মায়ানমার সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ ছিনিয়ে নেওয়ার দাবি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। রাখাইন ছাড়াও চীন ও ভারত সীমান্ত ঘেষা একাধিক রাজ্যের বেশিরভাগ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেখানকার বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো।

আরাকান আর্মি (এএ) বলেছে, তারা রাখাইনের ১৭টি শহরের অন্তত ১৫টি এবং চিন রাজ্যের পালেতওয়া শহরের দখল সামরিক বাহিনীর কাছ ছিনিয়ে নিয়েছে। এই দুই রাজ্যে সেনাবাহিনীর অন্তত ১৪২টি সামরিক চৌকির দখলও নিয়েছে তারা। খবর ইরাবতির।

এছাড়া দেশটির দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় স্যাগাইং অঞ্চলে ভারত সীমান্ত ঘেষা শহর খামপাতও দখল করেছে সেখানকার বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো। শহরটির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ২০০ সেনা লড়াই করছে। বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে স্থল ও আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী।

উত্তর রাখাইনের ম্রাউক ইউ, পাকতাও ও মংডুতে এবং দক্ষিণ চিনের পালেতওয়াতে সামরিক বাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষ চলছে। গত বুধবার ম্রাউক ইউ শহরের কোয়ে থাউং গির্জার কাছে আরাকান আর্মি ও সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এই সংঘাতে জান্তা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্যের প্রাণহানির ঘটে। পরে বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা আর্মি।

অং সান সুচির রাজনৈতিক দল এনএলডি নির্বাচনে জয়ের পর দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের ঠিক আগে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। তারপর থেকেই দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাত শুরু হয়েছে দেশটির বেসামরিক জনগণ ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর। সম্প্রতি দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জোট গড়ে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করেছে।

দেশটির কয়েকটি ফ্রন্টে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের হামলায় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বিদ্রোহীদের কাছে নিজেদের ঘাঁটি ও নিরাপত্তা চৌকির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে জান্তা বাহিনী। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট নামের একটি জোট গঠন করে গত অক্টোবর থেকে মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে হামলা শুরু করে। দেশটির উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলীয় চীন সীমান্ত লাগোয়া একাধিক শহর ও সামরিক নিরাপত্তা চৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহী জোটের সদস্যরা।