×

আন্তর্জাতিক

৮ ফেব্রুয়ারি ভোট

পাকিস্তানে নির্বাচনী বিপর্যয় এড়াতে বড় নেতাদের কৌশল

Icon

দ্য ডন

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২৫ পিএম

পাকিস্তানে নির্বাচনী বিপর্যয় এড়াতে বড় নেতাদের কৌশল

বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি, নওয়াজ শরিফ, গোহর আলী খান এবং মাওলানা ফজলুর রহমান। - ফাইল ছবি

  • পাকিস্তানে আগামী  ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচন। এতে  সব বড় দলের প্রধানসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বিপর্যয় এড়াতে একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 
  • বেশিরভাগ নেতাই নির্বাচনের দিন বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে 'নিরাপদ আসন' বেছে নিয়েছেন।  
  • লাহোরে  আকর্ষণীয় প্রতিযোগিতা হবে।  আসনে নওয়াজের সাথে লড়াই করছেন ইয়াসমিন। বিলাওয়ালকে চ্যালেঞ্জ করেছেন আত্তা তারার। ওয়াধ আসনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী শফিক মেঙ্গল, কালাত আসনে গফুর হায়দারিএবং খুজদার আসনে সানাউল্লাহ জেহরির বিপক্ষে লড়বেন বিএনপি-এম প্রধান।



পাকিস্তানে আগামী  ফেব্রুয়ারি সংসদ নির্বাচন। দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) অবশ্য এখনো প্রার্থীদের পুরো তালিকা প্রকাশ করেনি। তবে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন বিভিন্ন নির্বাচনী আসন থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে, যেখানে আগামী  ফেব্রুয়ারির ভোটে রাজনৈতিক নেতৃস্থানীয়রা এবং বিভিন্ন দলের প্রধানরা বিজয়ের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

কয়েক মাস অনিশ্চয়তার পর, বিভ্রান্তির কুয়াশা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর থেকে সরে যাচ্ছে বলে মনে হয়।কারণ গত সপ্তাহ শেষে নাটকীয় ঘটনাগুলোর পর প্রাক-নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অবশেষে নির্বাচনী ধাঁধা কাটতে শুরু করেছে। পাশাপাশি প্রার্থীদের, তাদের আসন এবং সমস্যাগুলো আরো পরিষ্কার হচ্ছে।

এদিকে তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে অযোগ্য ঘোষিত পাকিস্তান তেহরিক--ইনসাফ (পিটিআই) এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খান কারাগারের আড়াল থেকে সমস্ত ঘটনার দিকে লক্ষ্য রাখবেন। কারণ তিনি ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর প্রধানরা তো বাইরের মাঠে লড়াই করছেন। এক দশকের অস্পষ্টতা কাটিয়ে এবং স্ব-নির্বাসন শেষে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরীফকে মাঠে ফিরতে দেখার বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইমরান খানের জন্য বেদনাদায়ক হবে

ইমরান খান ছাড়াও, তার নিজের উপদল পাকিস্তান মুসলিম লিগের (পিএমএল-কিউ)প্রধান চৌধুরী সুজাত হুসেন, সেইসাথে প্রবীণ রাজনীতিবিদ এবং আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি) প্রধান আসফান্দিয়ার ওয়ালি খান দুই সিনিয়র পার্টি প্রধান আপাতভাবে স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে এবারের ভোটে লড়ছেন না।

নির্বাচনী আসনগুলো যেখানে বিভিন্ন দলের প্রধান এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, সেইসাথে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের কাছ থেকে কঠোর লড়াইয়ের মুখোমুখী হবেন অনেকেই। এৃনটা ধারণা করা হচ্ছে যেসব আসনে সেগুলো চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এ প্রতিবেদনে।

এবার, সব প্রধান রাজনৈতিক দল  আনুষ্ঠানিক কোনো জোট গঠন ছাড়াই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে, এবং অনেক আসনে দলীয় প্রধানরা শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবেন, যা অনেকের ভরাডুবির কারণ হতে পারে।কিন্তু শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা যাতে কোনো বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে না পড়েন তা নিশ্চিত করতে প্রায় সব প্রধান দলের প্রধানরা একাধিক আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

