×

আন্তর্জাতিক

এশিয়ার বৃহত্তম বস্তিতে যেভাবে করোনা নিয়ন্ত্রিত

Icon

nakib

প্রকাশ: ২৩ জুন ২০২০, ০৭:৫০ পিএম

এশিয়ার বৃহত্তম বস্তিতে যেভাবে করোনা নিয়ন্ত্রিত

এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি

বিশ্বের সবেচেয়ে ঘনবসতির ছোট একটি শহরে অন্যান্যদের মতো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা সম্ভব হয় না। আর ঘনত্ব করোনা ভাইরাসের একটি সহায়ক শক্তি। কল্পনা করা যায় মাত্র ২.৫ বর্গ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ লাখের বেশি লোক বসবাস করে! যা ম্যানচেস্টারে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যার চেয়েও বেশি। তবে আয়তনে হাইডি পার্কের চেয়েও ছোট।

১০০ বর্গফুটের একটি ঘরে ৮ থেকে ১০ জন লোক বসবাস করে। প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ গণ-সৌচাগার ব্যবহার করে। বস্তির সরু রাস্তার পাশে আবাসিক ভবন আর ফেক্টরী একই ভবনে। যাদের অধিকাংশ দিন আনে দিন খায়। আর প্রতিদিন খাবারের জন্য তাদেরকে বাসার বাইরে যেতে হয়। হ্যাঁ, দারাভি এমনই একটি বস্তি। যার অবস্থান ভারতের অর্থনৈতিক ও বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র মুম্বাই শহরে।

তবে এখানে এখন করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলা যায়। এপ্রিলের প্রথম দিন বস্তিতে প্রথম করোনা শনাক্ত হলেও এখন পর্যন্ত ২ হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৮০ জনের। একদিনে সর্বোচ্চ ৪৩ জন আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড থাকলেও জুন মাসে তৃতীয় সপ্তাহে তা ১৯ জনে নেমে আসে।

[caption id="" align="aligncenter" width="624"]Dharavi আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনে নেয়া হচ্ছে[/caption]

শহর কর্তৃপক্ষ বলছে তারা শনাক্ত করছে, পরীক্ষা করছে এবং সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যাপকভাবে আইসোলেশন করা হচ্ছে। তাপমাত্রা মাপার ক্যাম্প করা হয়েছে, ঘরে ঘরে গিয়ে মোবাইল টিম কাজ করেছে। পিপিই পড়ে গরমের মধ্যে রাতদিন কাজ করা হয়েছে। এসব ক্যাম্পে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে ক্রিনিং করা হয়েছে।

বস্তিতে মাত্র ১১ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা হলেও এখনও আলামত ছাড়াও অনেকে করোনা সংক্রমিত আছে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে মুম্বাইতে পিক টাইম আসলেও শহর কর্তৃপক্ষ করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবে বলেও জানায়। বস্তিতে কম মৃত্যুর পিছনেও আক্রান্তদের মধ্যে অনেক বেশি তরুণ রোগী থাকার কথাও বলছে অনেকে। তাছাড়া কঠোরভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে বাসায় বাসায় খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

[caption id="" align="aligncenter" width="624"]Dharavi বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে[/caption]

অস্কার বিজয়ী ছবি স্লামডগ মিলিয়নের মাধ্যমে বিশ্বের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ বস্তিটি। তাছাড়া বেসরকারী ডাক্তাররা ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেছেন। বস্তিটিতে প্রায় ৫ হাজার ছোট ফ্যাক্টরি এবং ১৫ হাজার ওয়ার্কশপ রয়েছে। এটা মুন্বাইয়ের প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাত করণের অন্যতম কেন্দ্রও।

তবে প্রশ্ন থেকে যায়। যেখানে পানি ক্রয় করে খেতে হয় সেখানে কি মানুষ হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি পাবে? ফ্যাক্টরি থেকে কাজ হারানো মানুষ কি চাকরি পাবে? আর কতদির এভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে বস্তিটি লকডাউন করে রাখা সম্ভব হবে? আর কত দিন স্বেচ্ছাসেবকরা এভাবে সেবা দিয়ে যাবে?

স্বোচ্ছাসেবকদের প্রধান দিভাগকার বলেন, এ যুদ্ধ এখানো শেষ হয় নি। যে পর্যন্ত এ ভাইরাস আমাদের ছেড়ে না যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App