×

আন্তর্জাতিক

জেরুজালেম: ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলিম ধর্মের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও ইতিহাস

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ০২:৩২ এএম

জেরুজালেম: ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলিম ধর্মের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও ইতিহাস
পৃথিবী জুড়ে যত মানুষ আছে সবাই কোনো না কোনো ধর্মে বিশ্বাসী। হযরত আদম (আ.) থেকে হযরত নুহ (আ.) অবধি যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে তার সত্যতা এবং পরবর্তীতে হযরত নুহ (আ.) থেকে হযরত ইব্রাহিম (আ.) অবধি যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার সত্যতা যাচাই বাছাই করতে গেলে সময় শেষ হয়ে যাবে সঠিক কথ্য জানা যাবে না। তবে ইতিহাসবিদদের মতে, নবী হযরত নুহ (আ.)-এর সময়ে সংঘটিত মহাপ্লাবনের পর তার তিন পুত্র হাম, শাম, ইয়াফেসের মাধ্যমে পৃথিবীতে মানব সভ্যতার পুনর্জাগরণ ঘটে। আবার সেখানে মানব সভ্যতার সূচনা হয়। নুহ (আ.)-এর সময়ের মহাপ্লাবনের পর নুহ (আ.)-এর পুত্র শামের নামে গড়ে ওঠে শামদেশ ও সেমেটিক সভ্যতা। শোনা এবং জানা যাবে হযরত ইব্রাহিম (আ.) থেকে শুরু করে হযরত ইসমাইল (আ.) এবং হযরত ইসহাক (আ.) অবধি ঘটনার তথ্য। জানা যাবে ইহুদি, খ্রিষ্টান ও মুসলিম— এ তিন ধর্মের মানুষের কাছেই ফিলিস্তিন আবেগের জায়গা। ইব্রাহিমীয় তিন ধর্মেই জেরুজালেম নগরীর সমান আবেদন। সবাই একে পবিত্র নগরী ও পুণ্যভূমি বলে বিশ্বাস করে। এ মাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রাচীন এ তিন ধর্মের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও ইতিহাস। এ ছাড়াও পৃথিবীতে তখন বিরাজমান আরো কিছু ধর্ম যার মধ্যে হিন্দু ধর্ম উল্লেখযোগ্য এবং পুরো মহাভারত যারা লিখেছে এবং যারা পড়েছে তারা জানে কী ঘটনা সেখানে বর্ণনা করা হয়েছে। বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। তর্ক নয় বরং আমি যেহেতু ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী সেক্ষেত্রে আলোচনায় সেটাই বেশি ফুটে উঠবে আমার উপস্থাপনায়। প্রাচীন সেমেটিক সভ্যতার সেই শামদেশ বর্তমানে ভেঙে চারটি দেশ— সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন, ফিলিস্তিন-ইসরায়েল এবং আরও চারটি দেশ ইরাক, তুরস্ক, মিশর, সৌদি আরবের অংশ বিশেষ জুড়ে বিস্তৃত ও বিভক্ত। ইসলামে এই অখণ্ড শামকে বলা হয়েছে ‘বরকতময় ভূমি’। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তার বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত। যার পরিপার্শ্বকে আমি করেছি বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরায়েল, আয়াত: ১)। শোনা এবং জানা গেছে কিয়ামতের পর যখন হাশরের ময়দানে পৃথিবীর সব মানুষকে সমবেত করা হবে, তখন তার কেন্দ্রস্থল হবে এই শামভূমি। পৃথিবীর ইতিহাসের শুরু-শেষ এবং মহাপ্রলয় শেষে পুনরুত্থানের পরও বহু ঘটনার সাক্ষী এই শামভূমি। কেনানি জাতিগোষ্ঠীর দেশ এ জেরুজালেম নগরীতে খ্রিষ্টপূর্ব ১৯০০ অব্দে ইরাক থেকে হিজরত করেন নবী ইব্রাহিম (আ.)। এখানেই জন্মগ্রহণ করেন ইব্রাহিম (আ.)-এর দুই স্ত্রীর গর্ভে দুই পুত্র ইসমাইল (আ.) ও ইসহাক (আ.)। দ্বিতীয় স্ত্রী হাজেরা ও প্রথম সন্তান ইসমাইল মক্কা নগরীতে হিজরত করেন এবং সেখানে তার বংশ থেকে দুই হাজার বছর পর জন্মগ্রহণ করেন শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সা.)। অন্যদিকে ফিলিস্তিনে ইব্রাহিম (আ.)-এর অন্য সন্তান ইসহাক (আ.)-এর ঔরস থেকে জন্মগ্রহণ করেন নবী ইয়াকুব (আ.)। হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর জীবদ্দশায়ই জন্মগ্রহণ করেন নাতি ইয়াকুব (আ.) এবং তারই প্রসিদ্ধ উপাধি হচ্ছে ‘ইসরায়েল’। হিব্রু ভাষার এ শব্দটির অর্থ ‘আল্লাহর বান্দা’। কথিত আছে ইসরায়েল তথা ইয়াকুব (আ.)-এর ছিল ১২ সন্তান। এই ১২ সন্তানকেই বলা হয় ‘বনি ইসরায়েল’ অর্থাৎ ‘ইসরাইলের সন্তানরা’। ইসরায়েলের ১২ সন্তানের একজন হচ্ছেন নবী ইউসুফ (আ.) এবং আরেক সন্তানের নাম ইয়াহুদা, যার থেকে উদ্ভব হয়েছে ‘ইহুদি জাতি’। ইব্রাহিম থেকে শুরু করে পরবর্তী দুই হাজার বছরের ইতিহাসে সেখানে এ বংশে আরও অনেক নবীর জন্ম হয়। যেমন হযরত মুসা, হারুন, দাউদ, সোলায়মান এবং সর্বশেষ ইসা (আ.)। বংশ পরম্পরায় এসব নবীর সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইব্রাহিম (আ.) থেকে উৎসারিত তিন ধর্মের বিশ্বাস ও ইতিহাস। ইসলামে আল-আকসা মসজিদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং কুরআনে মিরাজের ঘটনা উল্লেখ করার সময় এই স্থানের নাম নেয়া হয়েছে। ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের কাছেও মসজিদুল আকসা আবেগের জায়গা। কারণ এ মসজিদ ঘিরে তিন ধর্মেরই রয়েছে প্রাচীন ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিকড়ের সম্পর্ক। মসজিদুল আকসা অসংখ্য নবী-রসূলের স্মৃতিধন্য পুণ্যভূমি। এ মসজিদ ঘিরে আছে নবী দাউদ ও সোলায়মান (আ.)-এর রাজ্য শাসনের স্মৃতি, নবী ঈসা (আ.)-এর জন্মের স্মৃতি ও নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ঐতিহাসিক মিরাজ ভ্রমণের স্মৃতি। এই জেরুজালেম নগরীতে আছে ইহুদিদের ধ্বংসপ্রাপ্ত টেম্পল, সেখানেই অবস্থিত খ্রিষ্টানদের পবিত্র গির্জা হোলি সেপালকার ও তাদের পবিত্র ম্যারির কবর। এই আকসা ছিল মুসলমানদের প্রথম কিবলা। নবী দাউদ ও সোলায়মান (আ.)-কে ইহুদিরা তাদের ধর্মীয় পুরোধা হিসেবে স্মরণ করে, নবী ঈসা (আ.)-কে খ্রিষ্টানরা তাদের ধর্মীয় পুরোধা হিসেবে স্মরণ করে। আর মুসলমানরা উপরোক্ত দুই ধর্মের নবীকেও বিশ্বাস করে এবং শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কেও বিশ্বাস করে। বলা যায়, পৃথিবীর বিশাল তিন ধর্মের জনগোষ্ঠীর স্রোতপ্রবাহ ফিলিস্তিনে এসে আছড়ে পড়েছে। তিন সমুদ্রের মোহনা এক জায়গায় আছড়ে পড়লে যেমন সমুদ্র বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, তেমনি আবহমান কাল থেকেই এ পুণ্যভূমি ঘিরে চলছে ক্রমাগত যুদ্ধ, সংঘাত, রক্তপাত ও জুলুম-নির্যাতনের ধারাপাত। তারপর ১৯১৭ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুর্কিস্তান কেন্দ্রিক উসমানি খেলাফতের পরাজয় হলে