিতে বলেন। কারণ, তার বিশ্রামের প্রয়োজন ছিলো। এদিকে তার সঙ্গে থাকা আরেকজন ২৮ বছর বয়সী কো-পাইলট বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিতে সম্মত হয়েছিলেন বলে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়। কিন্তু অসাবধানতাবশত কো-পাইলটও ঘুমিয়ে পড়েন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পাইলটের স্ত্রী একমাস আগে যমজ সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তাদের যত্ন নিতে পাইলটকে তার স্ত্রীকে সাহায্য করতে হয়।

বিবিসি জানায়, জাকার্তা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল তাদের সর্বশেষ ট্রান্সমিশন রেকর্ড করার পর বাতিক এয়ারের ওই ফ্লাইটের ককপিটের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে যায়। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। তাদের রেডিও ২৮ মিনিট নিশ্চুপ হয়েছিল। যতক্ষণ পর্যন্ত না পাইলট দুই জন জেগে ওঠেন।

পরে পাইলট জেগে উঠে দেখেন তার কো-পাইলটও ঘুমিয়ে আছেন এবং উড়োজাহাজটি নির্দিষ্ট পথ থেকে খানিকটা সরে গেছে। তখন তিনি জাকার্তার কন্ট্রোল রুম থেকে করা কলের জবাব দেন এবং উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করান।

ফ্লাইট পরিচালনার আগে পাইলটদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। ওই দুই পাইলটের শারীরিক অবস্থাও পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তারা ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সুস্থ ছিলেন। তাদের রক্তচাপ এবং হৃদযন্ত্রের গতি স্বাভাবিক ছিলো। অ্যালকোহল পরীক্ষার ফলাফলও ‘নেগেটিভ’ এসেছিলো।

শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে পাইলট পুরোপুরি বিশ্রাম গ্রহণ করেছেন কিনা তা যাচাই করা বেশ কঠিন বলে বিবিসিকে বলেছেন এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আলভিন লি।

এই ভয়াবহ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাতিক এয়ার কে ‘কঠোর তিরস্কার’ করে ইন্দোনেশিয়ার এয়ার ট্রান্সপোর্টের প্রধান এম ক্রিস্টি এনডাহ মুরনি বলেছেন, বাতিক এয়ারের তাদের ক্রুদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের ওপর আরো অধিক নজর দেয়া উচিত।

প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে একই ঘটনায় বাতিক এয়ারের একজন পাইলট মাঝ আকাশে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ফ্লাইট জরুরি অবতরণে বাধ্য হয়েছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App