প্রিন্ট: ১৯ মে ২০২৪, ০৮:৪০ পিএম
আরো পড়ুন
রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিচার দাবি হেগের আদালতে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ০১:০৭ পিএম
রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধে রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের দাবি জানিয়ে এক বাংলাদেশি-আমেরিকানের পাঠানো আবেদন ও তথ্য-উপাত্তের প্রাপ্তি স্বীকার করেছে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
গত ১৭ অক্টোবর নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ১৬ জন বিচারকের কাছে ওই আবেদন পাঠায় বাংলাদেশি-আমেরিকান তারিক জামান পরিচালিত মানবাধিকার সংস্থা ‘সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশন’।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে কার্যক্রম চালানো মানবাধিকার সংস্থা ‘সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশনের’ প্রেসিডেন্ট ও চিফ কাউন্সিলর তারিকের কাছে ওই আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করে একটি চিঠি পাঠিয়েছে ওই আদালতের প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য-উপাত্ত ইউনিট।
গত ৩০ অক্টোবর হেগের আদালতের প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য-উপাত্ত ইউনিটের প্রধান মার্ক পি ডিলন স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ওই আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় বলে জানান তারিক জামান।
তারিকের আবেদনে বলা হয়, গত ৬৫ বছরে মিয়ানমার বাহিনীর বর্বরতায় এক কোটি রোহিঙ্গা নিহত এবং প্রায় তিন কোটি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।সর্বশেষ গত ২৫ অগাস্ট থেকে শুরু নৃশংসতার কারণে আরও ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। যারা এখনও বসতভিটা আকড়ে রয়েছে, তাদের ওপর চলছে মিয়ানমার বাহিনীর পাশবিকতা।
এসব তথ্য ও সাম্প্রতিক নৃশংতার কিছু তথ্য-উপাত্ত পাঠিয়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারের দাবি জানানো হয় আবেদনে।
আবেদনটির প্রাপ্তি স্বীকার পত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর অফিসের তথ্য-উপাত্ত ইউনিট বলছে, “প্রাপ্ত আবেদনপত্র যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই কার্যালয়ের জনসংযোগ রেজিস্ট্রারে তা নথিভুক্ত হয়েছে।
হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্বরতার বিচার দাবিতে পাঠানো আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার।
“ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের রোম সনদ অনুযায়ী যথাযথভাবে তা আমলে নেওয়ার বিষয় বিবেচনা করা হবে। তবে এটি মনে রাখতে হবে যে, এই প্রাপ্তি স্বীকারের অর্থ এই নয়, আবেদন অনুযায়ী তদন্ত শুরু করা হয়েছে; কিংবা এই প্রসিকিউটর অফিস থেকে তদন্ত শুরু করা হবে।”একইসঙ্গে আবেদনটি আমলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে তা বিস্তারিতভাবে লিখিত আকারে আবেদনকারীকে জানানো হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো তথ্য-উপাত্তের কপি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধিকেও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারিক জামান।
তিনি বলছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর সাম্প্রতিক দমন-পীড়নের পর মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে চীন আর ভারত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ১৪.১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে।
হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশনের আবেদন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তার আবেদন আমলে নেওয়া হলে সেখানে মামলা পরিচালনায় সবার সর্বাত্মক সহায়তা কামনা করেন তারিক।এর আগে নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী মোহাম্মদ কাইয়ুমের দায়ের করা আলাদা একটি অভিযোগপত্রও পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ওই আবেদনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের ষড়যন্ত্রে লিপ্তদের বিচার চাওয়া হয়েছে।
দুটি আবেদনেই রোহিঙ্গাদের সসম্মানে বসতভিটায় ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরির দাবি জানানো হয়েছে।
সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন
মন্তব্য করুন
রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিচার দাবি হেগের আদালতে
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০১৭, ০১:০৭ পিএম
রোহিঙ্গা নিপীড়ন বন্ধে রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের বিচারের দাবি জানিয়ে এক বাংলাদেশি-আমেরিকানের পাঠানো আবেদন ও তথ্য-উপাত্তের প্রাপ্তি স্বীকার করেছে হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
গত ১৭ অক্টোবর নেদারল্যান্ডের হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ১৬ জন বিচারকের কাছে ওই আবেদন পাঠায় বাংলাদেশি-আমেরিকান তারিক জামান পরিচালিত মানবাধিকার সংস্থা ‘সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশন’।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সিতে কার্যক্রম চালানো মানবাধিকার সংস্থা ‘সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশনের’ প্রেসিডেন্ট ও চিফ কাউন্সিলর তারিকের কাছে ওই আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করে একটি চিঠি পাঠিয়েছে ওই আদালতের প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য-উপাত্ত ইউনিট।
গত ৩০ অক্টোবর হেগের আদালতের প্রসিকিউটর কার্যালয়ের তথ্য-উপাত্ত ইউনিটের প্রধান মার্ক পি ডিলন স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে ওই আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার করা হয় বলে জানান তারিক জামান।
তারিকের আবেদনে বলা হয়, গত ৬৫ বছরে মিয়ানমার বাহিনীর বর্বরতায় এক কোটি রোহিঙ্গা নিহত এবং প্রায় তিন কোটি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে।সর্বশেষ গত ২৫ অগাস্ট থেকে শুরু নৃশংসতার কারণে আরও ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। যারা এখনও বসতভিটা আকড়ে রয়েছে, তাদের ওপর চলছে মিয়ানমার বাহিনীর পাশবিকতা।
এসব তথ্য ও সাম্প্রতিক নৃশংতার কিছু তথ্য-উপাত্ত পাঠিয়ে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিচারের দাবি জানানো হয় আবেদনে।
আবেদনটির প্রাপ্তি স্বীকার পত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউটর অফিসের তথ্য-উপাত্ত ইউনিট বলছে, “প্রাপ্ত আবেদনপত্র যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এই কার্যালয়ের জনসংযোগ রেজিস্ট্রারে তা নথিভুক্ত হয়েছে।
হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে বর্বরতার বিচার দাবিতে পাঠানো আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকার।
“ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের রোম সনদ অনুযায়ী যথাযথভাবে তা আমলে নেওয়ার বিষয় বিবেচনা করা হবে। তবে এটি মনে রাখতে হবে যে, এই প্রাপ্তি স্বীকারের অর্থ এই নয়, আবেদন অনুযায়ী তদন্ত শুরু করা হয়েছে; কিংবা এই প্রসিকিউটর অফিস থেকে তদন্ত শুরু করা হবে।”একইসঙ্গে আবেদনটি আমলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হলে তা বিস্তারিতভাবে লিখিত আকারে আবেদনকারীকে জানানো হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো তথ্য-উপাত্তের কপি জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল, হোয়াইট হাউজ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধিকেও দেওয়া হয়েছে বলে জানান তারিক জামান।
তিনি বলছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর সাম্প্রতিক দমন-পীড়নের পর মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে চীন আর ভারত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের ১৪.১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করেছে।
হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো সেইফ রাইজ ফাউন্ডেশনের আবেদন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তার আবেদন আমলে নেওয়া হলে সেখানে মামলা পরিচালনায় সবার সর্বাত্মক সহায়তা কামনা করেন তারিক।এর আগে নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী মোহাম্মদ কাইয়ুমের দায়ের করা আলাদা একটি অভিযোগপত্রও পেয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। ওই আবেদনে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনের ষড়যন্ত্রে লিপ্তদের বিচার চাওয়া হয়েছে।
দুটি আবেদনেই রোহিঙ্গাদের সসম্মানে বসতভিটায় ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরির দাবি জানানো হয়েছে।