×

আন্তর্জাতিক

মোদীর ভারতে সংবাদমাধ্যম কি স্বাধীনতা হারাচ্ছে?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মার্চ ২০২৩, ০৪:২৮ পিএম

মোদীর ভারতে সংবাদমাধ্যম কি স্বাধীনতা হারাচ্ছে?

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে বিবিসি একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে। এর ফলে সৃষ্টি হয় নানা বিতর্ক। এমনকি ভারতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির দুইটি কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করে আয়কর কর্মকর্তারা। এর পরেই দেশটিতে সংবাদমাধ্যম এবং সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় সকাল ১১টার দিকে ভারতের আয়কর বিভাগের প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা ও পুলিশ রাজধানী দিল্লিতে বিবিসির কার্যালয়ে উপস্থিত হন এবং কর্মীদের তাদের কম্পিউটারের কাছ থেকে সরে যেতে এবং মোবাইল ফোন তাদের হাতে তুলে দিতে নির্দেশ দেন।

কাছাকাছি সময়ে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ে বিবিসির অন্য একটি কার্যালয়েও হাজির হন আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা।

আয়কর বিভাগ থেকে অবশ্য একে অভিযান নয় বরং ‘জরিপ’ নাম দেওয়া হয়। তাদের ব্যাখ্যা ছিল, বারবার অনুরোধ করার পরও বিবিসি কর্তৃপক্ষ ভারতে তাদের আয়-ব্যয় এবং কর সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে তাদের কাছে উপস্থাপন করছিল না।

আর বিবিসি কর্তৃপক্ষ বলেছিল, তারা কর কর্মকর্তাদের পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। তাদের সংবাদকর্মীরা ‘নিরপেক্ষ থেকে ভয়ডরহীন ভাবে’ সংবাদ উপস্থাপন অব্যাহত রাখবে।

বিবিসির কার্যালয়ে অভিযানের তিন সপ্তাহ আগে ২০০২ সালে ভারতের গুজরাটে হিন্দ-মুসলিম দাঙ্গা নিয়ে একটি তথ্যচিত্র যুক্তরাজ্যে প্রদর্শন করা হয়। বিবিসির তৈরি ওই তথ্যচিত্রে গুজরাট দাঙ্গায় মোদীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। ওই সময় গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মোদী।

‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোশ্চেন’ নামের তথ্যচিত্রটিকে বিতর্কিত কাহিনী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বানানো ‘অপপ্রচার’ বলে অ্যাখ্যা দিয়ে ভারতে সেটির প্রদর্শন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেটি দেখানো ও শেয়ার করায় উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত সরকার।

তথ্যচিত্রটি এখন পর্যন্ত শুধু যুক্তরাজ্যে প্রদর্শন করা হয়েছে। ওই তথ্যচিত্রের প্রদর্শন নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গনও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল।

তারপরই বিবিসির কার্যালয়ে কর কর্মকর্তাদের হানা দেওয়ার ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই মোদী সরকারের অধিনে ভারতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ বিষয়ে ভারতের আটজন সাংবাদিক, শিল্প নির্বাহী এবং গণমাধ্যম বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে।

তারা বলেন, সম্প্রতি কিছু সংবাদমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করে সংবাদ প্রকাশ করার কারণে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা অভিযানের নামে হেনেস্তার শিকার হয়েছে। তাদের সরকারি বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে না এবং কয়েকজন সাংবাদিক গ্রেপ্তারও হয়েছেন।

স্বাধীন অনলাইন মিডিয়া গ্রুপ ‘নিউজলন্ড্রি’র প্রধাননির্বাহী অভিনন্দন সেখরি বলেন, ‘‘ভারতে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার স্বর্ণযুগ কখনই ছিল না। কিন্তু বর্তমানে যে অবস্থায়, সেটাও কখনো ছিল না।”

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App