গুম নিয়ে আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতায় থাকবে নির্দেশনা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১০:০০ পিএম
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
গুম নিয়ে কমিশন গঠন এবং আইনি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকবে। এছাড়া যেকোনো বিষয়ে প্রতিবাদের জন্য সুনির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ ও সমাধানসহ নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা একটা কমিশন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কমিশন অন এনফোর্স ডিজায়াপারেন্ট। অর্থাৎ বিভিন্ন সময়ে যে গুম হয়েছে, গুমের কারণ কী, কারা দায়ী, এগুলো খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিশন করবো।
তিনি বলেন, আরেকটি সিদ্ধান্ত হলো, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টারা দেশের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসবেন। যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, বিভিন্ন অপরাধে যারা অভিযুক্ত হচ্ছে, সেই আইনি প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে কথা বলবেন। আমরা যেন মানবাধিকারের সবকয়টি বিষয় সমুন্নত রেখে, সম্মান রেখে আইনি প্রক্রিয়ায় এগোতে পারি। সেজন্য একটি নির্দেশনা যেন দিতে পারি প্রশাসনকে। কারণ, একই প্রশাসনের অধীনেই তো আমরা আছি।’
আরো পড়ুন : উপদেষ্টাদের বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ ড. ইউনূসের
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিবাদ করছে। সেটা তারা করতেই পারেন। এটা তাদের অধিকার। তবে ওই প্রতিবাদের কারণে যেন জনজীবনে বাড়তি অসুবিধার সৃষ্টি না করে। সেটা নিশ্চিত করার জন্য যেন সরকারের সঙ্গে প্রতিবাদকারীদের সম্পর্ক স্থাপন করা যায়। প্রতিবাদটা কোথায় করলে ভালো হয়, অনির্দিষ্টকালের জন্য যেন না করে, প্রতিবাদকারীদের মুখপাত্র ও সরকারের মুখপাত্র যেন বসে সমাধানে যেতে পারেন, সেটার উপায় বের করা হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, অন্য উপদেষ্টারা এবং বিশিষ্টজনদের সেই বৈঠকে সেটা নির্ধারণ করা হবে।
তিনি জানান, উপদেষ্টা পরিষদের আজকের সভায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহত ব্যক্তিদের বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি ফাউন্ডেশন গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আপাতত এই ফাউন্ডেশনের প্রধান হিসেবে থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন আহত-নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও গণ-অভ্যুত্থানের স্মৃতি ধরে রাখার কাজ করবে এই ফাউন্ডেশন।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নামকরণের বিষয়ে একটি নীতিমালা করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যখন জনগণের টাকা ব্যয় করে কোনো প্রকল্প হয় বা স্থাপনা হয় সেটির নাম কি নীতি অনুসরণ করে হবে, সে বিষয়ে বলা থাকবে এই নীতিমালায়। যাতে এমন নাম হয়, যেটি কোনোভাবেই ‘ফ্যাসিবাদ’কে উসকে দেবে না এবং তাতে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে। একপর্যায়ে এটিকে আইনি কাঠামোয় আনতে হবে বলেও উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নাম নিয়ে একটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে যায়, এটি যাতে না হয়, সে জন্য এই নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।