×

স্বাস্থ্য

‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল আন্তর্জাতিক মানের স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা দেবে’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২৩, ০৯:৫৬ পিএম

‘সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল আন্তর্জাতিক মানের স্মার্ট স্বাস্থ্যসেবা দেবে’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল ইতিমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছে। একনেক ২০১৬ সালের ২রা ফেব্রুয়ারিতে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ২০১৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এবং ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর শুভ উদ্বোধন করেন। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর নজরদারি ছিল এবং বৈশ্বিক সকল অসঙ্গতি যেমন অর্থনৈতিক মন্দা ও যুদ্ধের প্রভাবে নির্মাণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ। পেশাগত জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদের কেটেছে তার বিএসএমএমইউ চত্বরে। প্রতিষ্ঠানটির চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগ ও কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এমনকি অফথালমোলজিতে ডিপ্লোমা এবং এমএস ডিগ্রিও তিনি করেছেন এই একই প্রতিষ্ঠান থেকে, যা উপচার্য হিসেবে তাঁর কার্যক্রমকে কিছুটা সহজ করেছে বলে কথা শুরু করেন আহমেদ। তিনি বলেন, '১৯৯৮ সাল থেকে ২০২৩ বেশ দীর্ঘ একটা পথ পরিক্রমা বলা যায়। বিএসএমএমইউর সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা দুটোই খুব কাছ থেকে দেখেছি, উপাচার্য হিসেবে প্রথমদিন থেকে সেই সব চেনা সীমাবন্ধতাকে কাটিয়ে সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছি। বাংলাদেশের প্রক্ষাপটে চিকিৎসা গবেষণায় উন্নাসিকতা দেখা যায় এর কারণ কি বলে, আপনি মনে করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখেন চিকিৎসা গবেষণায় উৎসাহী না করেই উন্নাসিক বলাটা যৌক্তিক হবে না। গবেষণায় আমি নিজেও আগ্রহী, এর মধ্যে ৭৮জন শিক্ষক ও চিকিৎসকদের গবেষণা অনুদান দিয়েছি। এছাড়া ২০২২ থেকে ২০২৩ অর্থ বছরে গবেষণা খাতে বরাদ্দ ৪ কোটি টাকা থেকে ২২ কোটি ৪০ লাখ টাকা করেছি। এ বাজেট বিএসএমএমইউর কন্ট্রিবিউশন আগামীর জাতি গঠনে। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর গড়ে প্রতিদিন দুই হাজার রোগী দেখার চাপ বেড়েছে তবে সন্তুষ্টির কথা হচ্ছে ৮ হাজার ৫০০ জন মানুষকে সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে না আমাদের। কর্মীদের কর্ম পরিবেশ ফিরিয়ে দিয়েছি, তাঁদের চাকরির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করেছি, এখন কর্মস্পৃহা বেড়েছে কয়েক গুণ। সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালকে ফুল সার্ভিসে নিয়ে যেতে অভ্যান্তরীণ বিষয়গুলোও ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে পরিণত করার উদ্যোগের অংশ হচ্ছে এই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল। তিনি আরও বলেন, দেশে আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণ, চিকিৎসকদের জন্য অত্যাধুনিক পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ, জিন থেরাপি, রোবটিক সার্জারি থেকে শুরু করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে হৃদরোগ, কিডনি রোগ, লিভার, গল ব্লাডার ও প্যানক্রিয়েটিক, অরগান ট্রান্সপ্লান্ট, ক্যান্সার, কিডনি রোগ, নিউরোসার্জারি সহ বিভিন্ন জটিল রোগের বিশেষায়িত চিকিৎসার ব্যবস্থা বাংলাদেশে চিকিৎসা ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইলফলক হয়ে। হাসপাতালটি একটি সেন্টার বেইজড হাসপাতাল অর্থাৎ এক ছাতার তলায় সব ধরণের সেবা মিলবে। কম্বাইন্ড এ্যপ্রোচ বলা যায়। এবং প্রযুক্তিগত দিক বিবেচনায় এটি দেশের প্রথম একমাত্র পেপারলেস হাসপাতাল। এত অত্যাধুনিক হাসপাতাল পরিচালনায় দক্ষ কর্মী পাওয়া একটা অন্তরায় হয়ে উঠবে কি না এমন প্রশ্নে আহমেদ বলেন, চিকিৎসক, নার্স ও কর্মকর্তাদের জন্য রাখা হচ্ছে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ও মৌলিক গবেষণার জন্য আলাদা সেন্টার। এসব সেন্টারে দুই বছরের জন্য নিয়োজিত থাকবেন ৬ জন কোরিয়ান ইঞ্জিনিয়ার ও ৫০ জন কোরিয়ান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ইতোমধ্যে তিন দফায় এদেশীয় ১৭৪ জন চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, টেকনোলজিস্টকে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এদেশীয় জনবলকে প্রশিক্ষিত করতে ৬ জন কোরিয়ান ইঞ্জিনিয়ার ও ৫০ জন কোরিয়ান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ভূমিকা রাখবেন। এছাড়া সেবাখাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা আমাদের দেশীয় জনশক্তিকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে এনে এই হাসপাতালে নিয়োগ করা যায় কিনা সে। বিষয়েও পরিকল্পনা চলছে। তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী একটি মহল সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার লক্ষ্যে আমাকে ও বিএসএমএমইউকে বিপদে ফেলতে প্রপাগাণ্ডায় ব্যস্ত। তবে সব বিপত্তি কাটিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি দুর্বারভাবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সরকার ও কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে এই অত্যাধুনিক বিশেষায়িত হাসপাতাল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App