×

আন্তর্জাতিক

গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটে গাধার মাংস খাচ্ছেন অনেকে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:২৫ পিএম

গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটে গাধার মাংস খাচ্ছেন অনেকে

গাজায় ত্রাণের জন্য লাইন

টানা দুই মাস ধরে গাজায় আগাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। আর এ কারণে অবরুদ্ধ উপত্যাকাটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। সংকট এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে, অধিবাসীরা সামান্য একটি রুটির জন্য ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছে।

গাজায় পরিবারের সদস্যদের ক্ষুধা মেটাতে বাধ্য হয়ে গাধার মাংস খাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। খবর রয়টার্সের।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, চলমান সংঘাতের ফলে সামান্য একটি রুটির জন্যও অনেকে ভিক্ষা করছে। স্বাভাবিকের চেয়ে ৫০ গুণ বেশি দাম দিয়ে একটি মটরশুটির কৌটা কেনার নজির সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের খাবারের জোগান দিতে গাধা জবাই করে খাওয়ানোর কথা জানিয়েছেন অবরুদ্ধ গাজার অধিবাসীরা।

ইসরায়েলের অবিরাম হামলার কারণে খাদ্য সহায়তার ট্রাকগুলো ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বেশিরভাগ অংশেই পৌঁছাতে পারছে না। রাফা সীমান্তের কাছাকাছি সামান্য কিছু খাদ্য সহায়তা দেয়া হলেও বেশিরভাগ গাড়িবহরের চলাচল এবং ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় (ওসিএইচএ) বৃহস্পতিবার বলেছে, মিসরের সীমান্তের কাছে রাফাহ এলাকায় সীমিত সাহায্য বিতরণ করা হচ্ছে। সেখানে গাজার মোট ২৩ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক এখন বসবাস করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওসিএইচএ বলছে, তীব্র সংঘাত এবং প্রধান সড়কে চলাচলে ইসরায়েলের দেয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে গাজা উপত্যকার বাকি অংশে সাহায্য বিতরণ অনেকাটাই বন্ধ হয়ে গেছে।’

গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত আবদেল-আজিজ মোহাম্মদ (৫৫) বলেন, ‘সাহায্য করা হচ্ছে আমরা এটি শুনেছি, কিন্তু আমরা কোন সাহায্য পাইনি।’

বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর আবদেল-আজিজ মোহাম্মদ ও তার পরিবার এবং অন্য ৩জনসহ প্রায় ৩০ জন উপত্যকার আরও দক্ষিণে বসবাসকারী তাদের স্বজন ও বন্ধুদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। টেলিফোনে তিনি বলেন, ‘আমার একটি বড় বাড়ি, খাবার এবং মিনারেল ওয়াটারে ভরা দুটি ফ্রিজ ছিল। বাড়িতে বিদ্যুৎ সুবিধা ছিল। এই যুদ্ধের দুই মাস পর এখন আমি সামান্য রুটির জন্য ভিক্ষা করছি।’

জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান বৃহস্পতিবার বলেছেন, গাজায় ক্ষুধার্তদের জন্য খাবার নিয়ে যাওয়ার সময় তার রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে দিচ্ছে এবং খাবার নিয়ে কাড়াকাড়ি করছে।

গত অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের প্রথম পর্বে উত্তর গাজা অঞ্চলটি ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ব্যাপক আক্রমণের মুখে পড়েছিল। তবে ২৪ নভেম্বর গাজায় সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর সাতদিন পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও সেখানে আবারও তীব্র যুদ্ধ শুরু হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে খুব কমই সেখানকার মানুষ সাহায্য পেয়েছে।

রয়টার্স বলছে, সমস্ত ত্রাণবাহী ট্রাক মিসরের রাফাহ সীমান্ত দিয়ে গাজায় প্রবেশ করার আগে সেগুলো পরিদর্শন করছে ইসরায়েল। গত ২০ অক্টোবর সহায়তা সরবরাহ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল এবং মিসরের মধ্যে অবস্থিত নিতজানা ক্রসিংয়ে ট্রাকগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। এর ফলে কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

উত্তর গাজার জাবালিয়ার সাংবাদিক ইউসুফ ফারেস বলছেন, গাজায় খাদ্য সংকট এমন পর্যায়ে গেছে যে স্থানীরা অনেকেই গাধা জবাই করে এর মাংস খাওয়া শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে টানা ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল।

ইসরায়েলের হামলায় ইতোমধ্যে নিহতের সংখ্য ১৮ হাজার ৬০০ জন ছাড়িয়ে গেছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App