×

আন্তর্জাতিক

পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনে জয়ী বাবুল সুপ্রিয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২২, ০২:৪৪ পিএম

পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনে জয়ী বাবুল সুপ্রিয়

তৃণমূল নেতা বাবুল সুপ্রিয়

পশ্চিমবঙ্গের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বাবুল সুপ্রিয়। সঙ্গীতশিল্পী-অভিনেতা এবং লোকসভার সাবেক এ সাংসদের জয়ের ব্যবধান ২০ হাজার ৩৮ ভোট। তবে বালিগঞ্জ উপনির্বাচনে জিতলেও প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ধারেকাছেও না থাকায় পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে আলোচিত হয়েছেন তিনি।

মন্ত্রী সুব্রতের প্রয়াণের কারণে বালিগঞ্জ বিধানসভায় উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২১ সালের নির্বাচনে নীলবাড়ির লড়াইয়ে বালিগঞ্জে ৭৫ হাজার ৩৩৯ ভোটে বিজেপিকে হারিয়েছিলেন তিনি। তৃণমূলের হয়ে তিনি পেয়েছিলেন ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট। সেইবার বিজেপি ২০ দশমিক ৬৮ শতাংশ ও বাম সংযুক্ত মোর্চার সিপিএম প্রার্থী ৫ দশমিক ৬১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

বছর ঘুরতেই দক্ষিণ কলকাতার এই মিশ্র এলাকায় বামেদের চমকপ্রদ উত্থান ঘটেছে। উপনির্বাচনে সিপিএমের প্রার্থী সায়রা হালিম পেয়েছেন প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে বাবুলের ঝুলিতে গিয়েছে প্রায় ৪৮ শতাংশ।

গত বছরের নভেম্বরে নদিয়ার শান্তিপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনার খড়দহ বিধানসভা উপনির্বাচনে ভোট অনেকটা বাড়ালেও শেষ পর্যন্ত তৃতীয় স্থান নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বামেদের। এরপর কলকাতাসহ বিভিন্ন পুরসভার নির্বাচনে শতাংশের হিসাবে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে বামেরা। এবার বিধানসভা ভোটেও সেই ধারাই ধরে রাখলেন তারা।

ব্যবধান কমার যুক্তি হিসেবে ‘কম ভোটদানের কথা’ উঠে আসছে তৃণমূল থেকে। বালিগঞ্জের ফল সম্পর্কে দক্ষিণ কলকাতা জেলা তৃণমূল সভাপতি ও রাসবিহারীর বিধায়ক দেবাশিস কুমার বলেন, এবারের উপনির্বাচনে ভোট খুব কম পড়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে বালিগঞ্জ কেন্দ্রে ৬৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল। সেখানে এবার পড়েছে মাত্র ৪১ শতাংশ। উপনির্বাচন নিয়ে মানুষের উৎসাহ কম থাকে। তাছাড়া গরমের কারণে মানুষ ভোট দিতে আসেননি। বালিগঞ্জের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। তাই হয়তো আমাদের প্রার্থীর ব্যবধান কমেছে। তবে বালিগঞ্জের ফল খতিয়ে দেখা হবে।

যদিও শতাংশের হিসেবও স্বস্তি দিচ্ছে না বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেয়া সাবেক এ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে। কারণ, জোড়াফুলের ভোট প্রায় ২২ শতাংশ এবার কমেছে। ফল প্রকাশের পর বাবুল বলেন, এ জয় মা-মাটি-মানুষের পক্ষ থেকে তৃণমূলকে নববর্ষের উপহার।

অন্যদিকে বাবুলের কম ব্যবধানের কারণ হিসেবে বামেদের এ পুনরুত্থানকে চিহ্নিত করছেন অনেকেই। বস্তুত, সায়রা যে এত ভোট পেতে পারেন, তৃণমূলও তা ভাবতে পারেনি। ভোটের ফলে স্পষ্ট, বালিগঞ্জ বিধানসভার অন্তর্গত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত চারটি ওয়ার্ডে তৃণমূলের ভোটব্যাংকে বড় ভাঙন ধরিয়েছেন বাম প্রার্থী। এমনকি, ওই ওয়ার্ডগুলোর সংখ্যালঘু ভোটারদের এবার কংগ্রেসকে সমর্থন করতে দেখা গেছে।

বাবুলের ‘আশাভঙ্গের’ আরও কয়েকটি ‘কারণ’ উঠে আসছে বিশ্লেষকদের আলোচনায়। বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট না দেয়ার জন্য আগেই ‘নো ভোট টু বাবুল’ শ্লোগান উঠেছিল। সেই শ্লোগান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের পাশাপাশি কলকাতায় জমায়েতও হয়। ‘সিটিজেন অ্যাগেইনেস্ট পলিটিক্যাল ভায়োলেন্স’ নামে মঞ্চের পক্ষ থেকে বাবুলকে সরাসরি আক্রমণ করেন সমাজকর্মী রত্নাবলী রায়। উপনির্বাচনের ফলাফলে তার প্রভাব পড়েছে বলে অনেকেরই ধারণা। তাছাড়া তৃণমূলের ভেতরেও বাবুলের প্রার্থিতা নিয়ে ক্ষোভ ছিল। ভোটের ফলে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বালিগঞ্জ উপনির্বাচনের ফলের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, আমি দক্ষিণ কলকাতায় বহু বছর ধরে রাজনীতি করছি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছি রাজনীতিক হিসেবে সুব্রত খুব জনপ্রিয় ছিলেন। মানুষ হিসেবেও ছিলেন। তাই তার ব্যবধান এত বেশি ছিল। তবে বালিগঞ্জে আমাদের ব্যবধান কমার কারণ হিসেবে আমার মনে হয় সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা দায়ী। তবে সেই সব ঘটনা পরিকল্পিত হতে পারে। কিন্তু সেই সব ঘটনার প্রভাব হয়তো এবারের নির্বাচনে পড়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App