×

আন্তর্জাতিক

দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০:২১ এএম

দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়

‘দুবাই এক্সপো ২০২০’ উপলক্ষে শ্রমিকরা কাজ করছেন। ছবি: সংগৃহীত

দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়
দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়
দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়
দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়
দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়
দুবাই এক্সপো ২০২০: শোষণের কালো অধ্যায়

যাদের শ্রম ও ঘামের বিনিময়ে আয়োজিত হচ্ছে দুবাই এক্সপো ২০২০, তারাই শিকার হয়েছেন অপরিসীম বৈষম্যের। শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাইয়ের এ আয়োজন ঘিরে।

ইউএইতে বর্তমানে চলছে আন্তর্জাতিক মেলা ‘দুবাই এক্সপো ২০২০’। বিশ্বের ১৯২টি দেশ থেকে আড়াই কোটি দর্শনার্থী এ মেলা পরিদর্শন করবেন বলে দেশটির ধারণা। এই আয়োজনে ইউএইর ব্যয় হয়েছে কয়েক শ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু এই বিশাল আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন ঠেকাতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে আরব আমিরাত।

করোনার কারণে পিছিয়ে যাওয়া এই মেলার উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ১ অক্টোবর। এই মেলা ১৮২ দিন চলবে বলে আয়োজক দেশটি জানিয়েছে।

আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। খবর আল-জাজিরার।

দুবাই এক্সপো নিয়ে ২ ফেব্রুয়ারি ৩৭ পৃষ্ঠার গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক শ্রমিকদের অধিকারবিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইকুইডেম। এতে এই মেলা আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির শ্রমিকদের বেতনবৈষম্য ও অতিরিক্ত খাটানোর বিষয়টি উঠে আসে।

ইকুইডেমের গবেষকরা গত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত তিন মাস দুবাই এক্সপো নিয়ে মাঠপর্যায়ে গবেষণা করেন। এ সময় তারা অভিবাসী শ্রমিকদের ৭০টি সাক্ষাৎকার নেন।

গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা যায়, শ্রমিকদের কেউ কেউ আংশিক বেতন পেয়েছেন বা প্রতি মাসে তাদের মজুরি পাওয়ার জন্য এক সপ্তাহের বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। এর মধ্যে তাদের খাবারের অর্থও আটকে ছিল। শ্রমিকদের প্রায়ই ওভারটাইম ভাতা, কাজ থেকে অব্যাহতিকালীন সুবিধা ও প্রাপ্য বোনাস থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। করোনা মহামারির দোহাই দিয়ে কর্তৃপক্ষ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ বেতন কমিয়েছেন বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।

একজন শ্রমিক ইকুইডেম গবেষকদের বলেছেন, নিয়োগকর্তারা কর্মীদের সঙ্গে দাসের মতো আচরণ করেন। এটা খুব ক্লান্তিকর। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করি। আমি কখনোই অতিরিক্ত কাজের জন্য পারিশ্রমিক পাইনি।

 

ইকুইডেমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ কর্মীকে কাজ পেতে প্রাপ্য মাসিক বেতনেরও বেশি অবৈধ নিয়োগ ফি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। ইকুইডেম গবেষকেরা যেসব শ্রমিকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগকে তাদের পাসপোর্টগুলো নিয়োগকর্তাদের কাছে জমা রাখতে হয়েছে। তাদের কেউই প্রয়োজনের সময় এসব পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিতে পারেননি। অথচ আরব আমিরাতের আইন অনুযায়ী কোম্পানিগুলো শ্রমিকদের এমন নথি জমা রাখতে পারে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্সপো কর্মীরা গবেষকদের জানিয়েছেন, তারা কর্মপরিবেশ ও হয়রানির বিষয়ে কথা বললে নিয়োগকর্তা ও পুলিশের রোষানলে পড়তে হয়। এ জন্য তারা কাজ থেকে বরখাস্ত হওয়ার ভয়ে থাকেন। শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন ও বিভিন্ন দাবি আদায়ে লোকজনকে একত্র করাকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।

অথচ এ আন্তর্জাতিক মেলা উপলক্ষে আমিরাত কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক শ্রম আদায়ের বিরুদ্ধে জোরদার ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তারা এক্সপো কর্মীদের অধিকার রক্ষায় নির্দেশিকা প্রণয়ন করে। শ্রমিকরা যাতে শোষিত না হন, তা নিশ্চিত করতে সংযুক্ত আরব আমিরাত কোম্পানি পরিদর্শক পর্যন্ত মোতায়েন করে। তবে প্রতিবেদনে নিয়োগকর্তাদের কারও মান মেলার অনুষ্ঠানের মানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বলে মনে হয়নি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App