×

আন্তর্জাতিক

মনিপুরে ধর্ষকের বাড়িতে আগুন দিলেন আদিবাসী নারীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২৩, ১০:১৭ এএম

মনিপুরে ধর্ষকের বাড়িতে আগুন দিলেন আদিবাসী নারীরা
ভারতের মনিপুরে দুই আদিবাসী নারীকে প্রকাশ্যে ধর্ষণ এবং রাস্তায় নগ্ন করে হাটানোর ঘটনায় নিপীড়ন কারীদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছেন নারীরা। মনিপুর রাজ্য পুলিশ শুক্রবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে। আদিবাসী নারীরা ধর্ষণকাণ্ডের মূল হোতার বাড়িতে আগে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর: রয়টার্সের। গত ৩ মে ভারতের মনিপুর রাজ্যে সংখ্যাগুরু মেইতেই ও সংখ্যালঘু কুকিদের মধ্যে রক্তাক্ত জাতিগত সংঘাত এবং হত্যা-লুণ্ঠন-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ শুরু হয়। এর পরের দিন ৪ মে এ ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনা ঘটে। তবে এই ঘটনার বীভৎসতা ও নৃশংসতা ঠিক কতখানি ছিল, তা সারা দেশ জানতে পারল আড়াই মাস পর। গত বুধবার আদিবাসী নারীদের নিপীড়নের একটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নতুন করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে বিজেপিশাসিত এ রাজ্যে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার তিব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয়ার পর সেদিনই গ্রেপ্তার হন এ অপরাধের মূল হোতা। এর আগে জাতিগত দাঙ্গায় মনিপুরে কমপক্ষে ১২৫ জন নিহত এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।এ ঘটনায় ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। রাজ্য পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হেমন্ত পান্ডে জানান, মূল হোতাসহ এ পর্যন্ত ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।ভিডিও দেখে আরও ৩০ জনকে খুঁজছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, এটা জাতির জন্য একটি লজ্জাজনক ঘটনা।দ্রুত আসামিদের আসামিদের গ্রেফতারেরও নির্দেশ দেন তিনি। উল্লেখ্য, গত বুধবার থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতের মণিপুরের রাস্তায় কুকি-জোমি সম্প্রদায়ের দুই নারীকে নগ্ন করে একদল লোক রাস্তায় হাঁটিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং তাদের ক্রমাগত যৌন নিপীড়ন করা হচ্ছে। আদিবাসী ওই দুই নারীর একজনের বয়স ছিল মাত্র কুড়ি-বাইশ, অন্যজনের চল্লিশের কাছাকাছি। ভিডিওতে দেখা যায়, জনতার মধ্যে অনেকেই ওই নারীদের শরীরের স্পর্শকাতর অংশ খামচে ধরছে। এরপর তাদের জোর করে একটি ক্ষেতের দিকে টেনে নিয়ে যেতেও দেখা যায়। পরে ১৮ মে ই ঘটনার যে এফআইআর করা হয়েছে, তাতে ভিক্টিমরা অভিযোগ করেছেন তুলনায় কম বয়সী মেয়েটিকে প্রকাশ্য দিবালোকে অত্যন্ত নৃশংসভাবে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার দিন কাংপোকপি জেলায় তাদের গ্রাম যখন জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছিল, তখন প্রাণে বাঁচতে তারা পরিবারের কয়েকজন মিলে কাছের জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পথে থৌবাল জেলার একটি পুলিশ ভ্যান তাদের উদ্ধার করে গাড়িতে তুলে নেয়। তবে পুলিশ যখন তাদের থানায় নিয়ে যাচ্ছিল, তখন থানা থেকে মাত্র দু’কিলোমিটার দূরে একদল উত্তেজিত জনতা তাদের ঘিরে ধরে। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ওই বিক্ষুব্ধ জনতা তাদের পুলিশের হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু ভিক্টিম দুইজন নারীর এক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, পুলিশ আসলে হামলাকারীদের সঙ্গেই ছিল। ওরা বাড়ির বেশ কাছেই প্রথমে আমাদের গাড়িতে তুলে নেয়, তারপর গ্রামের একটু বাইরে গিয়েই রাস্তায় ছেড়ে দেয়। পুলিশই ওই জনতার হাতে আমাদের তুলে দিয়েছিল। অর্থাৎ ওই ভিক্টিম দাবি করেছেন, পুলিশের কাছ থেকে তাদের ছিনিয়ে নেয়া হয়নি – পুলিশই ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ওই হামলাকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে।এরপর জোর করে নারীদের সব জামাকাপড় খুলতে বাধ্য করে। তাদের রাস্তা দিয়ে নগ্ন করে হাঁটানো হয়, এরপর পাশের ধানক্ষেতে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন চালানো হয়।  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App