তবে তাদের মনের কোথাও না  কোথাও অবশ্যই আশানুরূপ জনপ্রিয়তা মাঠে প্রমাণিত না হওয়ার আশংকা রয়েছে। তারা যাতে নির্বাচনী পরিবেশ থেকে বাদ না পড়েন তা নিশ্চিত করার জন্য দৃশ্যত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারপরে দলের প্রধানদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। তারাও আসনের সন্ধানে রয়েছেন। এক স্পষ্ট ইঙ্গিত, এই নির্বাচনেও প্রচুর প্রার্থী থাকবে, যা দেশের রাজনৈতিক অভিজাতদের রাজনৈতিক রাজবংশকে আরো শক্তিশালী করবে। 

পিএমএল-এন

পাকিস্তানের সাবেক  প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ

পিএমএল-এনের সর্বোচ্চ নেতা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ এবং তার ভাই, দলের সভাপতি শেহবাজ শরীফ, দুজনেরই দুটি করে আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নওয়াজ শরীফ পানামা পেপারস মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। আদালত থেকে ক্লিন চিট পেয়ে নির্বাচনী মাঠে ফিরেছেন। তিনি লাহোর (আসন-১৩০) এবং মানসেহরা (আসন-১৫) থেকে দুটি জাতীয় পরিষদের আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, ক্ষমতার কাছ থেকে পর্দার আড়ালে যে সমর্থন রয়েছে তা অনেকেরই ধারণা থাকা সত্ত্বেও, পিটিআই-এর কারণে নওয়াজ শরীফের পক্ষে এবার জয় পাওয়া রাস্তাটি মসৃণ নাও হতে পারে।

লাহোর আসনে পাঞ্জাবের সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়াসমিন রশিদের মুখোমুখি হবেন নওয়াজ শরিফ। পিটিআই ভোটারদের ভোট পেতে কোনও ভূমিকা বা নির্বাচনী প্রতীক রাখেননি ইয়াসমিন রশিদ। অন্যদিকে মানসেরা আসনে পিটিআই-এর গুস্তাসিফ খান এবং জেইউআই-এফ-এর মুফতি কিফায়াতুল্লাহর মুখোমুখি হবেন নওয়াজ শরীফ

অন্যদিকে তার ভাই শেহবাজ শরীফ লাহোর  আসন ১২৩ এবং কাসুর (আসন ১৩২) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। শেহবাজ শরীফ  আইনজীবী পিটিআই-এর আফজাল আজিম এবং জামাত--ইসলামির (জেআই) একজন পুরানো প্রচারক লিয়াকত বালুচের মুখোমুখি হবেন। ইতিমধ্যে, পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) একটি কম পরিচিত পণ্য, মুহাম্মদ জিয়াউল হককে নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রার্থী করেছে (যদিও তার নামের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই সেই সেনা শাসকের)

কাসুরে শেহবাজ শরীফের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন পিটিআই-এর মোহাম্মদ আলী দোগার এবং পিপিপি- শাহীন সফদার। নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ বছর প্রথমবারের মতো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি লাহোর (আসন-১১৯) থেকে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন, যেখানে তিনি পিটিআই-এর মিয়া আবাদ ফারুক এবং পিপিপি-এর ইফতিখার শহীদের মুখোমুখি হবেন।

একইভাবে, শেহবাজ শরিফের ছেলে এবং পাঞ্জাবের স্বল্প সময়ের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী হামজা শেহবাজও লাহোর (আসন-১১৮) এর জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সেখানে তিনি পিটিআই-এর সরব নেতা এবং সাবেক সংসদীয় সচিব আলিয়া হামজা, জেইউআইএফ-এর মোহাম্মদ আফজাল খান এবং পিপিপি-এর শহীদ আব্বাসের বিপক্ষে লড়াই করে জয়ী হতে হবে। মরিয়ম এবং হামজা উভয়ই লাহোর থেকে প্রাদেশিক বিধানসভার আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং সম্ভবত উভয়েই দেশের বৃহত্তম প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদের দিকে তাকিয়ে থাকবেন।

 পিপিপি

পিপিপি প্রতিষ্ঠাতা আসিফ আলি জারদারি

পিপিপি চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি তিনটি আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিজের প্রদেশ থেকে দুটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পাশাপাশি, ভুট্টো-জারদারি লাহোর (আসন-১২৭) থেকেও তার কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। সেখানে তিনি পিএমএল-এন-এর ফায়ারব্র্যান্ড আতাউল্লাহ তারার এবং পিটিআই-এর চৌধুরী শাব্বির গুজ্জারের মুখোমুখি হবেন।

তরুণ পিপিপি প্রধান তার জন্মস্থান লারকানা (আসন-১৯৪) এবং কাম্বার শাহদাদকোট (আসন-১৯৬) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। লারকানায়, তিনি জেইউআই-এফ-এর মাওলানা রশিদ মাহমুদ সুমরো এবং পিটিআই সিনেটর সাইফুল্লাহ আবরোর মুখোমুখি হবেন। শাহদাদকোট আসনে পিটিআই-এর হাবিবুল্লাহ চ্যালেঞ্জ করবেন বিলওয়াল ভুট্টোকে।

সাবেক রাষ্ট্রপতি আসিফ আলী জারদারিও শহীদ বেনজিরাবাদের একই আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসনে তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। এর আগে, তার বোন . আজরা ফজল পেচুহো ২০০২, ২০০৮ এবং ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত তিনটি নির্বাচনেই এই আসনে জয়লাভ করেছিলেন। এখানে জারদারির মুখোমুখি হবেন পিটিআইয়ের সরদার শের মুহাম্মদ রিন্দ বালুচ।

জেইউআই-এফ

মওলানা ফজলুর রহমান

জমিয়ত উলেমা--ইসলামের (জেইউআই-এফ) ভেঙে সৃষ্ট উপদল প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান দুটি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন - খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান (আসন-৪৪) এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের পিশিন-কাম-জিয়ারাত (এনএ-২৬৫) এই দুই আসনে জেইউআই-এফ প্রধানের সঙ্গে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জেইউআই-এফ প্রধানই একমাত্র দলীয় প্রধান যিনি নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার জন্য সোচ্চার দাবি জানিয়ে আসছেন।  ডেরা ইসমাইল খানে তিনি পিটিআই-এর হিংস্র এবং আক্রমণাত্মক আলী আমিন গন্ডাপুর এবং পিপিপি- প্রাক্তন এনএ ডেপুটি স্পিকার ফয়সাল করিম কুন্ডির মুখোমুখি হবেন। এদিকে পিশিন-কাম-জিয়ারাতে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে রয়েছেন পিটিআই-এর সৈয়দ জহুর আগা।

এবারই প্রথমবারের মতো জেইউআই-এফ প্রধান নিজ প্রদেশ কেপির বাইরে থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি পিশিন-কাম-জিয়ারাতের অপেক্ষাকৃত নিরাপদ আসনটি নির্বাচন করেছেন, যেখানে দলটি ২০০২ সাল থেকে জিতে আসছে। জেআই প্রধান সিরাজুল হক আসন- লোয়ার দিরের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যেখানে তিনি পিটিআই-এর বশির খান এবং মোহাম্মদ শের খানের (জেইউআই-এফ) বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

 পিটিআই

পিটিআই প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

ইমরান খানের অধিনায়কত্ব ছাড়াই নির্বাচনে লড়ছে বিপাকে পড়া পিটিআই। আইকনিকব্যাটপ্রতীক হারানোর পর এর সব প্রার্থীই স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলটির তৎকালীন চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান বুনের (আসন-১০) থেকে এনএ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সেখানে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শের আকবর খান, যিনি ২০১৩ সালে জেআই-এর টিকিটে এবং ২০১৮ সালে পিটিআই-এর টিকিটে এই আসনে জয়লাভ করেছিলেন। এবার, শের আকবর খান পিটিআই-পার্লামেন্টারিয়ানদের টিকিট ধরেছেন, যারা আসলে কেপির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খট্টকের নেতৃত্বে পিটিআই থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া একটি উপ-দল৷

