×

আন্তর্জাতিক

রামলালার সোনার মুকুটের দাম ১১ কোটি!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৩৪ এএম

রামলালার সোনার মুকুটের দাম ১১ কোটি!

সম্প্রতি অযোধ্যার রামমন্দিরে ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’ হল রামলালার বিগ্রহের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাজলদান করেছেন রামলালার। এই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থেকেছেন দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। 

৫১ ইঞ্চি উচ্চতার কৃষ্ণশিলা দিয়ে নির্মিত রামলালার বিগ্রহ ছিল আপাদমস্তক গয়নায় মোড়া। রামলালার মাথায় শোভা পাচ্ছিল সোনার মুকুট। বিশেষ ভাবে সকলের নজর কাড়ে এই মুকুটটি। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

রামলালার ‘প্রাণপ্রতিষ্ঠা’র দিন শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্যদের সোনার মুকুট দান করেন মুকেশ পাটেল। গুজরাতের সুরাটে হিরের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।

রামলালার সোনার মুকুটের ওজন ছয় কিলোগ্রাম যা তৈরিতে খরচ হয়েছে ১১ কোটি টাকা। শুধুমাত্র সোনা নয়, রামলালার মুকুট তৈরি হয়েছে হিরে, পান্না, রুবি-সহ নানা বহুমূল্য রত্ন দিয়ে।

উত্তর ভারতীয় ধাঁচে তৈরি করা হয়েছে রামলালার মুকুট। এর ঠিক মাঝখানে শোভা পাচ্ছে সূর্যদেবের প্রতীক। লালরঙা রত্ন বসিয়ে তার শোভা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

রামলালার মুকুটের ডান দিক মুক্তোর ছোট মালার মতো সাজানো রয়েছে। প্রায় চার কিলোগ্রাম ওজনের সোনা ব্যবহৃত হয়েছে মুকুট নির্মাণে। ছয়কিলোগ্রাম ওজনের মুকুটে বাকি দুই কিলোগ্রাম রয়েছে হিরে, চুনি, পান্না-সহ অন্যান্য সব রত্ন।

শুধু সোনার মুকুট নয়, তার পাশাপাশি রামলালার জন্য গয়নাও দান করেছেন মুকেশ। গুজরাতের ‘গ্রিনল্যাব ডায়মন্ড’ সংস্থার মালিক তিনি।

রামলালার সোনার মুকুট যাতে নিখুঁত ভাবে তৈরি হয়, সে কারণে ৫ জানুয়ারি অযোধ্যায় তার সংস্থার তরফে দুজন কর্মীকে পাঠিয়েছিলেন মুকেশ। রামলালাকে ভাল ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর মুকুট এবং গয়না তৈরি করেছিল মুকেশের সংস্থা।

রামমন্দির উদ্বোধনের দিন স্ত্রী এবং পুত্রকে নিয়ে অযোধ্যায় গিয়েছিলেন মুকেশ। শ্রীরাম জন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের সদস্যদের হাতে সোনার মুকুট তুলে দেন তিনি।

সোনার মুকুটের সঙ্গে মানানসই কুণ্ডল (দুল) রয়েছে রামলালার কানে। সোনার তৈরি দুলে বসানো রয়েছে হিরে, চুনি, পান্না। ময়ূরের নকশা ফোটানো হয়েছে তাতে।

প্রাণপ্রতিষ্ঠার দিন রামলালার পরনে ছিল হলুদ রঙের বেনারসি ধুতি। গায়ে ছিল লাল পট্টবস্ত্র। এই পট্টবস্ত্রে সোনার জরি দিয়ে কারুকাজ করা হয়েছে। শঙ্খ, চক্র, পদ্ম এবং ময়ূর ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পট্টবস্ত্রে। তৈরি করেছে দিল্লির একটি সংস্থা।

বিগ্রহের গলায় রয়েছে অর্ধচন্দ্রাকৃতি কণ্ঠহার। ফুলের নকশা রয়েছে তাতে। মাঝে সূর্য। অসংখ্য হিরে, চুনি, পান্না খোদাই করা রয়েছে। নীচে ঝুলছে পান্না। বিগ্রহের যেখানে হৃদয়, সেখানে ঝুলছে কৌস্তুভ মণি। বড় চুনি এবং হিরে দিয়ে তৈরি। বলা হয়, বিষ্ণু এবং তার অবতারেরা গলায় এই মণিহার পরেন।

কণ্ঠ এবং নাভির মাঝে ঝুলছে পাঁচনলি হার। তাতে বসানো রয়েছে অসংখ্য হিরে, পান্না। নীচে ঝুলছে লকেট।

বিগ্রহের গলা থেকে যে সবচেয়ে লম্বা হার ঝুলছে, তা হল বৈজয়ন্তী বা বিজয়মালা। বিজয়ের প্রতীক। এতে খোদাই করা রয়েছে অসংখ্য হিরে, পান্না। বৈষ্ণব রীতি মেনে এতে খোদাই করা রয়েছে শঙ্খ, সুদর্শন চক্র, পদ্ম, মঙ্গল কলস।

রামলালার দুই বাহুতে রয়েছে ভুজবন্ধ। সোনার তৈরি বাজুতে বসানো রয়েছে হিরে, চুনি, পান্না। দুই হাতে রয়েছে বালা। সোনার সেই বালাতে বসানো রয়েছে দামি পাথর। দুই হাতের আঙুলেই রয়েছে বিশাল আংটি। তা থেকে ঝুলছে বড় মুক্তো।

পায়ে রয়েছে সোনার তৈরি পায়েল বা পঞ্জনিয়া। তাতে সোনা, চুনি বসানো রয়েছে। বাঁ হাতে রয়েছে সোনার ধনুক। তাতে রয়েছে মুক্তো, চুনি, পান্না। ডান হাতে রয়েছে সোনার তির। বিগ্রহের কপালে রয়েছে হিরে, চুনি খচিত তিলক। পায়ে রয়েছে সোনার পদ্ম।

রামলালা শিশু। তাই তার সামনে রাখা রয়েছে রুপোর খেলনা। যেমন রুপোর ঝুনঝুনি, হাতি, উট, ঘোড়া, গাড়ি, লাট্টু। নেপথ্যে রয়েছে সোনার ছাতা।

বিগ্রহের গায়ে কী কী গয়না পরানো হবে, তা নিয়ে চলেছিল গবেষণা। বাল্মিকীর রামায়ণ, অধ্যাত্ম রামায়ণ, রামচরিত মানস, আলভান্দর স্তোত্র পড়ে তার পরেই গয়নার নকশা পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

গবেষণা করে গয়নার নকশা তৈরি করেছেন যতীন্দ্র মিশ্র। লখনউয়ের দু’টি দোকান থেকে বানানো হয়েছে সেগুলি।


সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App