×

ফিচার

জাতীয় পিঠা উৎসবে বাহারি পিঠার সমারোহ

Icon

রোমাঞ্চ তালুকদার

প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৪:২৭ পিএম

জাতীয় পিঠা উৎসবে বাহারি পিঠার সমারোহ

ছবি: যুবরাজ ফয়সাল

ভোজন রসিক বাঙালির পিঠাপ্রেমী হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে। বাঙ্গালির খাদ্য তালিকায় রয়েছে নানারকম পিঠা। হরেকরকম পিঠার কোনটিতে আছে নকশা কাটা, কোনটি আবার তেলে ভাজা। শীতকালে এমন মুখরোচক পিঠা-পুলির আয়োজনের কোন তুলনাই হয়না। 

বাহারি নকশার ও বিচিত্র স্বাদের এসব পিঠা খেয়ে রসনা নিবারণ করেন ভোজন রসিক বাঙালিরা। তেলে ডুবিয়ে লাল-লাল করে ভাজা এসব পিঠা চিনি, গুড় বা খেজুর রসে ডুবানো। মিষ্টি ঘ্রাণে আর বাহারি পসরায় সেজে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে জাতীয় পিঠা উৎসব। 

বাঙালির খাদ্যপ্রেম, সংস্কৃতি আর গল্প-আড্ডার অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ এসব পিঠা-পুলি। শুধু খাদ্যমানের বিচারে নয়, পিঠার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে হাজার বছর ধরে চলে আসা আবহমান বাংলার সহস্রাধিক সুখ স্মৃতি। ঐতিহ্যবাহী এসব পিঠা-পুলি চিরায়ত বাংলার সেই আদি ও অকৃতিম রূপকেই যেন তুলে এনেছে নগরবাসীর সামনে। নাগরিক কোলাহল আর ব্যস্ততাকে ছুটি দিয়ে অনেকেই তাই ছুটে এসেছেন শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে। দলবেঁধে আসা ব্যস্ত নগরবাসী যেন এখানে খুঁজে পেয়েছেন চিরচেনা সেই স্বস্থি। অনেকেই ফিরে গেছেন পেছনে ফেলে আসা ছোটবেলায়, হয়েছেন নস্টালজিক।

ছবি: যুবরাজ ফয়সাল

স্মৃতির পাখায় ভর করে শৈশব হাতরে মেলায় আগত অনেকেই জানান দেন ব্যক্তিগত উচ্ছ্বাসের। এ যেন নাগরিক কোলাহল আর ব্যস্ত জীবনকে খানিকের জন্য ছুটি দেয়ার আনন্দ। 

কথা হয় মেলায় আসা রাফির সাথে। কেরানীগঞ্জ থেকে আসা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া রাফি ভোরের কাগজকে জানিয়েছেন নিজের উচ্ছ্বাসের কথা। আলাপচারিতায় জানান, ‘সময়ের সঙ্গে আমাদের জীবনযাত্রা বদলে গেছে। ব্যস্ততায় আর গ্রামেও যাওয়া হয় না। এবারের পিঠা উৎসবে এসে আমার খুবই ভালো লেগেছে।’

কথা হয় চট্টগ্রাম পিঠা হাউজের পিঠা শিল্পী বীণাপাণি পোদ্দারের সাথে। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কিছুটা ঠাট্টা করেই বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলের পিঠাকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে ধরার জন্যই পিঠা উৎসবে এসেছি। চট্টগ্রাম অঞ্চলের পিঠাকে সবার কাছে তুলে ধরতে আমার মেলায় হরেক রকম পিঠা নিয়ে এসেছি। আমাদের কাছে রাজদোল্লা, পানতোয়া,ক্ষীরসা পাত,ক্ষীর মালাই, জামাই ভোগসহ আরো অনেকরকম পিঠা পাওয়া যাবে।’ 

মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থী লুনা জাফর বলেন, ‘উৎসব-পার্বণে পিঠা একটি অনিবার্য উপাদান হিসেবে আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে আছে। বিচিত্র সব হাতে তৈরি পিঠা গ্রাম বাংলায় সেই স্বাদ যেন ফিরিয়ে এনেছে। আমি এখানে এসে যেন ছোটবেলায় ফিরে গেছি।’

পিঠা শিল্পী মিতু আক্তার জানান, ‘পিঠা প্রেমী কিংবা দর্শনার্থীদের যে পরিমাণ সাড়া পাচ্ছি তাতে তারা সন্তুষ্ট। অনেকেই তাদের বাচ্চাদের নিয়ে মেলায় এসেছেন। নতুন প্রজন্মের বাচ্চারা মেলায় এসে আমাদের আবহমান বাংলার রকমারি পিঠার সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে।’

আয়োজরা জানান, জাতীয় পিঠা উৎসব মূল্যায়ন কমিটি এবারের আয়োজনে বিচার-বিশ্লেষণ, পিঠার গুণমান, ভিন্নতা ও স্বাদ যাচাই করে নম্বর ভিত্তিতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়কে পুরস্কৃত করবেন। এছাড়া অংশগ্রহণকারী সবাইকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে একটি সনদপত্রও প্রদান করা হবে। 

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় শিল্পকলা একাডেমিতে এই উৎসব চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App