ব্যারিস্টার গোহর আলী খান একই আসন থেকে ২০০৮ সালের নির্বাচনে পিপিপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, কিন্তু ,০০০ ভোটের কম ব্যবধানে এএনপির আবদুল মতিন খানের কাছে হেরে যান। একই আসনে জেইউআই-এফ-এর ওয়ালিউর রহমানও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। আরেক আইনজীবী, পিটিআই-এর শের আফজাল মারওয়াত, লাকি মারওয়াত (আসন-৪১) থেকে  প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তিনি মাওলানা ফজলুর রহমানের ছেলে আসজাদ মেহমুদের বিরুদ্ধে লড়বেন।

 এমকিউএম-পি

সিন্ধু শহর-ভিত্তিক এমকিউএম-পাকিস্তান, যা ২০১৮ সালের নির্বাচনে একটি বড় ধাক্কা খেয়েছিল, মোস্তফা কামালের পাক সারজামিন পার্টির (পিএসপি) সাথে 'সুবিধার বিয়ে' হওয়ার পরে এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দলের আহ্বায়ক খালিদ মকবুল সিদ্দিকী করাচি (আসন-২৪৮) থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যেখানে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলেন পিটিআই-এর সোশ্যাল মিডিয়া টিমের অন্যতম প্রধান মুখ আর্সালান খালিদ এবং পিপিপি- মোহাম্মদ হাসান খান।

দলের সাবেক প্রধান . ফারুক সাত্তার আসন-২৪১ আসন-২৪৪- দুটি আসন থেকে ভাগ্য পরীক্ষায় নামছেন। আসন-২৪১- তার প্রতিপক্ষ পিটিআই-এর খুররম শের জামান এবং পিপিপি- মির্জা ইখতিয়ার বেগ, যেখানে এনএ-২৪৪- তিনি পিটিআই-এর সাবেক এমএনএ আফতাব জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে লড়বেন। করাচিতে (আসন-২৪২) একটি আকর্ষণীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রত্যাশা করছে বিশ্লেষকরা। যেখানে পাক সারজামিন পার্টি প্রধান মোস্তফা কামাল পিপিপির আব্দুল কাদির মন্দোখেলের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন।

 নতুন দল

আইপিপি প্রধান জাহাঙ্গীর তারিন 

ইস্তেহকাম--পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি) এবং পিটিআই-পি দৃশ্যপটে দুটি নতুন দল, যাদের বেশিরভাগই পিটিআই দল ত্যাগকারী। লাহোর (আসন-১১৭) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন,আইপিপি সভাপতি আলিম খান। সেখানে অপর প্রধান আইপিপি নেতা জাহাঙ্গীর তারিন দুটি আসন - মুলতান (আসন-১৪৯) এবং লোধরানের (আসন-১৫৫) জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আলিম খানের মুখোমুখি হবেন পিটিআইয়ের আলী ইজাজ বাট্টার এবং পিপিপির আসিফ হাশমি।

এদিকে আসন সমন্বয়ের জন্য কারণে খানের বিরুদ্ধে পিএমএল-এন তার প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে। অন্যদিকে, মুলতানে পিটিআইয়ের মালিক আমির দোগারের সাথে তারিনের কঠিন লড়াই হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পিএমএল-এন লাহোরে তারিনের পক্ষে তার প্রার্থী প্রত্যাহার করেছে। তবে লোধরানে তার প্রার্থী সিদ্দিক বালুচ তাকে চ্যালেঞ্জ করতে থাকবে। পিটিআই তারিনের বিরুদ্ধে পীর ইকবাল শাহকেও দাঁড় করিয়েছে, যিনি একসময় ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন হিসেবে বিবেচিত ছিলেন।

পিটিআই-পি প্রধান পারভেজ খট্টক, এরইেমধ্যে নওশেরা থেকে একটি প্রাদেশিক বিধানসভা আসনে (পিকে-৮৭) নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ তার প্রধান প্রতিপক্ষ পিটিআই-এর খলিলুর রহমান এবং জেইউআই-এফ-এর লিয়াকত খান।

