×

আন্তর্জাতিক

‘মানুষ হাফ ও ফুল মার্ডার করা হয়’!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:৩৭ পিএম

‘মানুষ হাফ ও ফুল মার্ডার করা হয়’!

বয়স মাত্র আটারো বছর। এরই মধ্যে পরিচিত হয়ে উঠেছেন মার্ডার করার সুপারি নেয়ার জন্য।

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ক্যানিং থানা এলাকায় গত কয়েক দিন ধরেই ঘুরছিল এক আজব ভিজিটিং কার্ড, যাতে লেখা: ‘মানুষ হাফ ও ফুল মার্ডার করা হয়’! খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

ক্যানিং থানার পুলিশও এমন কার্ড দিয়ে প্রচার করে মানুষ খুনের ‘সুপারি’ নেয়ার ঘটনায় প্রথমে কিছুটা হতচকিত। পরে অবশ্য কার্ডের পিছনের মাথাটিকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, নিজের ছবি, ফোন নম্বর দিয়ে ‘সুপারি কিলিং’-এর ‘বিজ্ঞাপনটি’ প্রচার করছিল বছর আঠারোর ছেলে মোরসেলিম মোল্লা। এলাকায় যার ডাকনাম বুলেট। একইসঙ্গে সে নাকি এলাকায় পোস্টার ছাপিয়েও প্রচার চালিয়েছে।

সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে ক্যানিং থানার সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল ক্যানিংয়ের ধর্মতলা গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোরসেলিম ওরফে বুলেটকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ সময় তার বাড়ি থেকে একটি দেশি বন্দুক, দু’রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু ভিজিটিং কার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেখানেও খুনের কথা লেখা আছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ধৃতকে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেআইনি অস্ত্র পাচারের অভিযোগে গত বছর আগস্টে গ্রেপ্তার হয়েছিল বুলেট। এক বছর আগে ক্যানিংয়ের গোপালপুর পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তিন জনের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রফিকুল সর্দারের ভাগ্নে এই যুবক। ওই খুনের তদন্তে নেমে পুলিশ বুলেটকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিন্তু তখন সে নাবালক হওয়ায় জামিন পেয়ে যায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই কার্যত এলাকার মানুষকে বন্দুক উঁচিয়ে ভয় দেখাত অভিযুক্ত।

কয়েক দিন ধরে এলাকার যে সব মানুষ জমি-বাড়ি নিয়ে সমস্যায় আছেন, যাদের শত্রুর সংখ্যা বেশি, কিন্তু নিজেরা কোনও গোলমালে জড়াতে ভয় পান, এমন লোকজন বেছে তাদের হাতে নিজের বিজ্ঞাপনটি ধরাতে শুরু করেছিল বুলেট। বুলেটের কথায়, “ইচ্ছে হয়েছে, তাই কার্ড ছাপিয়েছি। কাজের প্রচারের জন্য।”

পুলিশের দাবি, জেরায় তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করেছে বুলেট। এসডিপিও ক্যানিং দিবাকর দাস বলেন, “এ ধরনের কোনও ঘটনা সে আগে করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোথা থেকে এই ভিজিটিং কার্ড, পোস্টার ছাপানো হল, তার খোঁজ চলছে।”

বুলেটের মা মুর্শিদা মোল্লা বলেন, “আমার ছেলে নির্দোষ। বাড়িতে একটি ছোট্ট দোকান চালায়। এই ধরনের কাজে যুক্ত নয়।” তবে এলাকার অনেকেই জানান, বুলেট মানুষকে খুনের হুমকি দিত। প্রতিবাদের সাহস তাদের ছিল না বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

একাংশের আবার দাবি, বুলেটের মানসিক অবস্থা স্থিতিশীল নাও হতে পারে। বুলেট তা না হলে বুক ফুলিয়ে খুন করার কথা বলে বেড়াত কেন?

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App