আল-আকসার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ব্রিটিশদের হাতে। ব্রিটিশরা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ফিলিস্তিনের একাংশে ইহুদিদের মালিকানা প্রদান করে এবং মসজিদুল আকসার দায়িত্ব হস্তান্তর করে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের মিত্র জর্ডানের শাসকের হাতে। তবে ১৯৬৭ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর মসজিদুল আকসার নিরাপত্তার দায়িত্ব ভাগ করে নেয় ইসরায়েল সরকার এবং মসজিদ পরিচালনার ভার প্রদান করে যৌথভাবে ইসলামী ওয়াকফ ট্রাস্টের হাতে। ইসলামের পবিত্র এ ভূমিতে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও নানা কারণে এক অনিঃশেষ যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজমান। যাইহোক ১৮৯৭ সালে জায়োনিস্ট আন্দোলনের নেতা থিউডোর হার্জেল ইহুদিদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি উত্থাপন করেন এবং কল্পিত সে রাষ্ট্রের নাম প্রস্তাব করা হয় ইসরায়েল। তারপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধে উসমানি খেলাফতের পতন হলে উসমানি খেলাফতের মালিকানাধীন ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের দখল নেয় ব্রিটেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আর্থার বেলফোর ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর ফিলিস্তিনে ইহুদিদের অভিবাসনের ঘোষণা দেন। বেলফোর ঘোষণার পর শুরু হয় পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান থেকে ইহুদিদের এনে ফিলিস্তিনে অভিবাসনের ধারাবাহিকতা। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ইহুদিরা ফিলিস্তিনে দখলদার ব্রিটিশদের প্রত্যক্ষ মদদে জায়গা কিনে বসতি স্থাপন করতে থাকে। এ অবস্থায় রাশিয়া থেকে অভিবাসী হয়ে আসা ইহুদি নেতা ডেভিড বেন গুরিয়েন ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তিনি হন ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আরব জনগোষ্ঠী এবং পার্শ্ববর্তী পাঁচটি আরব রাষ্ট্র মিশর, ট্রান্স জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া এবং ইরাক বাহিনী একযোগে ‘ইসরায়েল’ নামক নতুন ইহুদি রাষ্ট্রে আক্রমণ করে। যুদ্ধে আরবরা পরাজিত হয় এবং সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিক ভিটেমাটি হারিয়ে শরণার্থী হয়ে পড়ে। উপরন্তু প্রস্তাবিত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রেরও বড় অংশ দখল করে নেয় ইসরায়েল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন ত্যাগ করার সময় মুসলমানদের নিরঙ্কুশ মালিকানায় থাকা আল-আকসাসহ জেরুজালেমের অধিকার ফিলিস্তিন-ইসরায়েল কাউকেই না দিয়ে এর আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা করে। তবে এ ঘোষণার সময় জাতিসংঘের আইনে আল-আকসা ও জেরুজালেমের মালিকানা এককভাবে ফিলিস্তিনিদের হাতে না থাকলেও তার বাস্তব নিয়ন্ত্রণ এককভাবে মুসলমানদের হাতেই ছিল, পরে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে আল-আকসার নিয়ন্ত্রণ হারায় মুসলমানরা। পবিত্র জেরুজালেম নগরীকে কেন্দ্র করে মুসলমান-ইহুদি সংঘাতের জের ধরে ফিলিস্তিন দুই ভাগ হলেও ইসরায়েল স্বীকৃতি পেয়েছে, কিন্তু ফিলিস্তিন স্বীকৃতি পায়নি এখনো। ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী বিচ্ছিন্ন গাজা উপত্যকা ভিন্ন কারণে মুসলমানদের আবেগে মিশে আছে। নবী ইয়াকুব (আ.) এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেন এবং সেখান থেকে মিশরের মন্ত্রীপুত্র ইউসুফ (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গাজা নগরীতে শহরে জন্মগ্রহণ করেন নবী সোলায়মান (আ.)। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের বহু আগে থেকেই মক্কার কুরাইশ সম্প্রদায় ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দুটি বন্দর নগরীতে ভ্রমণ করত, যার বিবরণ রয়েছে পবিত্র কোরআনে। আমি অধম বান্দা, আমারও মনে ভাবনার উদয় হয়। আমার ভাবনা থেকে কিছু কথা তা হলো আমরা ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলিমরা বলি আমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.)। হিন্দু সম্প্রদায় জানি না কী বলে। যাইহোক কথা সেটা নয়; কথা হলো হযরত ইব্রাহিম থেকে কথিত সেক্রিফাইজ শব্দটি। কারণ তখন সেই থেকেই কিন্তু আমরা মুসলমানরা হজ এবং কুরবানী পালন করে চলছি, অথচ সেক্রিফাইজ কী সেটাই সঠিকভাবে শিখতে পারিনি। যদি ছাড় দেয়া না শিখি বা ছাড় দিতে না পারি তবে মানুষ হয়ে জন্মেছি কেন? ছাড় দেয়া মানে সেক্রিফাইজকে বুঝাতে চেয়েছি। যদিও বাংলা অভিযান অনুযায়ী সেক্রিফাইজ মানে উৎসর্গ, তবুও আমি ছাড় দেয়া শব্দটি বেছে নিয়েছি আলোচনায় সুবিধার জন্য। আমি আমার চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতার প্রেক্ষাপটে নৈতিকতা, মানবতা, মনুষ্যত্ববোধ, দায়িত্ব, কর্তব্য এবং সেক্রিফাইজের উপর আলোকপাত করেছি। মানুষ হিসাবে আমি ছোটবেলা থেকেই কিছুটা ব্যতিক্রম এমনকি আমার নিজ পরিবারের মধ্যেও। সদ্য আমার পরিবারে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা যা ভূমি সংক্রান্ত। এই ভূমির কারণে পরিবারের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে দ্বন্দ্ব যা এখন ঘৃণায় পরিণত হয়েছে। ভাইবোনদের মধ্যে চলছে মান-অভিমান, জীবন যাবে তবু অহংকার ছাড়া যাবে না। ঘৃণা করব তবু ছাড় (সেক্রিফাইজ) দিব না। অথচ হযরত ইব্রাহিমের ধর্মের শুরুটাই ছিল সেক্রিফাইজ কিন্তু তার শেষ এবং পরবর্তী প্রজন্মের শেষ এমনকি আমার নিজ পরিবারের সেক্রিফাইজ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটাই এখন প্রশ্ন? সেই সাথে প্রশ্ন কী হবে অভাগা হামাস, ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলের? কী হবে মানবসভ্যতার যদি আমরা সেই সেক্রিফাইজ করতে না শিখি? বিশ্ব পুণ্যভূমি আজ রক্তাক্ত ও বিধ্বস্ত। বিশ্বমানবতার প্রার্থনা, আমার প্রার্থনা পৃথিবীর সকল মানুষকে ঘিরে আবার জেগে উঠবে নিরাপদ প্রাণের স্পন্দন। অসংখ্য নবী-রসূলের পদধন্য এ ভূমি আবার আনন্দে হাসবে। আসুন সকলে আমরা মহান আল্লাহর কাছে এ দোয়া করি। লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন থেকে, [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App