স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নবনিযুক্ত মহাপরিচালক এবং আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপিপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের নেতাকর্মী ও অধিদপ্তরের কর্মচারীরা। গতকাল সোমবার মহাখালীতে কোভিড ডেডিকেটেড ডিএনসিসি হাসপাতালে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূর জাহান বেগমের সামনেই এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে বৈঠক করছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।

উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদ্যসাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতা ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন ও ডিএনসিসি হাসপাতালের পরিচালক কর্নেল জহিরুল ইসলাম। উদ্ভূত পরিস্থিতির একপর্যায়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে ক্ষুব্ধ হতেও দেখা যায়।

প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন দায়িত্বে থাকা আওয়ামীপন্থি চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকালে অধিদপ্তরের মূল ফটকের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন ড্যাবসমর্থিত চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। তারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালকসহ আওয়ামীপন্থি চিকিৎসক, কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল করছিলেন। তাদের বাধার কারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অফিসে ঢুকতে পারেননি।

বেলা ১১টার দিকে মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে মিছিল শুরু করেন বিক্ষোভকারীদের একাংশ। মিছিল নিয়ে তারা ডিএনসিসি হাসপাতালে গিয়ে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে তারা হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকে ঢোকার চেষ্টা করলে হাসপাতালের একজন নারী চিকিৎসক তাদের বাধা দেন। তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে বিক্ষোকারীরা ভেতরে ঢুকে পড়েন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সামনেই কিছুক্ষণ হট্টগোল করেন। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীদের একজনকে টেবিলের উপর উঠে পড়তে দেখা যায়। এ সময় কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেতা আখতার হোসেন সবাইকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীদের ৫ জন প্রতিনিধিকে রেখে বাকিদের বের করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা উপদেষ্টার কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, তারা উপদেষ্টাকে সম্মান করেন, কিন্তু পরিস্থিতি তাদের ‘বাধ্য করেছে’ বিক্ষোভ করতে। উপদেষ্টা এ সময় বলেন, আমাকে সম্মান করলে আমার সামনে এ ধরনের কাজ করতেন না।

আরো পড়ুন: মেয়র-চেয়ারম্যানরা অপসারিত

দুপুর সাড়ে ১২টায় বৈঠকে বসা ৫ জন বিক্ষোভকারী অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে না চাইলে তাদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করতে বেরিয়ে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।