×

আন্তর্জাতিক

কোন দিকে যাচ্ছে ইউক্রেনে রাশিয়া-নেটোর ছায়াযুদ্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:০২ পিএম

কোন দিকে যাচ্ছে ইউক্রেনে রাশিয়া-নেটোর ছায়াযুদ্ধ

ছবি: সংগৃহীত

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই সমর বিশেষজ্ঞদের অনেকে এই সংঘাত আরো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন। তারা বলছেন মস্কো তার প্রতিবেশী ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালালেও, এই যুদ্ধ আসলে রাশিয়া ও পশ্চিমা বিশ্বের মধ্যে প্রক্সি ওয়ার বা ছায়া-যুদ্ধ।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ কয়েকটি দেশের পক্ষ থেকে ইউক্রেনে অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্র পাঠানোর ঘোষণা দেওয়ার পর খোদ রাশিয়ার পক্ষ থেকেও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতের হুমকি দেওয়া হয়েছে। খবর বিবিসির।

সম্প্রতি উভয়পক্ষের মধ্যে এরকম এক সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে যেখানে একটি রুশ যুদ্ধবিমানের সাথে সংঘর্ষের পর পাইলট-বিহীন একটি মার্কিন ড্রোন কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়।

এর জের ধরে পশ্চিমা বিশ্বের সাথে রাশিয়ার ছায়া-যুদ্ধ কি সম্মুখসমরে রূপ নিতে পারে?

রাশিয়া ও নেটোর ছায়া-যুদ্ধ মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমরবিদ ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী বলছেন রণক্ষেত্রে রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের সংঘাত হলেও, এই যুদ্ধ আসলে নেটো তথা পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে রাশিয়ার পরোক্ষ যুদ্ধ।

তিনি বলেন, এই যুদ্ধ শুরু হয়েছে ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি যখন রুশ বাহিনী ইউক্রেনের সুনির্দিষ্ট সীমারেখা অতিক্রম করে ইউক্রেনের ভূখণ্ডে এবং তার আকাশ সীমায় হামলা চালায়। কিন্তু এর অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে নেটো জোটের সদস্য দেশগুলো ইউক্রেনের পক্ষে সংঘাত চালিয়েছে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ডনবাস এলাকায়।

এই অঞ্চলে রুশ ভাষাভাষী অনেকেই ২০১৪ সালে ইউক্রেন সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। এসময় রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রাইমিয়া অঞ্চল দখল করে নেয়।

“সেই সময় থেকে যুদ্ধ চলছে। আমরা সেই যুদ্ধ সম্পর্কে খুব একটা জানি না। কারণ পাশ্চাত্যের সংবাদ মাধ্যমগুলো এই যুদ্ধের ব্যাপারে খুব একটা খবর দেয়নি। কিন্তু রুশ সংবাদ মাধ্যমে তার খবরাখবর রোজই প্রচারিত হয়েছে,” বলেন মাহমুদ আলী।

তিনি বলেন, “এই যুদ্ধটি চলছে ২০১৪ সাল থেকে, যখন থেকে নেটো জোট ইউক্রেনীয় বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, অস্ত্র এবং গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে চলেছে। কাজেই এই সংঘাত রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের হলেও, বহু বছর ধরেই নেটো জোট ইউক্রেনকে মদত যুগিয়েছে, আর সেকারণেই আমরা এটিকে একটি পরোক্ষ যুদ্ধ বলে বর্ণনা করছি।”

মুখোমুখি সামরিক সংঘাত কিন্তু এই সংঘাত শেষ পর্যন্ত রাশিয়া-নেটো ছায়া-যুদ্ধের মধ্যে সীমিত থাকে কি না সে বিষয়ে অনেক বিশেষজ্ঞ সংশয় প্রকাশ করছেন। এরকম সরাসরি যুদ্ধের হুমকি এসেছে ক্রেমলিন থেকেও। যুক্তরাষ্ট্রসহ নেটো জোটের বিভিন্ন দেশ যখনই কিয়েভে অস্ত্র পাঠানোর কথা ঘোষণা করেছে, তখনই মস্কো এই জোটের ওপর পাল্টা আক্রমণের ব্যাপারে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে।

সম্প্রতি এই উত্তেজনায় নতুন করে ঘি ঢেলেছে রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এবং আমেরিকার একটি ড্রোনের সংঘর্ষের ঘটনা। বিশ্লেষকরা বলছেন ইউক্রেন যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া মুখোমুখি হলে কী বিপদ হতে পারে এই সংঘর্ষ তারই ইঙ্গিত দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ মনে করেন- সরাসরি এই সংঘাতের ঘটনা উদ্বেগজনক হলেও, দুই পক্ষ এই উত্তেজনাকে বেশি দূর যেতে দেবে না।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়াকে পরস্পরের সামরিক যানের ওপর আক্রমণ চালাতে দেখা যায়নি। স্নায়ু-যুদ্ধ এবং তার পরবর্তী সময়েও এই দুটো দেশ তাদের সামরিক লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত করার বিষয়টি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছে। সবসময়ই এধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

