×

আন্তর্জাতিক

আল-কাদির ট্রাস্ট মামলা কী যার জন্য ইমরান গ্রেপ্তার হলেন?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মে ২০২৩, ০৫:০৬ পিএম

আল-কাদির ট্রাস্ট মামলা কী যার জন্য ইমরান গ্রেপ্তার হলেন?

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকে শুরু হয় তার সমর্থকদের বিক্ষোভ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

গতকাল মঙ্গলবার আল-কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পৃথক মামলার শুনানিতে অংশ নিতে রাজধানী ইসলামাবাদের হাইকোর্টে গেছিলেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান। হাইকোর্ট চত্বর থেকে তাকে আধা সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্সের সহায়তায় গ্রেপ্তার করে দেশটির ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। খবর আলজাজিরার।

আল-কাদির ট্রাস্টের নেতৃত্বে আছেন ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবি। এনএবি গতকাল (মঙ্গলবার) এক বিবৃতিতে বলে, ট্রাস্টে ‘দুর্নীতির অপরাধে’ সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহও নিশ্চিত করেন যে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা এনএবির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে পিটিআই প্রধানকে।

আল-কাদির ট্রাস্ট মামলা কী

ইমরান খান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তানে নতুন জোট সরকার গঠিত হয়। এই সরকার গত বছরের জুনে অভিযোগ করে, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণে ইমরান খান ও তার স্ত্রী তাদের ট্রাস্টের জন্য পাকিস্তানের অন্যতম আবাসন ব্যবসায়ী মালিক রিয়াজের কাছ থেকে কোটি কোটি রুপি মূল্যের জমি পেয়েছেন।

এনএবির অভিযোগ, ইমরান খানের পিটিআই সরকার আবাসন ব্যবসায়ী মালিক রিয়াজের সঙ্গে একটি চুক্তি করে, যাতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের ২৩৯ মিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। চুক্তিটি ছিলো ‘দেয়া-নেয়া’ ধরনের।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে কালো টাকা সম্পর্কিত এক তদন্তের জেরে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির কাছে ২৩৯ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ হস্তান্তর করতে রাজি হন। যুক্তরাজ্যের এই মামলার সঙ্গে ইমরান খান ও তার সরকার সরাসরি জড়িত ছিল না।

‘আইনি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়নি’

গত বছর এনএবির আইনে পরিবর্তন আনা হয়। এ কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানের লাহোরভিত্তিক আইনজীবী আবুজার সালমান নিয়াজি বলেন, ইমরান খানের গ্রেপ্তার বেআইনি বলে তার মনে হয়।

সালমান নিয়াজির মতে, এনএবির আইনে যে সংশোধনী আনা হয়েছে, সে অনুযায়ী, অভিযোগ ওঠা ব্যক্তিকে একাধিক নোটিশ দিতে হবে। যদি ব্যক্তি এনএবিকে সহযোগিতায় বারবার ব্যর্থ হন, ইচ্ছাকৃতভাবে গ্রেপ্তার এড়াতে চেষ্টা করেন, তাহলেই শুধু পরোয়ানা জারি করা যেতে পারে।

আইনজীবী সালমান নিয়াজি বলেন, আইন সংশোধনের আগে এনএবির চেয়ারম্যানের যেকোনো অভিযোগ ওঠা ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির লাগামহীন ক্ষমতা ছিল। কিন্তু আইন পরিবর্তনের পর তার সুযোগ নেই।

ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তাঁর সমর্থকেরা। গতকাল দেশটির করাচি শহরে এনএবির সাবেক প্রসিকিউটর ইমরান শফিক বলেন, অভিযোগ ওঠা ব্যক্তির বারবার গরহাজিরার ক্ষেত্রে তাকে গ্রেপ্তারের অধিকার এনএবির আছে। তবে ইমরান খানকে যে মামলায় গ্রেপ্তার করা হলো, সেটিকে দুর্বল মনে হচ্ছে।

ইসলামাবাদভিত্তিক আইনজীবী ইমরান শফিক বলেন, এনএবি বলেছে, তারা ইমরান খানকে একাধিকবার নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু এই নোটিশের প্রতি ইমরান খান কর্ণপাত করেননি। তবে এনএবির যে সংশোধিত আইন, সে অনুসারে, কর্তৃপক্ষকে প্রথমে অভিযোগের তদন্ত শেষ করতে হবে। যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাকে সেই তদন্তের প্রতিবেদন দিতে হবে।

ইমরান শফিক বলেন, নতুন আইন জামিন পাওয়ার বিষয়টিকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। ফলে তা ইমরান খানকে সহায়তা করতে পারে।

লাহোরভিত্তিক আইনজীবী আসাদ রহিম খান বলেন, ইমরান খানের গ্রেপ্তারের সঙ্গে আইনের কোনো সম্পর্ক নেই। এখানে যা আছে, তা হলো ভয়ভীতি ও দমন-পীড়ন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App