 বেলুচিস্তানে দলগুলো

পশতুনকওয়া মিলি আওয়ামী পার্টি (পিকেএমএপি) প্রধান মাহমুদ খান আচাকজাই কোয়েটা, পিশিন এবং কিল্লা আবদুল্লাহর তিনটি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য, আচাকজাই পিশিন (আসন-২৬৫) থেকে জেইউআই-এফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমানের পক্ষে প্রত্যাহার করে নেন।

মজার বিষয় হলো, জেইউআই-এফ-এর মুফতি রোজি খানও কোয়েটা (আসন-২৬৩) থেকে কোয়েটার প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে এসেছিলেন, কিন্তু দলটি আচাকজাইয়ের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হাজি লস্করী রাইসানিকে সমর্থন করছে। বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি-মেঙ্গল (বিএনপি-মেঙ্গল) প্রধান সরদার আখতার মেঙ্গলও  কোয়েটা (আসন-২৬৩) আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।

খুজদার (আসন-২৫৬) এবং কল্লাত (আসন-২৬১থেকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সরদার আখতার। এই দুটি আসনেই তিনি রাজনৈতিক হেভিওয়েটদের মুখোমুখি হবেন। কল্লাতে তিনি জেইউআই-এফ-এর মাওলানা আবদুল গফুর হায়দারির বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। খুজদারে সরদার আখতারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে পিপিপির সানাউল্লাহ জেহরির সঙ্গে।

এর পাশাপাশিসরদার আখতার তার জন্মস্থান ওয়াধের একটি প্রাদেশিক বিধানসভা আসনের জন্যও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, যেখানে তিনি তার তিক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক ফেডারেল মন্ত্রী নাসির মেঙ্গলের ছেলে শফিক মেঙ্গলের মুখোমুখি হবেন, যার সাথে তিনি একটি রক্তক্ষয়ী বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন।

ঝাল মাগসি-কাম-কাচি-কাম-নাসিরাবাদ ( আসন-২৫৪থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির (বিএপি) সভাপতি খালিদ মাগসি। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সরদার ইয়ার মুহাম্মদ রিন্দ, যিনি রিন্দ উপজাতির উপজাতীয় প্রধান। সরদার রিন্দ পিটিআই থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন এবং এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ন্যাশনাল পার্টি (এনপি) প্রধান আব্দুল মালিকও তুরবত থেকে এনএ-২৫৯ আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, যেখানে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পিপিপির মালিক শাহ গোরগাজ।

 সিন্ধু ফ্রন্টে সব শান্ত

পাকিস্তানের অন্যান্য অংশের মতো, সিন্ধু আসন্ন হেভিওয়েটদের মধ্যে কোনও বড় প্রতিযোগিতা হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ বিভিন্ন দলের সিনিয়র নেতারা একে অপরের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। শুধুমাত্র লারকানা-রাতোদেরোর ( আসন-১৯৪) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কারণ এই একমাত্র আসনে বিলাওয়াল ভুট্টো-জারদারি এবং জেইউআই-এফ সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রশিদ মেহমুদ সুমরোর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে৷ তবে তাৎপর্যপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে থেয়াল রাখতে হবে তরুণ পিপিপি বংশোদ্ভূত বিলাওয়াল ভুট্টোর পক্ষে ইতিহাসের সমর্থন রয়েছে। কারণ নির্বাচনী এলাকাটি তার পিতামহ পিপিপির প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর নিজ শহরে অবস্থিত।

করাচিতে, বিভিন্ন দলের সিনিয়র নেতারা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় তারা শুধুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর দ্বিতীয় বা তৃতীয় স্তরের নেতাদের মুখোমুখি হচ্ছেন। আসন ২৪২ থেকে পিএমএল-এন নেতা শেহবাজ শরিফের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে করাচিতেও কোনো উচ্চ ভোল্টেজ নির্বাচনী লড়াই হবে বলে মনে হয় না। জিডিএর . জুলফিকার মির্জা এবং তার স্ত্রী . ফেহমিদা মির্জার মনোনয়নপত্র প্রত্যাখ্যানের পর, বদিন আসনেও  পিপিপি প্রার্থীদের সাথে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App