তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে ৪০টি যুদ্ধবিমান নিয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটিয়েছে চীন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাইওয়ান প্রণালীর আশপাশে দুই দেশের মধ্যে আবারও নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভূখণ্ডটির আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে চীনা বিমানবাহিনীর ৪০টি বিমান প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করা এসব বিমানের বেশিরভাগই তাইওয়ানের দক্ষিণে এবং বাশি চ্যানেলে উড্ডয়ন করে বলেও মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মানচিত্র অনুসারে, আকাশ প্রতিরক্ষা অঞ্চলে প্রবেশ করা এসব চীনা বিমানের মধ্যে অন্তত চারটি বিমান দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করে। এর আগে বুধবার তাইওয়ানের আকাশ প্রতিরক্ষা জোনে চীনের জে-১০ যুদ্ধবিমানসহ ২৮টি বিমান তাইওয়ানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রান্ত দিয়ে উড়ে যায় বলে দাবি করেছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এসব বিমানের বেশিরভাগই আবার বাশি চ্যানেল অতিক্রম করে। এই ধরনের ঘটনাকে বেইজিংয়ের নিয়মিত হয়রানির অংশ বলেও অভিযোগ করেছে তারা।তবে, তবে এ বিষয়ে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনও মন্তব্য করেনি। মূলত চীন স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে তার নিজের এলাকা বলে দাবি করে আসছে। এমনকি প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ভূখণ্ডটিকে দখল করার অঙ্গীকারও করেছে পরাশক্তি এই দেশটি। চলতি বছরের জুনে এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাইওয়ানের এয়ার ডিফেন্স আইডেন্টিফিকেশন জোন (এডিআইজেড) লঙ্ঘন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে চীন। এমনকি ২০২১ সালের তুলনায় এই ধরনের লঙ্ঘনের ঘটনা ২০২২ সালে প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছেছে। আর বেইজিংয়ের এই কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতা চলতি বছরও অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য, তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, দেশটি তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। বরাবরই তাইওয়ানকে নিজেদের প্রদেশ মনে করা বেইজিং একে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে সামরিক তৎপরতা চালিয়ে আসছে। প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালে চীনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতা দখল করার পর তাইওয়ান মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর থেকে তাইওয়ান নিজস্ব সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসলেও বেইজিং তাইওয়ানকে এখনও নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে।