×

আন্তর্জাতিক

রাশিয়া কি সত্যিই ইউক্রেনে পরমাণু বোমা ব্যবহার করবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৩, ০৮:২৩ পিএম

রাশিয়া কি সত্যিই ইউক্রেনে পরমাণু বোমা ব্যবহার করবে

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

রাশিয়া কি সত্যিই ইউক্রেনে পরমাণু বোমা ব্যবহার করবে? প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেন সেনা অভিযান শুরুর পর থেকেই এই প্রশ্ন অনেকেই করছেন।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন এখন এই সম্ভাবনা নাকচ করছেন না।

“আমার ভয় পুতিন হয়তো কৌশলগত (ট্যাকটিকাল) পরমাণু বোমা ব্যবহার করবেন,” মার্কিন প্রেসিডেন্ট সোমবার বলেন। তিনি বিশ্বাস করেন এই বিপদ এখন শুধু “বাস্তব”।

আমি জানিনা প্রেসিডেন্ট বাইডেন 'প্রোফাইল' নামের রুশ ম্যাগাজিনটি পড়েন কিনা। যদি তিনি পড়েন, তাহলে বোঝা যাবে কেন তিনি এখন এমন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়লেন।

গত সপ্তাহে প্রোফাইল ম্যাগাজিনে সুপরিচিত একজন রুশ পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ সের্গেই কারাগোনভের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে। মি. কারাগোনভ সরকারের উঁচু মহলের ঘনিষ্ঠ।

যে যুক্তি তিনি তার লেখায় তুল ধরেছেন তা অনেকটা এরকম – “পশ্চিমা দেশগুলোর সংকল্প ধূলিসাৎ” করতে রাশিয়াকে এখন শক্তভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে যে প্রয়োজনে পরমাণু বোমা ব্যবহারে তারা প্রস্তুত এবং সে কারণে পরমাণু বোমা প্রয়োগের বর্তমান শর্তাবলী শিথিল করতে হবে।

“শত্রুদের অবশ্যই বুঝিয়ে দিতে হবে যে তাদের অতীত এবং বর্তমানের সমস্ত আগ্রাসী তৎপরতার বদলা হিসাবে আমরা আগে-ভাগেই আঘাত করতে প্রস্তুত। এতে বিশ্বব্যাপী এবং পারমাণবিক যুদ্ধের ঝুঁকি এড়ানো যাবে।

“কিন্তু তারপরও যদি তারা না থামে তখন কি হবে? তখন আমাদের কতগুলো দেশে বেশ কতগুলো টার্গেটে আঘাত করতে হবে যাতে যেসব লোকের বোধ-বুদ্ধি এবং যুক্তি লোপ পেয়েছে তাদের যেন হুঁশ ফেরে," লিখেছেন মি. কারাগোনভ।

গত বছর থেকে আমরা মস্কোর কাছ থেকে পরমাণু বোমা নিয়ে অনেক কথা , অনেক হুমকি-ধামকি শুনছি।

প্রেসিডেন্ট পুতিন নিজে কদিন আগে নিশ্চিত করেছেন যে রাশিয়া বেলারুশে ট্যাকটিকাল পরমাণু বোমা মোতায়েন শুরু করেছে, এবং প্রথম চালান সেদেশে পৌঁছে গেছে।

মি. পুতিন বলেন যারা “আমাদের কৌশলগত পরাজয়ের জন্য উন্মুখ” তাদের হুঁশ ফেরাতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর আরেকটি যে প্রশ্ন আমাদের তাড়া করছে তা হলো – হচ্ছেটা কী? এর পরিণতি কী?

পশ্চিমা দেশগুলার বিভিন্ন টার্গেটে পারমাণবিক হামলার যে ধারণা মি. কারাগোনভ দিয়েছেন তা নিয়ে হয়তো অনেক রুশ শিক্ষাবিদ এবং গবেষক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এবং তারা মনে করছেন এখন তাদের চুপ করে থাকা ঠিক হবে না।

এ ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে যদিও রুশ মিডিয়ার ওপর শক্ত সরকারি নিয়ন্ত্রণ চাপানো হয়েছে, তারপরও কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর কোনো কোনো মিডিয়ায় বিতর্ক-আলোচনা এখনো সম্ভব। বিশেষ করে বিষয় যখন পারমাণবিক যুদ্ধ।

অথবা এমনও হতে পারে পশ্চিমা দেশগুলোর নজর কাড়তে সচেতনভাবে এই বিতর্ক চলতে দেওয়া হচ্ছে যাতে মনে হয় মি. কারাগোনভ যেন একজন ‘দুষ্ট পুলিশ’ আর মি. পুতিন যেন একজন বিবেচক এবং যুক্তিবাদী নেতা।

এমন ধারণা হয়তো কাজ করছে যে পশ্চিমারা হয়তো মনে করবে মি. পুতিন নিজে তো আগে-ভাগে তাদের টার্গেট করে পারমাণবিক হামলার কোনো কথা বলেননি, সুতরাং তার সাথে শান্তি স্থাপনই বিবেচকের মত কাজ হবে। তা না হলে, কারাগোনভের মত কট্টরপন্থীরা হয়তো পরমাণু বোমার সুইচে চাপ দিয়ে দেবে।

একটি বিষয় পরিষ্কার : একদিকে পশ্চিমা বিরোধী বাগাড়ম্বর রাশিয়াতে বাড়ছে, এবং সেইসাথে ইউক্রেন তাদের পাল্টা হামলা শুরু করেছে। ফলে, পরমাণু বোমার ব্যবহার নিয়ে কথাবার্তা সহসা বন্ধ হচ্ছে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App