“এদিক থেকে চিন্তা করলে সাম্প্রতিক সংঘাতের বিষয়টি উদ্বেগজনক। কিন্তু এই ঘটনার পর পরই মার্কিন ও রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং দুটো দেশের সেনাপ্রধান হট-লাইনে কথা বলেছেন। ভবিষ্যতে যাতে এধরনের ঘটনা আর না ঘটে সেবিষয়ে উভয়পক্ষ থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করার কথা বলা হয়েছে,” বলেন ইফতেখার আহমেদ।

এই প্রথম নয় যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে এরকম সরাসরি সংঘাতের ঘটনা যে এই প্রথম ঘটলো তা নয়। ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুর দিকে রুশ বিমান বাহিনী ইউক্রেনে নেটো জোটের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আক্রমণ চালিয়ে বেশ কিছু সৈন্যকে হত্যা করেছে।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে, ১৩ই মার্চ রাশিয়ার বিমান বাহিনী ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় ইয়াভরিভ শহরে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতিরক্ষা জোট নেটোর একটি সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওপর এই হামলা পরিচালনা করে।

বিমান থেকে এই ঘাঁটির ওপর প্রায় ৩০টি মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়েছিল যাতে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের পাশাপাশি নেটোর যেসব সৈন্য ইউক্রেনীয়দের প্রশিক্ষণ দিচ্ছিল তাদের কয়েকজন হতাহত হয়।

সরকারি হিসেবে এই হামলায় ৩৫ জন নিহত এবং আরো প্রায় ১২৫ জন আহত হয়।

সৈয়দ মাহমুদ আলী বলছেন, “মনে রাখতে হবে যে গত এক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং নেটো জোটের গোয়েন্দা দপ্তরগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করে চলেছে। কাজেই এসব দেশের সৈন্যরা সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত না হলেও তাদের অবসরপ্রাপ্ত কিছু সৈন্য ভাড়াটে সৈন্য বা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হয়ে রুশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে।”

সংঘাতের পরিণতি বিশেষজ্ঞরা বলছেন এবিষয়ে সতর্ক না হলে দুটো পক্ষের মধ্যে সামরিক এই উত্তেজনা আরো বৃদ্ধি পেতে পারে। সাঈদ ইফতেখার আহমেদও মনে করেন রুশ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে মার্কিন ড্রোনের সরাসরি সংঘর্ষের ঘটনা এই দুটো দেশের সম্পর্ককে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

“রাশিয়া আসলে ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে দিতে চাইছে যে যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার সীমানা ঘেঁষে কোনো ধরনের সামরিক তৎপরতা চালায় মস্কো সেটা সহ্য করবে না। এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রকে দেওয়া রাশিয়ার একটি সতর্ক বার্তা।”

ইফতেখার আহমেদ বলেন, “এধরনের সংঘর্ষের ঘটনা রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শীতল যুদ্ধোত্তর সম্পর্কের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। সামনের দিনে এটি আরো খারাপের দিকে যাওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। এর ফলে এই দুটো রাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”

প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাবেক এক মুখপাত্র সের্গেই মারকভ, যিনি এখন মস্কোর ইন্সটিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজের একজন পরিচালক, সম্প্রতি বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি বলছেন ইউক্রেনে এখন যে যুদ্ধ চলছে, সেটি আসলে তার ভাষায়, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেটোর যুদ্ধ।

তার মতে, ইউক্রেনের এই হাইব্রিড যুদ্ধ কার্যত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। কিন্তু আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ মনে করেন, এরকম এক পরিণতির আশঙ্কা থেকেই পরমাণু শক্তিধর এই দুটো দেশ সরাসরি যুদ্ধ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবে।

“স্নায়ু-যুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন তৃতীয় একটি রাষ্ট্রকে ব্যবহার করেছে বা আঘাত করেছে। তারা কিন্তু কখনোই মুখোমুখি দাঁড়ায়নি।”

তিনি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দেখা যায় তারা কখনো সামরিকভাবে শক্তিধর কোনো রাষ্ট্রের সাথে যুদ্ধ করেনি। রাশিয়াও সেটা করেনি।

“পারমাণবিক শক্তি যাদের রয়েছে তাদের সংগে সংঘাতের বিষয়টি সবসময় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা হয়। রাশিয়ার ওপর আঘাত করার অর্থ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিজের জন্যেও ভয়াবহ এক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা। একারণে দুটো দেশ সবসময় চেষ্টা করে তারা যেন একে অপরকে আঘাত না করে,” বলেন মিইফতেখার আহমেদ।

“যুদ্ধের পায়তারা” কিন্তু মালয়েশিয়ার মালয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং সমর বিশেষজ্ঞ ড. সৈয়দ মাহমুদ আলী এধরনের সরাসরি সংঘর্ষের আশঙ্কাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

তিনি বলেন কোনো একটি সংঘাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষই চক্রবৃদ্ধি হারে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে। তারও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে অন্যপক্ষ। এভাবে এটি আরো বেশি ছড়িয়ে পড়তে পারে।

