×

আন্তর্জাতিক

মেডিকেল কলেজ ছেড়ে মাদ্রাসায় যান মাওলানা তারিক জামিল

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:০৯ পিএম

মেডিকেল কলেজ ছেড়ে মাদ্রাসায় যান মাওলানা তারিক জামিল

তারিক জামিল একজন প্রভাবশালী পাকিস্তানি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, দায়ী এবং তাবলিগ জামাতের সদস্য। ইসলাম প্রচারক হিসেবে তার সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পাশাপাশি উর্দু ও আরবিতে সাবলীল বক্তৃতা তাকে মুসলিম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে।

মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সব স্তরের মানুষকে তিনি প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন। শিক্ষাজীবনে তিনি তাবলিগ জামাত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে মেডিকেল কলেজের পড়াশোনা ছেড়ে নিজেকে ইসলাম শিক্ষায় নিয়োজিত করেছিলেন। 

আরো পড়ুন: বিশ্ব ইজতেমায় যৌতুকবিহীন বিয়ে

ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা ও শিক্ষায় অবদানের অংশ হিসেবে তিনি মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন, জামিয়া আল হুসায়নিয়া মাদ্রাসা ও মিম একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালে তিনি এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে তিনি সবসময় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম জরিপে শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি দুইবার প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছেন।

আরো পড়ুন: ইজতেমায় প্রথম পর্বে ৪৭টি দেশ থেকে এসেছেন ২০০০ মেহমান

তিনি ১৯৫৩ সালের ১ অক্টোবর পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের টুলাম্বায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনের শুরুতে তিনি ডাক্তারি পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে তাবলিগ জামাতে চার মাস সময় লাগানোর পর তিনি ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। 

প্রথমদিকে তিনি লাহোরের জামিয়া আরাবিয়া, রায়উইন্ডে পড়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। পিতার বিরোধিতার কারণে তিনি জামিয়া রশিদিয়া শাহীওয়ালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তার পিতা রাজি হয়ে তাকে রায়উইন্ড মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। এখানেই তিনি কুরআন, হাদিস, সুফিবাদ, যুক্তিবিদ্যা এবং ইসলামি আইনশাস্ত্র নিয়ে অধ্যয়ন করেন।

শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর থেকে তিনি তাবলিগ জামাতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। তিনি জাতিগত এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমর্থন করে বক্তৃতা প্রদান করেন। তিনি জামিয়া আল হুসায়নিয়া এবং মিম একাডেমি নামে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড়ের ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামে রয়েছে মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সমাজসেবা এই তিনটা ক্ষেত্রে এটি কাজ করে থাকে।

তিনি দ্য রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার প্রকাশিত বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিমের তালিকায় সবসময় শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন। ২০২০ ও ২০২১ সালে ধর্মীয় ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি পাকিস্তানের প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার পেয়েছেন।

তার বক্তৃতায় প্রভাবিত হয়ে পাকিস্তানের চকওয়াল এবং তার আশেপাশের এলাকায় বহু মানুষ কাদিয়ানি মতবাদ ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করলে তিনি কাদিয়ানিদের বিরাগভাজনে পরিণত হন। এই কারণে পাকিস্তানের তিলাবিজের এক যুবককে কাদিয়ানি সম্প্রদায় তাকে হত্যা করার জন্য নিয়োজিত করেছিলেন। কিন্তু যুবকটি তার বক্তৃতা শ্রবণ করে ইসলাম গ্রহণ করে।

আরো পড়ুন: বিশ্ব ইজতেমায় পুলিশ সদস্যসহ প্রাণ গেল ৭ জনের

মাওলানা তারিক জামিল নিজেই তার জীবনের পরিবর্তনের গল্প বলেছেন, ‘আমি দীনি পরিবেশে বেড়ে উঠিনি, জুনাইদ জামশেদের মতো আমিও একসময় গান গাইতাম, সিনেমা দেখতাম।’ ‘আমার এক স্কুল ফ্রেন্ড তাবলিগ করতো। সে আমাকে এক প্রকার জোর করেই তিন দিনের জন্য তাবলিগে নিয়ে যায়। সেখান থেকেই মূলত আমার মনে হলো ডাক্তার নয়; আমাকে তাবলিগ করতে হবে। মানুষের কাছে ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিতে হবে। এই বোধদয়ের পর তাবলিগ থেকে ফিরেই আমি মাদরাসায় ভর্তি হয়ে যাই।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App