×

আন্তর্জাতিক

জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারা প্রয়োগ করলেন গুতেরেস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৫৯ পিএম

জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারা প্রয়োগ করলেন গুতেরেস

ছবি: ডেইলি সাবাহ

গাজায় হামাস-ইসরায়েল সংঘাত দুই মাসে গড়ালেও ফিলিস্তিনের গাজায় কমেনি ইসরায়েলের নির্মমতা। নির্বিচারে বোমাহামলা, নিরীহ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা, খাবার ও চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা সবকিছু মিলিয়ে উপত্যকাটিতে পরিস্থিতিকে অমানবিক বলেছে জাতিসংঘ। এমন অবস্থায় বিরল এক পদক্ষেপ নিয়েছেন বিশ্ব সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ সংঘাত অবসানে নিরাপত্তা পরিষদকে সক্রিয় হতে গতকাল বুধবার জাতিসংঘ সনদের ৯৯ ধারার প্রয়োগ করেছেন মহাসচিব।

৯৯ ধারা অনুসারে, জাতিসংঘের মহাসচিবের বিবেচনায় কোনো বিষয় আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হলে তিনি বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদের নজরে এনে বৈঠক আহ্বান করতে পারেন। ২০১৭ সালে মহাসচিবের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে কখনো এ ধারা ব্যবহার করেননি গুতেরেস। এমনকি গত ৩৪ বছরে (১৯৮৯ সালের পর) ধারাটি ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করেননি জাতিসংঘের কোনো মহাসচিব। খবর ডেইলি সাবহ’র।

গাজা পরিস্থিতির অবনতির কারণে এ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপে ঘাটতি দেখছেন মহাসচিক। আর এ কারণেই তিনি ৯৯ ধারা প্রয়োগ করেছেন বলে জানান। নিরাপত্তা পরিষদের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে তিনি বলেন, তাঁর বিশ্বাস আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বর্তমানে যেসব হুমকি রয়েছে, তা ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতি আরও বাড়িয়ে তুলছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১৫। গুতেরেসের ওই চিঠির পর সংযুক্ত আরব আমিরাত এক্সে টুইট করে জানিয়েছে, তারা পরিষদে একটি নতুন খসড়া প্রস্তাব জমা দিয়েছে। প্রস্তাবে গাজায় মানবিক কারণে আবারও দ্রুত সময়ের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের আহ্বান জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে ৯৯ ধারা প্রয়োগের কারণে গুতেরেসের পদক্ষেপকে ভালোভাবে নেয়নি জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাড এরডান। নিরাপত্তা পরিষদের উদ্দেশে লেখা ওই চিঠিকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গুতেরেসের পক্ষপাতমূলক অবস্থানের প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

জাতিসংঘ মহাসচিব যখন ৯৯ ধারা প্রয়োগ করলেন, ঠিক একই সময়ে ইসরায়েলের জন্য আরেক দুঃসংবাদ এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ইসরায়েল ও ইউক্রেনের জন্য নতুন করে নিরাপত্তা সহায়তা তহবিল অনুমোদনের একটি প্রস্তাব আটকে দিয়েছেন মার্কিন সিনেট সদস্যরা। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এসংক্রান্ত একটি বিলে অনুমোদন দেয়ার জন্য রিপাবলিকান সিনেটরদের প্রতি জোর আহ্বান জানিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ গাজার রাফাহ, খান ইউনিস এবং উত্তর গাজার জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরসহ উপত্যকার কয়েক ডজন এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে। পাশাপাশি স্থল অভিযানও চালাচ্ছে ইসরায়েলি সেনারা। ইসরায়েলের বাহিনীর দাবি, গতকাল তারা বেশ কয়েকজন হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের হামলায় ১৭ হাজার ১৭৭ জন নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে শুরুতে হামাসের হামলায় ইসরায়েলের ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়। গাজায় হামাসের সঙ্গে সংঘাতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ইসরায়েলের অন্তত ৮৭ সেনা।

একই সময়ে গাজার পাশাপাশি পশ্চিম তীরেও সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েল। সংঘাতে সেখানেও অন্তত ২৬৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা।

পূর্ব জেরুজালেমের অবৈধ ইহুদি বসতি স্থাপনের অংশ হিসেবে নতুন করে ১ হাজার ৭০০টির বেশি বাড়ি নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল সরকার। পূর্ব জেরুজালেমকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে মনে করেন ফিলিস্তিনিরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App