“ওই ঘটনাকে নিয়ন্ত্রণ করে শান্তি পুন-প্রতিষ্ঠা করা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ সব পক্ষের সৈন্যরাই এখন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। তারা মানসিকভাবে এবং সামরিক প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যুদ্ধের জন্য পায়তারা কষছে,” বলেন মাহমুদ আলী।

ইউক্রেন যুদ্ধ কবে শেষ হবে তার কোনো ইঙ্গিত কোথাও নেই। কতদিন চলবে, কোন দিকে যেতে পারে এই যুদ্ধ- এবিষয়েও কারো কোনো ধারণা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেমের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ইফতেখার আহমেদ মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র যে খুব শীঘ্রই এই যুদ্ধ থেকে সরে আসবে তার কোনো সম্ভাবনাও তিনি দেখতে পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেওয়া অব্যাহত রাখবে। তবে সেই সাহায্য একটা মাত্রার বাইরে যাবে বলে মনে হয় না। ইউক্রেনকে তারা এমন অস্ত্র দেবে না যা রাশিয়ার ভেতরে আঘাত করতে সক্ষম।

“আফগান যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমরা সোভিয়েত ইউনিয়নকে দেখেছি। এসব যুদ্ধ কিন্তু এই দুটো দেশকে কখনো মুখোমুখি সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যায়নি। এখনও সেরকম হবে না,” বলেন মি. আহমেদ।

একারণে ইউক্রেনে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের এই ছায়া-যুদ্ধ কখনো সম্মুখসমরে রূপ নেবে না বলেই তিনি মনে করেন।

“এধরনের কোনোই সম্ভাবনা নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমরা বিভিন্ন ছায়া-যুদ্ধ দেখেছি। ইউক্রেন যুদ্ধ তারই একটি ধারাবাহিকতা। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ এরকম পরোক্ষ যুদ্ধে লিপ্ত হবে ঠিকই, কিন্তু সেটি কখনও সম্মুখযুদ্ধে পরিণত হবে না। কারণ এধরনের যুদ্ধে যাওয়া আত্মহত্যার সামিল।”

তিনি বলেন, “যাদের পরমাণু অস্ত্র আছে তারা এবিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। ফলে তারা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে চলে।”

পরমাণু অস্ত্র কি যুদ্ধ ঠেকাতে পারবে? রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্প্রতি প্রতিবেশী বেলারুশে কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের কথা ঘোষণা করেছেন। অন্যদিকে ইউক্রেনকে ইউরেনিয়াম-সমৃদ্ধ অস্ত্র দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাজ্য। এবিষয়ে রাশিয়া কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।

রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র – এই দুটো দেশ পরমাণু শক্তিধর হওয়ায় তাদের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধের আশঙ্কা নেই – এই ধারণার সঙ্গে একমত নন সৈয়দ মাহমুদ আলী। তিনি মনে করেন দুটো দেশের মধ্যে উত্তেজনা এতো চরমে গিয়ে পৌঁছেছে যে, যেকোনো সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

“এটা হলো আনুষ্ঠানিক কথা। আমরা জানি এদের কাছে হাজার হাজার পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। এবং যুদ্ধে ব্যবহারের জন্যই তারা এগুলো তৈরি করে মজুদ করে রেখেছে।”

তিনি বলেন, “রুশ প্রেসিডেন্ট বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন যে রাশিয়ার মূল স্বার্থে যদি কেউ আঘাত করে, রাশিয়া সর্বাত্মকভাবে তার প্রতিকার করবে। এটাকে কূটনৈতিক ভাষায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি বলে ধরে নেওয়া হয়। এবং সেকারণেই প্রেসিডেন্ট বাইডেনও যুদ্ধ শুরুর আগে থেকে বলে চলেছেন যে মার্কিন সৈন্যরা রাশিয়ার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে নামবে না।”

মাহমুদ আলী বলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এই বক্তব্যের অর্থ এই নয় যে তারা সংঘাতে জড়ায়নি।

“সিরিয়ার যুদ্ধে রুশ বাহিনী প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীকে মদত যুগিয়েছে। আর আমেরিকানরা বাশার আল-আসাদের বিরুদ্ধে যারা বিদ্রোহ করেছে তাদেরকে সাহায্য যুগিয়েছে। সেখানে রুশ বাহিনীর সঙ্গে মার্কিন বাহিনীর কয়েকবার ব্যাপক সংঘাত হয়েছে।”

তিনি বলেন, “এসব ঘটনা থেকে আমরা বুঝতে পারি উত্তেজনা এতো উচ্চমাত্রায় রয়েছে যে কোনো একটি দুর্ঘটনা বা ছোট ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরাসরি যুদ্ধ শুরু হওয়ার একটা আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।”

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন- আমেরিকা ও রাশিয়ার সৈন্যরা যখনই একে অপরের দিকে গুলি ছুঁড়ে মারবে তখনই বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে। বিশ্লেষকরা বলছেন এরকম সংঘাতের সম্ভাবনা নির্ভর করছে নেটোর কোনো সদস্য দেশের এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ওপর।

আর এরকম কিছু ঘটলে ইউক্রেন যুদ্ধ যে বিপদজনক দিকে মোড় নেবে না সেই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App